চাকরি পাওয়ার আশায় প্লাস্টিক ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের (৪৬) সঙ্গে একজনের সহযোগিতায় পরিচয় হয় সাবিনা আক্তারের (২৫)। যোগাযোগের এক পর্যায়ে তারা দুজনে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। সম্পর্কের এক মাসে পেরিয়ে গেলেও চাকরি না দেওয়া ও বিয়ে করা নিয়ে দুজনের মধ্যে বাক-বিতণ্ডার জেরে পুরুষাঙ্গ কেটে নজরুলকে হত্যা করেন সাবিনা।
রাজধানীর চকবাজারের পোস্তা এলাকায় প্লাস্টিক ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম (৪৬) হত্যার ঘটনায় সাবিনা আক্তার (২৫) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে নজরুল হত্যাকাণ্ড নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান লালবাগ জোনের উপ-কমিশনার জসীম উদ্দিন।
তিনি জানান, গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টায় যশোরের বাঘার পাড়ার মির্জাপুর মধ্যপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাবিনাকে গ্রেপ্তার করে চকবাজার থানা পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে নিহত নজরুল ইসলামের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
গত বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর চকবাজারের পোস্তা এলাকার আর এন ডি রোডের ৬৬/১ নং এশিয়া টাওয়ারের ৫ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে হাত, পা ও মুখ বাঁধা এবং পুরুষাঙ্গ কাটা অবস্থায় নজরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে চকবাজার মডেল থানা পুলিশ। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ফুলদানির ভাঙা অংশ, ধারালো চাকু ও অন্যান্য আলামত জব্দ করা হয় এবং ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। এই ঘটনায় ওইদিনই চকবাজার মডেল থানায় বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন নিহতের বড় ভাই তহিদুল ইসলাম ওরফে তাপস।
লালবাগ জোনের উপ-কমিশনার জানান, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সাবিনা আক্তারকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে গ্রেপ্তার সাবিনাকে জিজ্ঞাসাবাদে নজরুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ঘটনার প্রায় এক মাস আগে একজন ব্যক্তির মাধ্যমে চাকরির জন্য ভুক্তভোগী নজরুল ইসলামের সঙ্গে সাবিনার পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে তারা অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রী সন্তান বাসায় না থাকায় নজরুল ইসলাম সাবিনা আক্তারকে গত ২ ডিসেম্বর রাতে বাসায় ডেকে নেন। সাবিনা আক্তার নজরুল ইসলামের বাসায় রাতে অবস্থান করেন।
এ সময় চাকরি ও বিয়ে নিয়ে তাদের মধ্যে বাক-বিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সাবিনা আক্তার প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ভোর ৫টার দিকে নজরুল ইসলামকে শিল পাটার শিল দিয়ে মাথা ও মুখে গুরুতর আঘাত করেন ও মুখে বালিশ চাপা দেন। এতে নজরুল ইসলাম জ্ঞান হারিয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়েন। এরপর নজরুল ইসলামের হাত, পা ও মুখ বেঁধে ধারালো চাকু দিয়ে তার পুরুষাঙ্গ কেটে আলাদা করে নির্মমভাবে হত্যা করেন।
ডিসি জানান, গ্রেপ্তার সাবিনা আক্তারের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত শিল পাটার রক্তমাখা শিল এবং ঘটনার দিন তার পরিহিত বোরকা উদ্ধার করেছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ