যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন অভিযোগ ও সমালোচনায় জর্জরিত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক। দেশটির অর্থ ও নগরবিষয়ক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক দুর্নীতি, সম্পদের তথ্য গোপন ও অর্থ আত্মসাতের একের পর এক অভিযোগে ব্যাপক চাপের মুখে রয়েছেন।
টিউলিপের এ অবস্থার মধ্যেই নতুন করে আলোচনায় এসেছেন তার পারিবারিক বন্ধু, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলে শায়ান ফজলুর রহমান।
২০০৭ সালে ব্রিটিশ রাজার হাত ধরে প্রতিষ্ঠিত দাতব্য সংস্থা ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের উপদেষ্টা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান তিনি। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সালমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান করছে। এর মধ্যে গত আগস্টে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) সালমান, তার ছেলে শায়ান ও পুত্রবধূ শাজরেহ রহমানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে।
বাকিংহাম প্যালেসে এক নৈশভোজে শায়ানের প্রশংসা করে ব্রিটেনের রাজা চার্লস বলেছিলেন, “আমাদের সঙ্গে যারা কাজ করেন আমরা তাদের মতোই ভালো। তাই আমি আনন্দিত- বাংলাদেশে আমাদের নতুন প্রোগ্রামে শায়ান রহমান তত্ত্বাবধান এবং সমর্থন করবেন।”
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের ‘পারিবারিক বন্ধু’ শায়ান। তিনি বাংলাদেশের ‘ধনকুবের’ সালমান এফ রহমানের ছেলে। টিউলিপের খালা শেখ হাসিনা লন্ডনে গেলে শায়ানের ১৩ লাখ পাউন্ডের (প্রায় ২০ কোটি টাকা) বাড়িতে ‘বিনাভাড়ায়’ থাকতেন।
দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের উপদেষ্টা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান তিনি। এক সময় তিনি তাদের পারিবারিক নিয়ন্ত্রণে থাকা বেক্সিমকো গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরও ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের ওয়েবসাইটে তার সেই পরিচয়ই দেখানো হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট বলেছে, “আমরা শায়ানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে অবগত। আমরা বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখছি।”
শায়ানের এক মুখপাত্র বলেন, “যুক্তরাজ্যে শায়ানের জন্ম। এই সূত্রে তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী। তিনি কিংবা তার স্ত্রী কখনও কোনও অপরাধে অভিযুক্ত হননি। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে অন্য ৩০০ জনের সঙ্গে কেবল বাংলাদেশেই তাদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এটা পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ।”
ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টে শায়ান আড়াই লাখ পাউন্ড অনুদান দিয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। সম্প্রতি সানডে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অর্থ পাচার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সেই অনুদানের প্রসঙ্গ তোলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শায়ানের ‘দানশীলতা’ নিয়ে তিনি রসিকতাও করেন।
সূত্র: ডেইলি মেইল
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ