মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ০৫:৪৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

১/১১’র সময় বাজেয়াপ্ত টাকা ফেরতের রায় বহাল

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০১৭
  • ১০৯ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে জবরদস্তি করে নেয়া প্রায় ৬১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা টাকা ফেরত দিতে হবে।

হাইকোর্টের দেয়া এ সংক্রান্ত রায় আজ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির বেঞ্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের আপিল খারিজ করে আজ এ রায় দেন।

আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এর ফলে ওয়ান ইলেভেনে ক্ষতিগ্রস্ত যেসব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আইনের আশ্রয় নিয়েছে, তারাও এ রায়ের সুবিধা পাবেন।

পরে ব্যারিস্টার খায়রুল আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী ওয়ান ইলেভেনের সময় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকারও বেশি নেয়া হয়। এর মধ্যে আনুমানিক ১৫-১৬টি কোম্পানির পাওনা প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট, সেটিই আজ আপিল বিভাগ বহাল রাখলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী এম আমীর উল ইসলাম বলেন, ‘এতগুলো টাকা সরকার কীভাবে দেবে এটা চিন্তার বিষয়। রিভিউ হবে কিনা সরকার এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।’

তিনি বলেন, ‘১১টি আপিল খারিজ করে দেয়া হয়েছে। এই রায় ইতিহাসে নিশ্চয়ই পুনর্বিবেচিত হবে।’

আদালতে ব্যবসায়ীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম, ব্যারিস্টার খায়রুল আলম, অ্যাডভোকেট এমএ হান্নান প্রমুখ।

অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

আপিল শুনানিতে ব্যবসায়ীদের পক্ষে অংশ নেয়া আইনজীবীরা বলেন, রাষ্ট্র কোনো নাগরিকের কাছ থেকে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও জোর করে অর্থ নিতে পারে না। এটা সুশাসন ও আইনের শাসনের পরিপন্থী। যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়েছে সে টাকা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আয়কর নথিতে উল্লেখ রয়েছে।

তারা বলেন, কোনো নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আইন নির্ধারিত পদ্ধতিতে সরকার অর্থ নেয়ার সুযোগ রয়েছে। এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোনোভাবেই অর্থ আদায়ের সুযোগ নেই। ফলে বিগত সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যে টাকা আদায় করা হয়েছে, তা বেআইনিভাবেই করা হয়েছে।

জানা যায়, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০০৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত জরুরি অবস্থা চলাকালে একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা প্রায় ৪০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১ হাজার ২৩২ কোটি টাকা আদায় করেন। ওই টাকা দুই শতাধিক পে-অর্ডারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারের ০৯০০ নম্বর হিসাবে জমা হয়।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে নানা ধরনের আলোচনা হয়। কিন্তু ফেরত না পেয়ে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময়ে হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট ব্যবসায়ীদের পক্ষে রায় দেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথমে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন। ২০১৫ সালের ২ আগস্ট আপিল বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংককে আপিলের অনুমতি দেন। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক আপিল করেন।

যেসব কোম্পানির পাওনা টাকার বিষয়ে রায় হল, তার মধ্যে রয়েছে- এস আলম গ্রুপের সাতটি প্রতিষ্ঠানের ৬০ কোটি, দি কনসোলিডেটেড টি অ্যান্ড ল্যান্ডস কোম্পানি লিমিটেড এবং বারাউরা টি কোম্পানি লিমিটেডের ২৩৭ কোটি ৬৫ লাখ, মেঘনা সিমেন্টের ৫২ কোটি, বসুন্ধরা পেপার মিল ও ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টির ১৫ কোটি, ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্টের এক পরিচালকের ১৮৯ কোটি, ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডের ৯০ লাখ, ইউনিক সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজের ৭০ লাখ, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসর্টসের ১৭ কোটি ৫৫ লাখ, বোরাক রিয়েল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেডের ৭ কোটি ১০ লাখ, ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডকে ৩৫ কোটি এবং ও ইউনিক ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারের স্বত্বাধিকারীর ৬৫ লাখ টাকা।

হাইকোর্ট এসব কোম্পানির টাকা বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে নেয়া অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন। পাশাপাশি এসব টাকা তার মালিকদের ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

জানা যায়, ওইসব প্রতিষ্ঠান ছাড়াও তত্ত্বাবধায়ক আমলে বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের ১৯ কোটি ৪৫ লাখ, এবি ব্যাংকের ১৯০ কোটি, এবি ব্যাংক ফাউন্ডেশনের ৩২ কোটি, আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশনের ৩২ কোটি ৫০ লাখ, যমুনা গ্রুপের ৩০ কোটি, এমজিএইচ গ্রুপের ২৪ কোটি, এলিট পেইন্টের ২৫ কোটি ৪৪ লাখ, কবির স্টিল মিলসের ৭ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৩৯ কোটি, কনকর্ড রিয়েল এস্টেট থেকে ৭ কোটি, কনকর্ড ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে ৮ কোটি, স্বদেশ প্রপার্টিজের ৯ কোটি, পিংক সিটির ৬ কোটি ৪১ লাখ, আশিয়ান সিটি থেকে ১ কোটি, সাগুফতা হাউজিং থেকে ২ কোটি ৫০ লাখ, হোসাফ গ্রুপের ১৫ কোটি, পারটেক্স গ্রুপের ১৫ কোটি এবং ইসলাম গ্রুপ থেকে ৩৫ কোটি টাকা জোরজবরদস্তি করে নেয়া হয়।

এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে যাদের কাছ থেকে টাকা নেয়া হয় তাদের মধ্যে আছেন- ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টুর ২ কোটি ২০ লাখ টাকা, ব্যবসায়ী নূর আলীর ৪০ কোটি, ব্যবসায়ী রেজাউল করিমের কাছ থেকে ১৭ কোটি, আবু সুফিয়ানের ১৪ কোটি, শওকত আলী চৌধুরীর ৬ কোটি, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের কাছ থেকে ১৫ কোটি, বিএনপির সাবেক এমপি সালিমুল হক কামালের ২০ কোটি, ওয়াকিল আহমেদের ১৬ কোটি, তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের ২০ কোটি ৪১ লাখ ও ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান বর্তমান পরিচালক পারভীন হক সিকদারের কাছ থেকে ৩ কোটি টাকা। এসব ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের অনেকেই আইনের আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

বাংলা৭১নিউজ/এম

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com