আশপাশে বাঁশঝাড়। তার মাঝখানে একটা সেতু। তবে সেতুর সংযোগ সড়ক নেই। ফলে কোনো কাজেই আসছে না ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
ঘিওর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার সিংজুরি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বীর সিংজুরী এলাকায় কৃষিজমিতে যাতায়াতের জন্য সেতু কালভার্ট প্রকল্পের আওতায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ চুক্তি হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইসাসা এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে। এরপর প্রতিষ্ঠানটি নিয়মবহির্ভূতভাবে সাব ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজটি সম্পন্ন করে।
সরেজমিন দেখা যায়, বীর সিংজুরী এলাকার মাটির রাস্তার পাশে বাঁশঝাড়ের আড়ালে পাঁচটি বাড়ির সীমানার মধ্যে ছোট একটি অগভীর খালের ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। দুই পাশে সংযোগ সড়ক তৈরির কোনো ব্যবস্থা নেই। সেতুটির দুই পাশে বড় বড় দুটি বাঁশঝাড়।
বীর সিংজুরী গ্রামের বাসিন্দা আলী কাজী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাঁশঝাড়ের নিচে সেতু দিছে। আমরা সেতু দিতে মানা করেছিলাম, তাও মানে নাই। তারপরও জোর করে সেতু দিছে। এই সেতুর কোনো দরকার নাই আমাগো।’
একই গ্রামের নিলচাল মিয়া বলেন, ‘কয়েকটি বাড়ির জন্য সেতুটি করেছিল। সেতুটি করা ঠিক ছিল যদি আরেকটু নিচু করতো। রাস্তা ছেড়ে প্রায় সাত ফুট উঁচু করেছে। মাটি দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। সেতুটি কোনো কাজেই আসছে না।’
একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওই গ্রামের শরব আলী দেওয়ান। তিনি বলেন, ‘এইখানে সেতুটির কোনো দরকারই ছিল না। কোনো লাইন (রাস্তা) নাই, তবুও সেতুটি করলো।’
সিংজুরী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আক্কাস আলী বলেন, ‘সেতুটি নিচু করে দিতে বলেছিলাম। চেয়ারম্যানকে দিয়েও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে (পিআইও) বলিয়েছিলাম। তারা বলেন, আমাদের বিল আটকা যাইবো। সামনে দুই ফুট ও পেছনে পাঁচ ফুট মাটি পড়বো।’
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ করা সাব ঠিকাদার মিজান বলেন, ‘আমাকে ওয়ার্ক অর্ডার দিয়েছে অফিস থেকে। ওয়ার্ক অর্ডারে যেখানে সেতুটি দেওয়ার কথা আমি সেখানেই করেছি। সংযোগ সড়কের বিষয়ে আমার কোনো মতামত নেই।’
এ বিষয়ে ঘিওর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ওই সেতুর কাজ এখনো শেষ হয়নি। এখনো ঠিকাদারের বিল দেওয়া হয়নি। কাজ শেষ হলে মানুষ সুবিধা পাবে।
জানতে চাইলে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমা সুলতানা নাসরীন বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। সরেজমিন বিষয়টি দেখবো।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ