বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: কাউকে ঠকানো এবং কারো সঙ্গে প্রতারণামূলক আচরণ করা কোনো সমাজেই গ্রহণযোগ্য নয়। ইসলাম এটাকে আরো কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। ইসলামের পরিভাষায় আল্লাহ ও তার রাসুলের নির্দেশ অনুযায়ী কাউকে ন্যায্য প্রাপ্য ও অধিকার থেকে বঞ্চিত করাই প্রতারণা। ব্যবসা-বাণিজ্য, লেনদেন ছাড়াও মানুষ বিভিন্ন আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ডে পারস্পরিক প্রতারণা ও প্রবঞ্চনা করে থাকে। ইসলাম সামাজিক জীবনের সর্বক্ষেত্রে সব বিষয়ে নানা ধরনের প্রতারণাকে বর্জনের জন্য জোরালো তাগিদ দিয়েছে।
ইসলাম সত্যের সঙ্গে মিথ্যার মিশ্রণকে কখনোই সমর্থন করে না। মিথ্যাকে সত্যের আবরণ পরিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টাই হচ্ছে প্রতারণা। মিথ্যা দিয়ে যেমন বাস্তব ও প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল বা গোপন করা হয়, প্রতারণার মাধ্যমেও অনুরূপভাবে প্রকৃত অবস্থাকে আড়াল করে সাধারণ মানুষকে ঠকানো হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে মানবজীবনে যা কিছু করণীয়, তার মধ্যে ফাঁকিবাজি ও প্রতারণার কোনো স্থান নেই। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে মিশ্রিত করবে না এবং তোমরা জেনেশুনে সত্য গোপন করবে না।’
মুসলমানদের পারস্পরিক লেনদেন, চালচলন, আচার-ব্যবহার, জীবনাচরণ প্রভৃতি সম্পর্কে ইসলামের সুস্পষ্ট নীতিমালা রয়েছে। কোনো ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রতারণার মাধ্যমে যে জীবিকা উপার্জন করা হয় তা সম্পূর্ণরূপে হারাম বা নিষিদ্ধ। এসব নীতিমালা লঙ্ঘন করে ইসলামে প্রতারণার আশ্রয় নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। যে ধরনের ক্রয়-বিক্রয় বা লেনদেনে অজ্ঞাত বা ধোঁকাবাজি হওয়ার বা এক পক্ষ কর্তৃক অন্য পক্ষকে ক্ষতিসাধনের সুযোগ থাকে, এমন প্রতারণামূলক ক্রয়-বিক্রয় করা ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘পণ্যের দোষত্রুটি না জানিয়ে বিক্রয় করা অবৈধ। দোষত্রুটি জানা থাকা সত্ত্বেও তা বলে না দেওয়া বা গোপন করা অবৈধ।’
প্রতারণা মুনাফিকের অন্যতম স্বভাব। যারা প্রতারণা করে, তারা প্রকৃত মুসলমান হতে পারে না। একসময় প্রতারকের মুখোশ খুলে যায়, তখন আর পালানোর পথ থাকে না। প্রতারকদের স্বরূপ উন্মোচন করে আল্লাহ বলেন, ‘মন্দ পরিণাম তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়! যারা লোকের কাছ থেকে মেপে নেয়ার সময় পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে এবং অন্যকে মেপে বা ওজন করে দেয়ার সময় কম দেয়।’হাদিসে রাসুল (সা.) স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতারণা করে সে আমার দলভুক্ত নয়।’সুতরাং রাসুলের (সা.) দলভুক্ত হতে চাইলে সব ধরনের প্রতারণা থেকে বেঁচে থাকতে হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এন