রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ১১:২৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

ভাঙন আতঙ্কে চোখে ঘুম নেই পদ্মাপাড়ের বাসিন্দাদের

পাবনা প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩
  • ৩৬ বার পড়া হয়েছে

পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রমত্তা পদ্মা রুদ্ররূপ ধারণ করেছে। পদ্মার আগ্রাসী রূপে ৫ নম্বর সাঁড়াঘাটের বাসিন্দারা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র (মৎস্য সমিতির অফিস), বেশকিছু দোকানপাট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। নদী থেকে মাত্র ১০ মিটার দূরে বসতবাড়ি। এখানকার বাসিন্দারা নদীগর্ভে বসতবাড়ি বিলীন হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, ব্রিটিশ শাসনামলে দেশের অন্যতম নৌবন্দর হিসেবে পরিচিত ছিল সাঁড়া। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বাইসহ দেশ-বিদেশের বড় বড় জাহাজে মালামাল আসতো এ বন্দরে। পাকশীতে পদ্মা নদীর ওপর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের পর এ নৌবন্দর গুরুত্ব হারাতে থাকে। একসময় নৌবন্দরের পাকা স্থাপনা নদীগর্ভে চলে যায়।

উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের হার্ডিঞ্জ ব্রিজ থেকে সাঁড়া ইউনিয়নের আরামবাড়িয়া পর্যন্ত আট কিলোমিটার নদীর তীরের মধ্যে পাকশী ইউনিয়নে দুই কিলোমিটার ও সাঁড়া ইউনিয়নের পাঁচ কিলোমিটার নদীর তীরে বাঁধ রয়েছে। শুধু মাঝের ৫ নম্বর সাঁড়াঘাট এলাকার এক কিলোমিটার নদীর তীরে বাঁধ নেই। প্রতিবছর পদ্মায় পানি বাড়লেই ভাঙন আতঙ্কে থাকেন এখানকার মানুষেরা।

এখন যেখানে নদীর তীর সেখান থেকে প্রায় আধাকিলোমিটার দূরে ছিল নদী। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ভাঙতে ভাঙতে এখন নদী বাড়ি থেকে মাত্র ১০ মিটার দূরে রয়েছে। এবার ভাঙনে হয়তো সাঁড়া ৫ নম্বর ঘাটের কোনো চিহ্ন থাকবে না। বসতবাড়ি ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি এখানে বাঁধ নির্মাণের।

সাঁড়াঘাট এলাকার বাসিন্দা অসিত চন্দ্র হালদার বলেন, নদীতে পানি বাড়লেই এ এলাকার বাসিন্দারা উৎকণ্ঠায় থাকেন। এখানকার মৎস্য সমিতির অফিস ও দোকানপাট নদীতে ভেঙে গেছে। এবছর বসতবাড়ি ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা মাঝেমধ্যে এসে বাঁধ নির্মাণের জন্য মাপামাপি করেন কিন্তু বাঁধ নির্মাণ হয় না।

কাঁলাচাদ বিশ্বাস বলেন, এ এলাকায় আমাদের মতো দরিদ্র জেলেরা বসবাস করেন। নদীর যে গতিবিধি দেখছি এবার বসতবাড়ি ভেঙে যেতে পারে। ভাঙন আতঙ্কে আমাদের দু’চোখে ঘুম নেই। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন শুরু হয়েছে। পানি যখন কমবে তখন ভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করবে।

শুটকা চন্দ্র হালদার বলেন, নদী ভাঙতে ভাঙতে বসতবাড়ির কাছে চলে এসেছে। বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রতিবছরই কর্মকর্তা এসে মাপামাপি করে আশ্বাস দিয়ে যায়। কিন্তু বাঁধ নির্মাণ তো হয় না। এখানে আমার মতো অনেকের দোকানপাট রয়েছে। এসব দোকানপাটে ব্যবসা-বাণিজ্য করে সংসার চলে। এগুলোও ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

সাঁড়াঘাটের দোকানদার স্বপন হোসেন বলেন, আমরা নদীভাঙন এলাকার অবহেলিত মানুষ। সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিরা এসে বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে যায় কিন্তু সামান্য এক কিলোমিটার এ বাঁধ নির্মাণ হয় না। এখান থেকে ২০০ মিটার দূরেই ঈশ্বরদী ইপিজেড। সাঁড়াঘাটে বাঁধ না দিলে একসময় এ ভাঙন ইপিজেডে গিয়ে ঠেকবে। নিজের দোকান রক্ষা করার জন্য বালির বস্তা ফেলে এক লাখ টাকা খরচ করেছি কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। এখন নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে দোকান। যে কোনো সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে আয়ের একমাত্র অবলম্বন এ দোকানটি।

সাঁড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) মো. রফিক বলেন, সাঁড়াঘাটের নদীর তীরে এক কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ নেই। অথচ সাঁড়াঘাটের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে নদীর তীরে সাত কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে। এখানকার বাসিন্দারা অধিকাংশই জেলে ও দরিদ্র কৃষক। তাদের মাথাগোঁজার ঠাঁই নদীতে বিলীন হয়ে গেলে এরা নিঃস্ব হয়ে যাবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা একাধিকবার দেখে বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁধ নির্মাণ হয়নি।

সাঁড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক রানা সরদার বলেন, সাঁড়া ৫ নম্বর ঘাটের দুইপাশে সাত কিলোমিটার নদীরক্ষা বাঁধ রয়েছে। অথচ মাঝের এ এলাকায় এক কিলোমিটারে বাঁধ নেই। এ বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের একাধিকবার লিখিতভাবে জানিয়েছি। এখনো মাঝেমধ্যেই এ বিষয়ে যোগাযোগ করি।

তারা শুধু বলেন, এ বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আসলে আর কতদিন এই বাঁধ নির্মাণে সময় লাগবে তা বলতে পারছি না। এখানকার বেশকিছু দোকানপাট, মৎস্য সমিতির অফিস নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নদী বসতবাড়ির কাছাকাছি চলে এসেছে। যে কোনো সময় বাড়িঘর ভাঙন শুরু হবে।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফরহাদ হোসাইন বলেন, সাঁড়া ৫ নম্বর ঘাট এলাকার ভাঙনের বিষয়টি আমাদের জানা রয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এখানে ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হবে। এখানে বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব তথ্য ঢাকা হেড অফিসে পাঠানো হয়েছে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com