শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১০:২৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

এবিবি’র সিদ্ধান্ত : ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৬ শতাংশ সুদে আমানত গ্রহণ

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বুধবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২০
  • ৪১ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের সকল ব্যাংক ৬ শতাংশের বেশি সুদে আমানত গ্রহণ করবে না।ঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনতেই ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে গতকাল রাতে দেশের প্রায় সব ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।

ব্যাংকঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। আগামী ১ এপ্রিল থেকে সব ঋণের ক্ষেত্রে (ক্রেডিট কার্ড ছাড়া) এটি কার্যকর হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে এরই মধ্যে অনেক ব্যাংক আমানতের সুদহার কমাতে শুরু করেছে। কয়েকটি ব্যাংক আমানতের সুদহার ৬ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনায় ওইসব ব্যাংকের আমানত বেশি সুদে অন্য ব্যাংকে চলে যাচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল দেশের প্রায় সব ব্যাংকের এমডি একসঙ্গে বসেন।

বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে দ্য সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন বলেন, আগামী ১ এপ্রিল থেকে ব্যাংকগুলোকে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। ঋণের সুদহার কমানোর জন্য প্রস্তুতি নেয়ার সময় এখনই। এজন্য এবিবির বৈঠকে সব ধরনের আমানতের সর্বোচ্চ সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

তিনি বলেন, মেয়াদি আমানতের (এফডি) মেয়াদ তিন মাস থেকে তিন বছর পর্যন্ত হলেও সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৬ শতাংশ। তবে সর্বনিম্ন সুদের বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ব্যাংক নিজেদের সামর্থ্য ও সক্ষমতা অনুযায়ী সর্বনিম্ন সুদে আমানত সংগ্রহ করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত স্প্রেড (ঋণ ও আমানতের সুদহারের ব্যবধান) মেনে চলতে হবে। সব ব্যাংক একসঙ্গে সুদহার কমালে তবেই আমানতের সুদ কমানো সম্ভব। এজন্য দেশের প্রায় সব ব্যাংকের এমডি এবিবির বৈঠকে উপস্থিত হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ব্যাংকঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার কথা হচ্ছে প্রায় দুই বছর ধরে। বিভিন্ন সময়ে অর্থমন্ত্রী, ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসসহ (বিএবি) সংশ্লিষ্টরা এ ঘোষণা দিয়ে আসছিলেন। যদিও ঋণের সুদহার না কমে উল্টো আরো বেড়েছে। এ অবস্থায় ঋণের সুদহার কমানোর বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন প্রধানমন্ত্রীও। সর্বশেষ আগামী ১ এপ্রিল থেকেই ক্রেডিট কার্ড ছাড়া দেশের সব ধরনের ব্যাংকঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই সুদহার কমানোর বিষয়টি দেখভাল করছেন।

ব্যাংকঋণের সুদহার এক অংকে নামিয়ে আনার ঘোষণা বাস্তবায়নের জন্য সরকারি আমানতের সর্বোচ্চ সুদহার বেঁধে দিয়ে এরই মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ২০ জানুয়ারি জারি করা ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি আমানত বেসরকারি ব্যাংকে জমা রাখলে সর্বোচ্চ সুদহার হবে ৬ শতাংশ। আর রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে রাখলে এ আমানতের সর্বোচ্চ সুদহার ৫ দশমিক ৫০ শতাংশের বেশি হবে না। একই সঙ্গে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ বাধ্যতামূলকভাবে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে রাখার বিষয়েও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এবং পরিচালন বাজেটের আওতায় প্রাপ্ত অর্থ, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এবং সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির নিজস্ব তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ বেসরকারি ব্যাংকে রাখলে এর সর্বোচ্চ সুদহার হবে ৬ শতাংশ। একই আমানত সরকারি ব্যাংকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৫ শতাংশ সুদে রাখা যাবে। তবে প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্য তহবিলের অর্থ, পেনশন তহবিলের অর্থ এবং এন্ডাউমেন্ট ফান্ডের অর্থ এর আওতাবহির্ভূত থাকবে।

সরকারি নির্দেশনা জারির পর এরই মধ্যে অনেক ব্যাংক ব্যক্তি খাতসহ সব ধরনের আমানতের সর্বোচ্চ সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। যদিও সুদহার কমানোয় অনেক বেসরকারি ব্যাংক থেকেই আমানত বেরিয়ে বেশি সুদে অন্য ব্যাংকে চলে গেছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাংক নির্বাহীসহ অন্য ব্যাংকার ও পরিচালকদের মধ্যে মনোমালিন্যের ঘটনাও ঘটেছে। এ অবস্থায় সব ব্যাংকের আমানতের সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার জন্যই বৈঠকে বসেছিল এবিবি। তবে সুদহার ছাড়াও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে আমানতের ওপর উৎসে কর কর্তন সম্পর্কিত জারীকৃত প্রজ্ঞাপন, ব্যাংককে শ্রম আইনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে রাখাসহ কয়েকটি বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।

এ বিষয়ে এবিবির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মেহমুদ হোসেন বলেন, ব্যাংকঋণের সুদহার কমানোর বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী অনেক ব্যাংকই এরই মধ্যে আমানতের সুদহার কমিয়ে এনেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ও এরই মধ্যে সরকারি আমানতের সুদহার বেঁধে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ব্যাংকগুলোকে ১ এপ্রিলের মধ্যে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে নামিয়ে আনতে হলে অবশ্যই কস্ট অব ফান্ড কমিয়ে আনতে হবে। এবিবির বৈঠকে আমানতের সুদহার কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কোন ব্যাংক কী পন্থায় আমানতের সুদহার কমাবে, সেটি একান্তই সে ব্যাংকের নিজস্ব বিষয়। এবিবি কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থা নয়। এজন্য এবিবি থেকে কোনো সিদ্ধান্তও দেয়া সম্ভব নয়। তবে বৈঠকে অংশগ্রহণকারী প্রায় সব ব্যাংকের এমডিরাই ক্রমান্বয়ে সুদহার কমানোর বিষয়ে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

এনবিআরের প্রজ্ঞাপন নিয়ে ব্যাংক এমডিদের অসন্তোষ

সম্প্রতি বিভিন্ন ধরনের ব্যাংক আমানত ও সঞ্চয় স্কিমের সুদের ওপর উৎসে কর কর্তন ও জমাদান বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে এনবিআর। ওই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে নেয়া ধার বা কলমানির সুদের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর কর্তনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমানতকারী টিআইএনধারী হলে ১০ শতাংশ অন্যথায় ১৫ শতাংশ হারে কর কর্তন করতে বলেছে এনবিআর।

এছাড়া সব ধরনের কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত ফান্ডের (পেনশন, গ্র্যাচুইটি, প্রভিডেন্ট ফান্ডসহ অন্যান্য ফান্ড) আমানতের সুদের ওপর ৫ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমানতের সুদ প্রদান অথবা হিসাবে ক্রেডিট করার সময় উৎসে কর কর্তন প্রযোজ্য হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এক্ষেত্রে শুধু চূড়ান্ত প্রদানের সময় কর কর্তন না করে প্রতিবার সুদ ক্রেডিট প্রদানকালে উৎসে কর কর্তন ও জমাদানের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে।

এবিবির বৈঠকে এনবিআরের প্রজ্ঞাপনকে ব্যাংক ও গ্রাহকদের স্বার্থবিরোধী বলে দাবি করেছেন ব্যাংক নির্বাহীরা। এ নিয়ে ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন তারা।

এ বিষয়ে এবিবির সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, কলমানি কখনই ব্যাংকের আমানত নয়। দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটানোর জন্যই আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থ ধার করে। কলমানির সুদের ওপর ১০ শতাংশ কর আরোপ অনৈতিক।

একই সঙ্গে স্থায়ী আমানতের ওপর প্রতিবার সুদ ক্রেডিট করার সময় উেস কর কর্তনের নির্দেশটিও সঠিক নয়। কারণ অনেক গ্রাহকই স্থায়ী আমানতের মেয়াদ পূর্ণ না করে টাকা তুলে নেন। এক্ষেত্রে কর কর্তনে জটিলতা তৈরি হবে। এবিবির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে এমডিরা নিজেদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে আমরা সহসাই বাংলাদেশ ব্যাংকে যাব।

বাংলা৭১নিউজ/এসএএইবি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com