সাত ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পর্দা ওঠে। উদ্বোধনী ম্যাচে পাঁচ বছর পর ফেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি দুর্বার রাজশাহীর অধিনায়কের জার্সি ছাড়া টসের বিতর্ক দিয়ে শুরু, এরপর দিন যত গড়ায়, ম্যাচ যত বাড়তে থাকে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে লাগামহীন ভাবে। সরকারি হস্তক্ষেপ পর্যন্ত করতে হয়েছে।
তবু মাঠের ক্রিকেটে ছিল রান উৎসব, দর্শকদের চাহিদা ছিল আকাশছোঁয়া, টিকিট বিক্রির আয় গড়েছে রেকর্ড; সবমিলিয়ে বিপিএল নিয়ে সমালোচনা যেমন ছিল তুঙ্গে, তেমনই বাইশ গজের লড়াই নিয়ে আলোচনাও ছিল অনেক। অবশেষে আজ শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) সন্ধ্যায় ফাইনালের মহারণ দিয়ে শেষ হতে যাচ্ছে বিতর্কের বিপিএল।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬টায় ফাইনাল মুখোমুখি হবে ফরচুন বরিশাল-চিটাগং কিংস। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বরিশালের সঙ্গে চিটাগং লড়াই করবে প্রথম শিরোপার জন্য। এর আগে বন্দরনগরীর ফ্র্যাঞ্চাইজিটি ২০১৩ সালে ফাইনালে উঠেছিল, ১১ বছর পর তাদের সামনে আবার শিরোপা জয়ের হাতছানি।
জমজমাট লড়াইয়ে ফাইনালে নাম লেখানো চিটাগংকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল, “মাঠের ক্রিকেটে তারা প্রমাণ করেছে তারা ডিজার্ভিং। এমন না যে শুধু সেমিতে এসে খেলেছে। টুর্নামেন্ট জুড়ে দারুণ খেলেছে। ম্যানেজমেন্টের অনেক কৃতিত্ব পাওনা।”
টুর্নামেন্টে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধারাবাহিক বরিশাল। দেশি-বিদেশি মিলিয়ে স্কোয়াডের শক্তিও বেশ। ফাইনালের আগে যোগ দিয়েছেন কিউই অলরাউন্ডার জিমি নিশাম। তাতে শক্তি বেড়েছে কয়েকগুণ। সেই তুলনায় চিটাগং কিংস পিছিয়ে আছে। তবে এমনটা মানতে চাননা তামিম।
“ট্রফি এমন জিনিস যারা ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারাও চাইবে ৬ বার হতে (চ্যাম্পিয়ন)। আমরাও অবশ্যই চাইব আবার নিতে। প্রতিপক্ষও অনেক ভালো ক্রিকেট খেলছে। খুলনা দারুণ দল ছিল। শেষে ২ বিদেশি নিয়ে অনেক শক্তি বাড়িয়েছিল। তবে শেষ ম্যাচে দেখা গেছে কিছুই প্রেডিক্ট করা যায় না। আপনার ভালো প্লেয়ার থাকতে পারে তবে নির্দিষ্ট দিনের পারফরম্যান্স ম্যাটার করে। কালই ফাইনাল আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে। ১৩-১৪ ম্যাচে যা করেছি সব সেভাবেই করতে হবে ভিন্ন কিছু না। আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে সেরাটা দেওয়ার। ফাইনালকে শুধু একটি ম্যাচ হিসেবেই দেখতে হবে।”- যোগ করেন তামিম।
ফাইনালে নামে লেখানো চিটাগংয়ে গায়েও লেগেছে বিতর্কের দাগ। দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের পাওনা বুঝিয়ে না দেওয়ায় বারবার শিরোনামে এসেছে। তবে দলটির কোচ টেইটের দাবি এসবে কোন প্রভাব পড়েনি, “স্কোয়াডের মধ্যে আমরা বিশ্বাস ছড়িয়ে দিতে পেরেছি। ম্যাজিক হতেই পারে। ভালো জিনিস হলো, টুর্নামেন্টজুড়ে আমরা খুব বেশি কিছু পরিবর্তন আনিনি। আমরা এভাবেই টুর্নামেন্টে খেলেছি। কিছুটা ভাগ্যের সহায়তা আছে। তবে আমার মনে হয়, আমরা এখানে থাকার যোগ্য।”
সবমিলিয়ে চ্যালেঞ্জিং ফাইনালের প্রত্যাশা করছেন চিটাগংয়ের অস্ট্রেলিয়ান কোচ টেইট , “আমি মনে করি, সেরা দুই দলের মধ্যেই খেলা হবে। এটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং হবে। এর আগেও আমরা ক্লোজ কিছু ম্যাচ খেলেছি। এটা যেকোনো দিকেই যেতে পারে। তবে ফাইনাল ম্যাচে আমরা চ্যালেঞ্জ প্রত্যাশা করছি। বরিশাল খুবই ভালো দল। তাদের দলে ভালো কিছু খেলোয়াড় আছে। আমি মনোযোগটা আমাদের মধ্যেই রাখতে চাই।”
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ