সংবাদ শিরোনাম
এক ব্যক্তিকে গাজীপুর থেকে অপহরণের পর রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ছনটেকে আটকে রাখা এবং নির্মমভাবে নির্যাতনের ঘটনায় ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। উদ্ধার করা হয়েছে অপহৃত ওই ব্যক্তিকে।
মঙ্গলবার (২ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঘটনাটির বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব-১০ এর অধিনায়ক, অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন। তিনি জানান, গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন চান্দুরা এলাকায় বসবাসকারী আলমগীর পেশায় একজন ওষুধ বিক্রেতা। গত ২৯ এপ্রিল বিকাল ৪টার দিকে তিনি জমি কেনার জন্য কালিয়াকৈর থানাধীন চান্দুরা চৌরাস্তার দিকে যান। রাত ১১টার দিকে আলমগীর বাড়িতে ফিরে না আসায় তার পরিবারের লোকজন ফোন করলে সেটি বন্ধ পান। কোথাও তার কোনো সন্ধান না পেয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি জিডি করেন তারা।
৩০ এপ্রিল সকাল ১১টায় আলমগীরের স্ত্রীর মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ফোন দিয়ে জানায়, তারা আলমগীরকে অপরহণ করেছে এবং আলমগীরের নির্যাতনের বিভিন্ন চিৎকার শুনিয়ে তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে তারা। টাকা না পেলে তারা আলমগীরকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকিও দেওয়া হয়। পরে বিষয়টি র্যাবকে জানায় আলমগীরের পরিবার।
অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন আরও বলেন, ১ মে, র্যাব-১০ এর একটি টিম অভিযান চালায় যাত্রাবাড়ী থানাধীন বউবাজার ছনটেক এলাকায়। এসময় অপহৃত আলমগীরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করেন তারা। একই সঙ্গে অপহরণকারী চক্রের ৮ জনকে গ্রেফতার করে আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
গ্রেফতার আটজন হলো মো. সিয়াম আল জেরিন তালুকদার (৩৩), রাসেল শেখ ওরফে মিঠু (৩৩), মো. শহিদুল ইসলাম (৩৭), প্রনব নারায়ণ ভৌমিক (৫০), মো. আলমগীর (৪২), আ. রব খান (৭৮), সৈয়দা জান্নাত আরা উর্মি (২৭), ও ইসরাত জাহান সায়লা (২৯)। এর আগেও শহিদুল ইসলাম ভুয়া পুলিশের মামলায় গ্রেফতার হয়েছিল। তাদের কাছ থেকে একটি খেলনা পিস্তল, ৩টি চাকু, ১ হাতুড়ি, ১টি আয়রন মেশিন, ১টি লাঠি, ১টি বেলনা, ১টি বেল্ট, ১টি হুক্কা ও ১৩টি মোবাইল ফোন জব্দ করে র্যাব।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা র্যাবকে জানায়, অপহরণকারী চক্রটি ভুক্তভোগী আলমগীরের কাছে জমি বিক্রির কথা বলে তাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায়। বিকাল ৪টার দিকে তাদের সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে গিয়ে খেলনা পিস্তল দিয়ে মৃত্যুর ভয় দেখায়। পরে সিএনজিযোগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন ছনটেক বউবাজার এলাকায় তাদের আস্তানায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে আলমগীরকে সবাই মিলে লাঠি, বেলনা ও বেল্ট দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। মারধরের একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর শরীরের পেছনের অংশে গরম তেল ঢেলে দেয়। তার পরিবারকে নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ
