সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

৩৫ বছর অনাবাদী নীলফামারীর হাজার একর জমি

নীলফামারী প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৩
  • ৩৫ বার পড়া হয়েছে

নীলফামারীর ডিমলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গাফিলতিতে প্রায় ৩৫ বছর ধরে হাজারো একর জমির ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বাঁধ নির্মাণ না করায় বর্ষা মৌসুমে এসব জমিতে চাষাবাদ করতে পারছে না কৃষকরা। ফলে উপজেলায় কমপক্ষে ১০ হাজার টন ফসল কম উৎপাদন হচ্ছে। বাঁধ নির্মাণ করে এসব জমি চাষযোগ্য করার দাবিতে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে গণস্বাক্ষরসহ আবেদন করেছেন এলাকাবাসী।

উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বুড়িতিস্তা নদীতে ফসলি জমি রক্ষার জন্য নিজ সুন্দর খাতা এলাকা থেকে মধ্যম সুন্দর খাতা পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয় দেশভাগেরও (১৯৪৭) আগে। পরে ১৯৮৮ সালের বন্যায় মধ্যম সুন্দর খাতা কচুর দোলায় বাঁধের ৬০ মিটার ভেঙে যায়। তখন এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি মেরামত করলেও নদীর পানির প্রবল স্রোতে আবারও ভেঙে যায়।

সরেজমিন দেখা গেছে, বুড়িতিস্তা নদীর প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এতে উপজেলার নিজ সুন্দর খাতা, মধ্যম সুন্দর খাতা, দক্ষিণ সুন্দর খাতাসহ পাঁচটি গ্রামের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ প্লাবিত হয়েছে। শতাধিক পুকুর, রাস্তাঘাট ও রোপা আমনক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। বাঁধের ভাঙা অংশ সংস্কার না হওয়ায় দেখা দিয়েছে সংকট।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এক ইঞ্চি জমিও পতিত থাকবে না, প্রধানমন্ত্রীর এরকম নির্দেশনার পরও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবহেলায় হাজারের অধিক একর জমির ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তারা যুগ যুগ ধরে বাঁধটি সংস্কারের দাবি জানালেও কথা শোনার যেন কেউ নেই।

মাঠে কাজ করা কয়েকজন কৃষক জানান, এক সময় এসব জমিতে বছরে তিন বার ফসল আবাদ করে ধানের গোলা ভরতেন তারা। কিন্তু ১৯৮৮ সালের বন্যায় বাঁধ ভাঙার পর থেকে এখানে সারা বছর পানি থাকে। যার ফলে এসব জমিতে শুকনো মৌসুমেও চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। বাঁধটি সংস্কার করা হলে বছরে তিন থেকে চার বার ফসল ফলানো সম্ভব বলে মনে করেন তারা।

সুন্দর খাতা গ্রামের কৃষক হাবিবুল ইসলাম বলেন, শুকনো মৌসুমে পানি শুকিয়ে গেলে ধানচাষ শুরু হয়। তবে জ্যৈষ্ঠ মাসে শুরু হয় জলাবদ্ধতা। নদীর তলদেশ উঁচু হওয়ায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাঁধের ভাঙা অংশের কারণে আধাপাকা ধানখেত পানির নিচে ডুবে যায়। আর বর্ষা মৌসুমে ফসলের মাঠ থাকে চার থেকে ছয় ফুট পানির নিচে।

আবু তাহের নামের এক কৃষক বলেন, ‘ছয় বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। এর মধ্যে নদীর স্রোতে সাড়ে চার বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। অবশিষ্ট দেড় বিঘাও পানির নিচে। প্রতিবার ভাঙা বাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে আমাদের ফসল আর ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়।’ 

স্থানীয় বাসিন্দা আফরাইম আল মিছরি বলেন, বাঁধের নিচের জমিতে প্রায় ৩৫ বছর ধরে চাষাবাদ নেই। বিক্রি করতে চাইলেও এ জমির ক্রেতা পাওয়া যায় না। আট লাখ টাকা বিঘার জমি তিন লাখ টাকাও বিক্রি হয় না। বহুবার পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কৃষি বিভাগসহ বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। তারা শুধু আশ্বাস দেন, কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। মাত্র ৬০ মিটার ভাঙা বাঁধের কারণে এই এলাকার অর্থনীতি বিধ্বস্ত।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী বলেন, বুড়িতিস্তা বাঁধের দুই পাশে জলাবদ্ধতার কারণে হাজার বিঘা জমি অনাবাদি থেকে যাচ্ছে। বাঁধের সংস্কারসহ পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা গেলে এসব জমি থেকে প্রচুর ধান উৎপাদন সম্ভব। দ্রুত বাঁধটি সংস্কার করা না হলে যেকোনো মুহূর্তে ২০০ হেক্টর ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার সমস্যা দীর্ঘদিনের। কী কারণে এত দীর্ঘ সময় বাঁধটি সংস্কার করা হয়নি, তা খতিয়ে দেখা হবে। জলাবদ্ধতার কারণে যাতে মাঠের চাষাবাদ বন্ধ না থাকে, সেজন্য দ্রুত বাঁধটি সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বাঁধটি দ্রুত সংস্কারের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com