মাস পার না হতেই লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে নৌকা দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মাদারীপুরের রাজৈরের ২ যুবকের। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে অনেকে।
নিহতরা হলেন- উপজেলার শাখার পাড় গ্রামের সিদ্দিক মাতুব্বরের ছেলে নাসির মাতুব্বর (৩৫) এবং চরমস্তফাপুর গ্রামের আবু হাওলাদারের ছেলে সুমন হাওলাদার (১৯)। নিখোঁজদের পরিচয় জানা যায়নি।
গত ফেব্রুয়ারিতে কেবল রাজৈর উপজেলারই ২০ থেকে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। কোনো রকমে বেঁচে ফিরে আসার মধ্যে কয়েকজন সুমন ও নাসিরের মৃত্যুর খবর পরিবারের কাছে জানায় শনিবার। এ সময় পরিবারের সদস্যদের মাতমে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী জানান, ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর আশায় লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে গত ৮ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে বের হয়েছিল রাজৈর উপজেলার চরমস্তফাপুর গ্রামের সুমন হাওলাদার। পার্শ্ববর্তী শাখারপাড় গ্রামের দালাল আরিফের সঙ্গে ১৭ লাখ টাকা চুক্তি হয়েছিল তার। সেই মোতাবেক গত ৩ মার্চ দিবাগত রাতে লিবিয়া থেকে রওনা দেয় তারা। কিন্তু বিধিবাম। বোট ফেটে নির্মম মৃত্যু হয় তার।
সুমনের ভগনিপতি আল আমিন বাঘা জানান, ১৭ লাখ টাকা চুক্তিতে আরিফ দালালের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল সুমনকে। ৩ মার্চ দিবাগত রাতে তাদের রওনা দেওয়ার খবর পাই। তার ২ দিন পর শুনি সুমনের কোনো খবর নেই।
সুমনের খালা জানায়, সুমনের ২টি ভাই পাগল(মানসিক ভারসাম্যহীন)। তারা মামারা গেছে ১০ বছর আগে। সুমনের বাবা তার খবর শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তার স্যালাইন চলছে। এখন এদের পরিবারের কি হবে? আমরা গরীব মানুষ। ওর লাশটা দেশে নিয়ে আসার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।
অপরদিকে একই উপজেলার শাখারপাড় গ্রামের নাসির মাতুব্বর নওগাঁ জেলার দিপু দালালের মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা চুক্তিতে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ২০ দিন আগে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। গত ৪ মার্চ তারা রওনা দিয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। ২ ঘণ্টা বোট চলার পর ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। এ ঘটনায় নাসিরের মৃত্যুর খবর আসে পরিবারের কাছে।
নাসিরের বোন জানান, আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। আমার ভাইয়ের হায়াত এ পর্যন্তই ছিল। দালালরা তাকে স্পেশাল বোটে ডাবল ইঞ্জিন দিয়ে পাঠিয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যে নেই।
রাজৈর থানার ওসি মাসুদ খান জানান, এ ধরনের ঘটনা অহরহ ঘটছে। এ ব্যাপারে যারা অভিযোগ করছে। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস