বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১০:২১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

হাফ-পাস আছে হাফ-পাস নেই

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৯
  • ১৩৫ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: হাফ পাস, নাগরিক জীবনে শিক্ষার্থীদের রোজকার বিড়ম্বনার নাম। গণপরিবহনে যাতায়াতে অর্ধেক ভাড়া দিতে চান শিক্ষার্থীরা। কিন্তু না নিতে নারাজ বেশির ভাগ বাসের চালক-হেলপার। এই হাফ ভাড়া দেয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। সম্প্রতি হাফ ভাড়া নিয়ে বাসে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ওয়াসিমকে বাস থেকে ফেলে হত্যার ঘটনা ঘটে।

কয়েক বছর আগে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী সোনাপুর বাসস্ট্যান্ডে শ্রমিকদের আঘাতে মারাত্মক আহত হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।

এমন প্রচলনের পর ধীরে ধীরে বেসরকারি পরিবহনেও হাফ পাসের বন্দোবস্ত করা হয়। তবে এখন রাজধানীর প্রায় সব রুটে হাফ পাস না মানার কারণ হিসেবে পরিবহন মালিকরা বলছেন, বেসরকারি পরিবহন কোম্পানিগুলোর সাথে সরকারের এমন কোন লিখিত চুক্তি নেই। তবুও নায্য অধিকার হিসেবে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস ব্যবস্থা পুরোদমে চালু করার দাবি সাধারণ শিক্ষার্থীদের। উন্নত বিশ্বের যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকায় ছাত্রছাত্রীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা চালু রয়েছে। অথচ বাংলাদেশে বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনার মুখোমুখি হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। নানা সময় ঘটছে প্রাণহানিও। হাফ পাসের বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গেলে বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সরকারের কাছে নানা দাবিও তুলে ধরেন তারা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় বলেন, ঢাকার সকল রোডেই হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করা উচিত। সিটিংয়ের নামে প্রতিটি বাসে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া থেকে বঞ্চিত করা হয়।

অথচ নির্ধারিত সংখ্যক যাত্রীর চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী যাতায়াত করে এসব পরিবহনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র রিয়াজ বলেন, হাফ ভাড়া দিতে গেলে অনেক সময় বাকবিতণ্ডা হয়। হাতাহাতি ও মারারির ঘটনাও ঘটে। বিক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা গাড়িও ভাঙচুর করে। তবে গাড়ি ভাংচুর করা শিক্ষার্থীদের কাজ নয়। কিন্তু অধিকার আদায়ের জন্য অনেক সময় এরকম কাজ করতে হচ্ছে। সরকারি তিতুমীর কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তাসনিম  জানান, মনজিল (কামারপাড়া টু চিটাগাংরোড রুট) বাসে যাতায়াতের সময় হাফ ভাড়া দেয়া হলে অপমান করে তাকে বাস থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। একই কলেজের রসায়ন বিভাগের ছাত্রী সুমাইয়া শিমু জানান অনাবিল পরিবহন কোন শিক্ষার্থীর কাছ থেকেই হাফ পাশ কাটেন না। অপরদিকে ইডেন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তানিয়া জেরিন জানান, রজনীগন্ধা বাস শিক্ষার্থী দেখলে দরজা বন্ধ করে দেয়। ঢাকা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র নাঈম জানান, মালঞ্চ বাসটি হাফ পাশ কাটতে বললে মালিকের অযুহাত দেখান।

নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের লুবনা জানান, লাব্বাইক বাসের হেল্পার তার সাথে অশালীন আচরণ করে। হাফ ভাড়া নিয়ে মনজিল (গাড়ীনং ৯৬৩৮) বাসের চালক স্বপন এবং তার হেল্পারকে প্রশ্ন করা হলে তারা বলেন, হাফ পাশ শুধু স্টাফ , পুলিশ এবং প্রতিবন্ধীর জন্য। কোম্পানি ছাত্রছাত্রীদের জন্য কোন পাশ রাখেনি। অপরদিকে চেকার ও সমভাবে কোম্পনির উপর দায় চাপিয়ে যায়। বিকাশ, আলিফ, লাব্বাইক পরিবহনের হেলপার ও চালকরাও একই কায়দায় কোম্পানির অজুহাত দেখান। এসব বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি  বলেন, বেসরকারি বাসে ছাত্রছাত্রীদের জন্য পাশ নেই, পাশ সরকারি বাসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের উপ-কমিশনার এম মুরাদ আলী হাফ পাস বাস্তবায়নের বিষয়ে হতাশার কথা জানিয়ে বলেন, হাফপাশ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার। অনেক চেষ্টা করেও বাংলাদেশে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।

এদিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী শিক্ষার্থীদের হাফভাড়া নিশ্চিতে উদ্যোগ নিবেন বলে সম্প্রতি ঘোষণা দেন। তার উদ্যোগের প্রেক্ষিতে দ্রুত বিষয়টির সুরাহা করতে আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের একটি অফিসিয়াল গ্রুপের মাধ্যমে বিভিন্ন পরিবহনের বাস নিয়ে অভিযোগ করেন। যেসব পরিবহনে হাফ পাস নেয়া হয় না এমন কিছু পরিবহনের বিষয়ে অভিযোগে করেছেন শিক্ষার্থীরা। এগুলো হলো: মনজিল (কামারপাড়া টু চিটাগাংরোড), লাব্বাইক (সাইবোর্ড টু জিরানী), ট্রান্সসিলভা (যাত্রাবাড়ি টু মিরপুর), রজনীগন্ধা (চিটাগাংরোড টু মোহাম্মদপুর), অনাবিল (সাইনবোর্ড টু গাজীপুর), রবরব (গাবতলী ট ডেমরা), ছালছাবিল (সদরঘাট টু গাজীপুর), রাইদা (সদরঘাট টু দিয়াবাড়ি), মালঞ্চ (গুলিস্তান টু মোহাম্মদপুর), গাজীপুরপরিবহন (গুলিস্তান টু গাজীপুর), স্মার্ট উইনার (আজিমপুর টু কুড়িল)।

এছাড়া উৎসব, কোমল, দেওয়ান, ভিআইপি, বসুমতি, ৭১ পরিবহন, বিকাশ, বন্ধন, ১৩ নম্বর লোকাল, মৌমিতা পরিবহনসহ বেশ কিছু পরিবহন শিক্ষার্থীদের থেকে হাফ পাস নেয়ার বিষয়ে অনীহা প্রকাশ করে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব পরিবহন ছাত্রছাত্রীদের হাফভাড়া নিয়ে লাঞ্চিত ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। তবে সরকার হস্তক্ষেপ নিলে দ্রুতই এসব সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করে শিক্ষার্থীরা।

বাংলা৭১নিউজ/এসকে

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com