মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

আমরা কি কীটপতঙ্গ খেতে প্রস্তুত?

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ১১ মে, ২০২১
  • ৭১ বার পড়া হয়েছে

এই প্রথমবারের মতো গত ৪ মে ২০২১ তারিখে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৭টি দেশের খাদ্যনিরাপত্তা সংস্থা গুবরে পোকার লার্ভা বা শুককীট মানুষের খাদ্য হিসেবে নিরাপদ বলে ছাড়পত্র দিয়েছে। ফ্রান্সের পোকামাকড় দিয়ে খাদ্য প্রস্তুতকারী সংস্থা মাইক্রো নিউট্রিসের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপীয় খাদ্যনিরাপত্তা সংস্থা আমিষের নতুন উত্স হিসাবে কীটপতঙ্গকে বিবেচনায় নিয়েছে। ইউরোপীয় খাদ্যনিরাপত্তা সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার পরে ইউরোপের দেশগুলোতে গুবরে পোকার লার্ভা মানুষের নতুন খাদ্য হিসাবে স্বীকৃতি পেল।

এককথায় গুবরে পোকার আমিষ স্বাস্থ্যসম্মত, পরিবেশবান্ধব, সময় এবং অর্থ সাশ্রয়ী। গুবরে পোকার হলুদ লার্ভা শুকিয়ে নিলে যা অবশিষ্ট থাকে তাতে আমিষের পরিমাণ ৭০ শতাংশ। লার্ভার আমিষ আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ। উন্নত আমিষ, ফাইবার, আয়রন এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ শুককীটের মিহি গুঁড়ো বা আটা তৈরি করে সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাদ্য হিসাবে তা বাজারজাত করতে আর বাধা নেই।

এই আটা দিয়ে বিস্কুট, রুটি, স্প্যাগেটি এবং নানা পদের খাবার তৈরি করা যাবে। এর স্বাদ অনেকটাই চিনাবাদামের মতো। এদের থেকে ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ যে তেল পাওয়া যায় তা বাদ যাবে কেন? ইতিমধ্যে তা প্রাণীখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এদের বিষ্ঠা ১০০ শতাংশ প্রাকৃতিক সার, মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে অতুলনীয়। অর্থাৎ কোনোকিছুই বাদ যাবে না, বেচারা শুককীটের সবটুকুই কাজে লাগবে।

উল্লেখ্য, কালো গুবরে পোকার লার্ভা উৎপাদনের প্রক্রিয়া তুলনামূলক সহজ। প্রথমে প্রাপ্তবয়স্ক পোকা থেকে ডিম আলাদা করে লার্ভাগুলোকে ২৫ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়, অনুজ্জ্বল আলোতে বেড়ে উঠতে দেওয়া হয়। এরপর সেগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে পাঁচ মিনিট ফুটন্ত পানিতে সেদ্ধ করা হয়। পরবর্তী ধাপগুলোর মধ্যে রয়েছে যথাক্রমে শুকানো, প্যাকেজিং এবং বাজারজাতকরণ। শুকনো লার্ভার মিহি গুঁড়ো আটার মতোও বিক্রি হয়। মাত্র ৪০ বর্গমিটার (৪৩১ বর্গফুট) জায়গায় প্রতি মাসে ৮০০ কেজি লার্ভা উৎপাদন সম্ভব।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে প্রাণিজগতের এক বিশাল অংশ (৮৫ শতাংশ) দখল করে আছে এই সন্ধিপদী কীটপতঙ্গরা, এক বিশাল এবং বৈচিত্র্যময় ভাণ্ডার। পোকামাকড়ের এমন আমিষ, প্রচলিত আমিষের অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য এবং উন্নত বিকল্প হতে পারে। তাতে ২৫ গ্রিনহাউস গ্যাস উৎপন্ন হবে।

জাতিসংঘ প্রদত্ত তথ্য অনুসারে ১৯০০ সালের শুরুতে যেখানে সমগ্র পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ছিল ১৭০ কোটির ঘরে, সেখানে আগামী ২১৫৭ সাল নাগাদ তা পৌঁছে যাবে ১০০০ কোটির ঘরে। জনসংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি চাষের জমি, বনাঞ্চল, সুপেয় পানি কমে আসছে। স্বাভাবিকভাবেই জনসংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চাহিদা।

প্রধান চাহিদা হচ্ছে খাদ্য, বিশেষ করে আমিষের চাহিদা মেটাতে যেসব পশুপক্ষী, মাছ আমরা লালনপালন করি তা বেশ সময়সাপেক্ষ, ব্যয়বহুল এবং কষ্টসাধ্য। এজন্য বাড়তি স্থান এবং উত্তরোত্তর দুষ্প্রাপ্য পানযোগ্য পানির বিপুল অপচয় হয় অর্থাৎ মোটেই তা পরিবেশবান্ধব নয়। পশুখাদ্য উৎপাদন করতে গিয়ে আমাজন নামক পৃথিবীর ফুসফুস ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে।

তবে খাদ্যসংস্কৃতিতে কীটপতঙ্গ নতুন নয়। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে বর্তমানে ২০০ কোটি মানুষ, বিশেষ করে এশিয়া, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকার অধিবাসীরা অনেকেই কীটপতঙ্গ খেতে অভ্যস্ত। মানুষের খাদ্যতালিকায় ইতিমধ্যে স্থান করে নিয়েছে ১৯০০ প্রজাতির কীটপতঙ্গ।

তবে একসঙ্গে ইউরোপের ২৭টি দেশে গুবরে পোকার লার্ভা নতুন খাদ্য হিসাবে ছাড়পত্র পাওয়াতে খাদ্যসংস্কৃতিতে এক নতুন অধ্যায়ের সংযোজন হলো। অচিরেই আমাদের খাবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হতে যাচ্ছে নানারকম কীটপতঙ্গ। বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই ইউরোপের দূরদর্শী উদ্যোক্তারা তাই পোকামাকড় চাষ করে পশু, পাখি এবং মাছের খাদ্য হিসাবে বাজারজাত করছেন। এবার যুক্ত হতে যাচ্ছে কীটপতঙ্গ থেকে মানুষের উপযোগী নানা পদের খাদ্যউত্পাদন এবং বাজারজাতকরণ।

বাংলা৭১নিউজ/এবি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com