শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০২:২৩ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

পিনাক-৬ লঞ্চ ট্রাজেডির ৩ বছর : অজ্ঞাত ২১ জনের পরিচয় আজও মেলেনি, পরিবারগুলো পায়নি আর্থিক সহায়তা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ৪ আগস্ট, ২০১৭
  • ১৮১ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, এস. এম. রাসেল, মাদারীপুর প্রতিনিধি : রিজিয়া বেগম শিবচরের বন্দরখোলার বৃদ্ধা এই মায়ের দরিদ্র সংসারে ৫ সন্তানের মাঝে ৪ র্থ সন্তান মিজানুর ছিল পরিবারের অন্যতম উপার্জনক্ষম। ২০১৪ সালে ঈদে বাড়ি এসে ঢাকায় ফেরার পথে ২ সন্তান ও স্ত্রীসহ নিহত হয় মিজানুর। মিজানুরসহ ৩ জনের লাশ উদ্ধার হলেও এখনো মেয়ে নিখোজ রয়েছে । এই শোকে মিজানের বাবাও কিছুদিন পর মারা যায়। এরপর থেকে মায়ের সঙ্গী ছেলে ও পরিবারের সদস্যদের ছবি হাতে শুধু কান্না। লঞ্চটিতে উঠার আগে বিশ্ব কাপানো স্বর্না হিরাসহ ৩ বোনের সেলফিই এখন পরিবারের একমাত্র সম্বল। পাশের ইউনিয়ন সন্নাসীরচরের ফরহাদের পরিনতি আরো ভয়াবহ। ফরহাদসহ পরিবারের ৪ জনের কারোরই লাশ পাওয়া যায়নি। আর এ অজুহাতে নিখোজ অর্ধ শতাধিক পরিবারের কাউকেই দেয়া হয়নি ঘোষিত আর্থীক অনুদান। আর অজ্ঞাত হিসাবে ২১ জনের লাশ দাফন হলেও ডিএনএ নমুনাই রয়ে গেছে মেলেনি পরিচয়। আজও সন্ধান মেলেনি লঞ্চটিরও। ৪৯ জনের মধ্যে অজ্ঞাত হিসাবে ২১ জনের লাশ দাফন হওয়ায় অনুদান পান মাত্র ২৮ জনের পরিবার। উপার্জনক্ষম ব্যক্তিদের হারিয়ে নিহত ও নিখোজ পরিবারগুলোর অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন কাটাচ্ছেন।
একাধিক সুত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৪ আগস্ট ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বোঝাই আড়াই শতাধিক যাত্রী নিয়ে মাদারীপুরের শিবচরের কাওরাকান্দি ঘাট থেকে পিনাক-৬ লঞ্চটি উত্তাল ঢেউয়ের কবলে পড়ে মাওয়ার অংশে ডুবে যায়। সরকারি ভাবে ওই ঘটনায় ৪৯ জন যাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ২৮টি লাশ পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হয় আর ২১ জনকে শিবচর পৌরকবর স্থানে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হয়। নিখোঁজ থাকে আরো ৫৩ জন। তবে বেসরকারী হিসেবে অন্তত শতাধিক যাত্রী নিখোজ রয়েছে। স্বজনদের না পেয়ে এসব পরিবারে চলছে এখনো শোকের ছায়া। নিহতদের মধ্যে অনেকেই স্বপরিবারে ও নিখোজদের অনেকেই স্বপরিবারে রয়েছে। এই যেমন, শিবচর পৌর এলাকার মোঃ নুরুল হক মিয়ার শিকদার মেডিকেলে ডাক্তারী পড়–য়া মেয়ে নুসরাত জাহান হিরা ও রাজধানীর বীরশ্রেষ্ট নুর মোহাম্মদ কলেজের ছাত্রী ফাতেমাতুজ জোহরা স্বর্ণা এবং তারই ভায়রার মেয়ে চীনের জইনুস মেডিকেল কলেজের ছাত্রী শরিয়তপুরে গঙ্গানগর এলাকার জান্নাতুল নাঈম লাখী এই দুর্ঘটনায় ৩ জন মারা গেলেও উদ্ধার হয়েছে ২জনের মৃতদেহ।
Madaripur News-04.08.20

একজন এখনো নিঁখোজ। যে সকল পরিবারে এখনো স্বজনরা নিঁখোজ রয়েছেন তাদের ভাগ্যে জোটেনি কোন সরকারী সাহায্য। এরপর আর কেউই তাদের খোঁজ নেয়নি। উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হারিয়ে অনেক অসহায় পরিবারকে কাটাতে হচ্ছে মানবেতর জীবন যাপন। কেউই তাদের খোঁজ নেয়নি। এতে ক্ষোভের অন্ত নেই স্বজন হারা পরিবারগুলোতে। যদিও নিহতদের তাৎক্ষনিকভাবে ২০ হাজার করে টাকা ও পরিবর্তিতে ঘোষিত ১ লাখ ৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়। ঘটনার পর লৌহজং ও শিবচরে স্থাপন করা হয় অভিযোগ ও তথ্য কেন্দ্র। নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয় ৭ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে। লৌহজং থানায় বিভিন্ন সংস্থা থেকে মামলা হয় ৪ টি।
নিহত মিজানুরের বৃদ্ধা মা রিজিয়া বেগম বলেন, আমার ছেলের সংসারে ৪জন মারা গেছে ওই লঞ্চে। ৩ জনের লাশ পাইছি। নাতনির লাশ আজও পাই নাই। এই ছেলেই ছিল আমার সংসারের আলো। ওর শোকে শোকে ওর বাপও কয়দিন পরই মারা গেছে । আমি এহন জ্যান্ত লাশ। স্বপরিবারে নিখোজ ফরহাদের ছোট ভাই শিশু মিয়া বলেন, ৪ টা লাশের মধ্যে একটা লাশ পাইলেও মনডারে সান্তনা দিতে পারতাম। আর সরকার টাকাতো দুরে থাক একটা খবরো নেয় নাই।
শিবচর পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন খান বলেন, অজ্ঞাত ২১ জনের লাশ পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ লাশগুলোর ডিএনএ নমুনা সংরক্ষন করা হয়েছে। তবে গত তিন বছরেও কেউ লাশের পরিচয়ের সন্ধানে আসেন নি। যদি কেউ আসে তবে পরিবারের কাছে তাদের লাশ হস্তান্তর করা হবে।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইমরান আহমেদ বলেন, পিনাক-৬ লঞ্চ ডুবির পরে সরকারের পক্ষ থেকে নিহত পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তবে নিখোজ ব্যাক্তিদের যেহেতু কোন প্রমান নেই তাই নিখোজ হিসেবে আবেদনকারী কোন পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়নি।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com