বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সম্প্রতি মোবাইল ফোনের মূল্যহার বা কলরেট কমাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন, কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি উল্টো কলরেট বাড়াতে চাইছে।
এই কলরেট বাড়ানোর একটি উদ্দেশ্য নিয়ে আজ (বুধবার) মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি সভা করবে বলে জানা যাচ্ছে।
কিন্তু বিটিআরসি কেন কলরেট বাড়ানোর জন্য উদ্যোগী?
এই প্রশ্নে বিবিসিকে সংস্থাটির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের কলরেট পৃথিবীর মধ্যে প্রায় সর্বনিম্ন। এত সস্তায় কেউ কথা বলতে পারেনা আর কোথাও।
“কিন্তু সেটা আমাদের যুক্তি না। কারণটা হচ্ছে, এখানে অননেট এবং অফনেট বলে একটা জিনিস আছে। আপনি যদি একই নেটওয়ার্কের ভেতরে কথা বলেন, সেটা হচ্ছে অননেট। আর এক নেটওয়ার্ক থেকে আরেক নেটওয়ার্কে কথা বলতে গেলে সেটা হল অফনেট। এটার জন্য আমাদের দুটো ভিন্ন রেট আছে। এটা অনেক ডিফারেন্স। অননেটের জন্য সর্বনিম্ন ২৫ পয়সা, অফনেটের জন্য ৬০ পয়সা। পৃথিবীর সব জায়গাতেই এই দুটো রেটের মধ্যে তফাৎ নেই। সেজন্য এই দুটোর মধ্যে পার্থক্য কমানোর জন্য আমরা প্রাথমিকভাবে একটা উদ্যোগ নিচ্ছি”, বলছিলেন ড. মাহমুদ।
পার্থক্য কমাতে গেলেই সর্বনিম্ন কলরেট ২৫ পয়সা থেকে বেড়ে যাবে বোঝাই যাচ্ছে। অর্থাৎ বেড়ে যাবে গ্রাহক পর্যায়ে মোবাইল ফোনে কথা বলার ব্যয়।
কিন্তু কলরেট সর্বনিম্ন হলেও বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, “এখানে মোবাইল ফোনের ব্যবসা অনেক দেশের চাইতেই লাভজনক।”
সেক্ষেত্রে তো গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে না?
এই প্রশ্নে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কিংবা গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির উদাহরণ টেনে বলছেন, “এমনভাবে বাড়াবো যাতে গ্রাহকের উপর সর্বনিম্ন প্রতিক্রিয়া হয়।”
কিন্তু টেলিফোন খাত নিয়ে খোঁজখবর রাখেন এমন একজন বিশেষজ্ঞ আবু সাঈদ খান বিবিসিকে বলছেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাজ হচ্ছে, মোবাইল অপারেটর এবং গ্রাহকদের স্বার্থ সমানভাবে রক্ষা করা। কিন্তু বিটিআরসি সেটা আজ পর্যন্ত করতে পারেনি।
এমনকি সেবার মাণ নিয়ন্ত্রণের জন্য আজ পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ তারা নিতে পেরেছে বলে জানা নেই, বলছেন মি. খান।
তিনি আরও বলছেন, তার জানা মতে এই কলরেট বাড়ানোর কোনও দাবী অপারেটরদের তরফ থেকে ওঠেনি, সরকারের তরফ থেকেও সিদ্ধান্ত হয়নি।
তাহলে বিটিআরসির কেন আগ্রহী?
“এটার মূল কারণ হচ্ছে বিটিআরসি অপারেটরদের কাছ থেকে রাজস্বের একটি অংশ পেয়ে থাকে। রাজস্ব বৃদ্ধিই এর সম্ভাব্য একমাত্র কারণ যেটা বিটিআরসিকে এই উদ্যোগ নিতে উৎসাহিত করেছে”, বলছেন আবু সাঈদ খান।
বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: বিবিসি বাংলা/এসএস