রমজানের অবকাশ ও ঈদুল ফিতরের ছুটির পর সুপ্রিম কোর্ট খোলার প্রথম দিনে সর্বোচ্চ আদালত আইনাঙ্গণে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করেছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।
রোববার (৩০ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষের সামনে পাশাপাশি অবস্থান করে তারা সমাবেশ করে। তবে এসময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্ট বার প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিলও করেছে।
সমাবেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সভাপতি আবদুল জব্বার ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল প্রমুখ ছিলেন।
অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনের নেতৃত্বে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা শান্তি সমাবেশ করে। এসময় সমিতির সম্পাদক আবদুন নূর দুলাল, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক, গিয়াস উদ্দিন আহম্মদ, আইনজীবী এ কে এম তৌহিদুর রহমান, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মো. মাহমুদুল করিম (রতন), আইনজীবী চৈতালী চক্রবর্তীসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী ছিলেন।
গত ১৫ ও ১৬ মর্চ হট্টগোল, হামলা, ভাংচুর, মামলা, সাংবাদিক পেটানো, প্রধান বিচারপতির কাছে নালিশ ও ধাক্কাধাক্কির মধ্যে অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৪ পদের সব কটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়েছেন। দু দিনব্যাপী নির্বাচনের শেষ দিন দিনগত রাতে এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
যদিও নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছিল বিএনপি সমর্থকরা। এরপর থেকে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আন্দোলন করে আসছে। এর মধ্যে ৩০ মার্চ একদল আইনজীবী তলবি সভা ডেকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন।
সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতির সদস্যদের ব্যানারে আয়োজিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম।
সভায় আইনজীবী মোহাম্মদ মহসিন রশিদকে আহ্বায়ক এবং আইনজীবী শাহ্ আহমেদ বাদলকে সদস্য সচিব করে সুপ্রিম কোর্ট বারে ১৪ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হয়।
এ কমিটির সদস্য সচিব এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, বার সমিতির সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৭ (৩) (এ) অনুযায়ী ব্যাপক উপস্থিতির মধ্য দিয়ে বার ভবনের এনেক্স হল রুম ১ ও ২ এ তলবী সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম। সভায় সাবেক সভাপতি, সম্পাদক ও সিনিয়র আইনজীবী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো হলো-
১. ১৫-১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।
২. মোহাম্মদ মহসিন রশিদকে আহ্বায়ক এবং শাহ্ আহমেদ বাদলকে সদস্য সচিব করে ১৪ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
৩. এ কমিটি সমিতির সংবিধান অনুযায়ী অপশনন ফরম বিতরণ করে ১৫ মের মধ্যে নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়ন করবে এবং ১৪ ও ১৫ জুন সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।
৪. প্রধান বিচারপতির সঙ্গে যোগাযোগ করে বারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ বারের রুটিন কার্যক্রম পরিচালনা করবে অন্তবর্তীকালীন কমিটি।
৫. ১ এপ্রিল থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বারের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী তথা বারের অফিস অন্তবর্তীকালীন কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ