শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেটকারে বাসের ধাক্কা, নিহত ৫ নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা তদন্ত চলছে: ফায়ারের ডিজি উন্নয়নের লক্ষ্যে চীনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রাশিয়ার মিসাইলের আঘাতে ভূপাতিত হয় ওই বিমান শেষ দিনে ভিড় বেড়েছে, পছন্দের ফ্ল্যাট খুঁজছেন অনেকেই বিআরটিএ নির্ধারিত সিএনজি অটোরিকশার জমা ৯০০ টাকা কার্যকরের দাবি ৬ মাস ধরে নিখোঁজ বাংলাদেশিকে পাওয়া গেল থাই নারীর সঙ্গে হোটেলে ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর হওয়া উচিত : প্রধান উপদেষ্টা মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, ইউপি সদস্যসহ নিহত ২ জাহাজে ৭ খুন: বিচারের দাবিতে কর্মবিরতিতে নৌযান শ্রমিকরা পঞ্চগড়ে টানা চারদিন দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ইয়েমেনের বিমানবন্দরে হামলা, অল্পের জন্য বাঁচলেন ডব্লিউএইচও প্রধান গান পাউডার ব্যবহার হয়েছে কি না, খতিয়ে দেখতে ‘বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ’ পানির ট্যাংকে লুকিয়ে ছিলেন আ. লীগের ‘ভাইরাল নেত্রী’ কাবেরী পাবনায় দাঁড়িয়ে থাকা করিমনে ট্রাকের ধাক্কায় তিন শ্রমিক নিহত, আহত ৫ নববর্ষে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ ক্রীড়া পরিষদে অস্থায়ী অফিস ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মারা গেছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যেখানে চলবে ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচ মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সংস্কার ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয়: প্রধান উপদেষ্টা

অবহেলায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬
  • ১৬১ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বাংলাদেশে বিকল্প জ্বালানি ব্যবস্থা অপরিহার্য হয়ে দাঁড়ালেও এর ভিত এখনও মজবুত হয়নি। ফলে ২০২১ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার সরকারি মহাপরিকল্পনার অনেকটাই হোঁচট খাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, এ পর্যন্ত ৪৩০ মেগাওয়াট বিকল্প জ্বালানি যোগ হয়েছে। এর মধ্যে সোলার হোম সিস্টেম থেকে ১৭৫ মেগাওয়াট, সরকারি-বেসরকারি অফিসে সোলার সিস্টেম ৩ মেগাওয়াট, বাণিজ্যিক ভবন ও শপিং মলে সোলার সিস্টেম ১ মেগাওয়াট, নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে সোলার পিভি স্থাপন ১১ মেগাওয়াট, সোলার ইরিগেশন ২ মেগাওয়াট, ২ মেগাওয়াটের বায়ুশক্তিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, বায়োমাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ১ মেগাওয়াট, বায়োগ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ৫ মেগাওয়াট এবং হাইড্রো পাওয়ার হচ্ছে ২৩০ মেগাওয়াট।

সরকারের নবায়নযোগ্য জ্বালানি কার্যক্রম থেকে জানা যায়, এই খাত থেকে সরকার ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ৩১শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে, যার মধ্যে পাবলিক সেক্টর ১১শ’ মেগাওয়াট এবং বাকি অংশ বেসরকারি উদ্যোগে বাস্তবায়ন করা হবে। সরকারের এই পরিকল্পনার অংশ হিসাবে মার্চ ২০১৬ পর্যন্ত নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত থেকে মাত্র ৪৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এসেছে, যা প্রত্যাশার তুলনায় অনেকটাই কম।

সরকার দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা ২০০৮ প্রণয়ন করেছে। এই নীতিমালায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির মূল উৎস হিসাবে সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, বায়োমাস, হাইড্রো, বায়ো ফুয়েল, জিও থার্মাল, নদীর স্রোত, সমুদ্রের ঢেউ ইত্যাদিকে শনাক্ত করেছে। ঘোষিত এই নীতিমালা অনুযায়ী ২০২০ সাল এবং তার পরবর্তী বছরগুলোতে নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে ১০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সোলার নিয়ে দেশে বেসরকারি খাতে যেসব কোম্পানি কাজ করছে তার মধ্যে রয়েছেÑরহিমাফরোজের সোলার পিভি সিস্টেম, এলাইড সোলার এনার্জি লিমিটেড, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানী লিমিটেড (আইডিসিওএল), গ্রামীণ শক্তি, ব্র্যাক সোলার, ইলেক্ট্রোকম টেকনোলজিস লি., নেক্সট পাওয়ার লি., ইনজেন টেকনোলজি লিমিটেড, ফুজিতসু বাংলাদেশ লিমিটেড, ইনোভেটিভ টেকনোলজি, ইকো পাওয়ার কোম্পানী লিমিটেড (ইপিসিএল), আভা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, সোলার প্যাক, সোলার বাংলাদেশ, সনোস এনার্জি সেভিং টেকনোলজি, ঢাকা সার্ভিস কোম্পানী, ব্রাইট ইলেক্ট্রিক সেভার টেকনোলজি লি., গ্রীন এনার্জি সলিউশন লি., উত্তরণ টেকনোলজি, ডিজিটাল টেকনোলজি, আকাশ সোলার ইত্যাদি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আধুনিক বিশ্বের উন্নয়শীল দেশগুলোতে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সোলার শক্তি একটি বিশাল অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য নতুন যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিল্পখাতের উন্নয়ন ও প্রসার এবং নতুন টেকনোলজির এই বিকল্প শক্তির প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। বিশ্ববাজারে টিকে থাকার জন্য এদেশে সোলারের চাহিদা বাড়ছে। বিশেষ করে দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেয়া এবং ঘনঘন বিদ্যুতের লোডশেডিং থেকে শিল্পখাতকে রক্ষায় বিকল্প এই শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। একইভাবে সরকার আবাসিক গ্রাহকদের যদি এই সিস্টেমের আওতায় আনতে পারে, তাহলে বিদ্যুৎ বিলের জন্য যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় তা অনেকটাই কমে যাবে।

যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। তাদের মতে, সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের যাবতীয় যন্ত্রপাতি দেশে উৎপাদন করা গেলে দাম অনেকটা কমে আসত। কিন্তু এখন পর্যন্ত দেশে যে পরিমাণ সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে তার সব যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকেই আমদানি করা হয়। তবে দেশীয়ভাবে তৈরি ব্যাটারি এ কাজে ব্যবহার করা হয়।

কিন্তু ব্যাটারির দামও অনেক বেশি হওয়ার কারণে সৌর বিদ্যুতের দাম সেভাবে কমছে না। সরকার ২০০৯ সালে সোলার প্যানেল থেকে সব ধরনের শুল্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ফলে সোলার প্যানেলের দাম কিছুটা কমলেও সার্বিক বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচের বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এ খাতের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকার সোলার যন্ত্রাংশ থেকে শুল্ক প্রত্যাহার ছাড়া এ খাতের জন্য আর তেমন কিছু করেনি।

তাদের মতে, সোলার প্যানেল আমদানির বিকল্প হিসেবে স্থানীয় বাজারে এর আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি তৈরির মাধ্যমেই এর উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব। এদিকে সৌর বিদ্যুতের দাম বেশি হলেও সোলার হোম সিস্টেমে সৌর বিদ্যুতের ব্যাপক সম্প্রসারণ হচ্ছে। এর মাধ্যমে মূলত দেশের যেসব অঞ্চলে ভৌগোলিক কারণে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ পৌঁছানো সম্ভব নয়, সেসব অঞ্চলে আবাসিক বাড়ি, জনপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাটে বসানো হচ্ছে সোলার হোম সিস্টেম।

আর বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এ কাজে সহায়তা করছে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি ইডকল। বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে তারা এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। বিশেষ করে গ্রামীণ শক্তি, ব্র্যাক, সৃজনী, ব্রিজ, রুরাল সার্ভিসেস বাংলাদেশ এবং সোনালী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনসহ ১৫টি বেসরকারি সংস্থা গ্রামাঞ্চলে এই সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনে কাজ করছে। বর্তমানে প্রায় ১০ লাখের মতো সোলার হোস সিস্টেম উৎপাদনে ব্যবহার হচ্ছে। আগামী বছরের শেষ নাগাদ ইডকলের মাধ্যমে আরও সাড়ে ৬ লাখ সোলার হোম সিস্টেম বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে ইডকলের।

এ ব্যাপারে ব্রাইট গ্রীন এনার্জি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান দীপাল চন্দ্র বডুয়া বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারের সম্ভাবনা খুব বেশি। সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। তিনি বলেন, সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে সব যন্ত্রাংশ দেশেই ব্যাপকহারে উৎপাদন করা গেলেও দাম অনেকটা কমে আসত। কিন্তু এখন পর্যন্ত সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় তা বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এজন্য খরচ পড়ছে বেশি।

দীপাল বড়ুয়া জানান, শহরবাসী গ্রিড-বিদ্যুৎ ব্যবহারে অভ্যস্ত হওয়ায় সোলার-হোম-সিস্টেমের স্বল্প সময়ের সৌর-বিদ্যুতে আগ্রহী নয়। ফলে শহরবাসীর ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে সোলার-হোম-সিস্টেম হলেও তারা এটি ব্যবহারে অনিচ্ছুক। তিনি বলেন, শহরবাসী সহজেই এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করে জাতীয় গ্রিড লাইনের ওপর নির্ভশীলতা কমাতে পারেন।

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: ইনকিলাব

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com