রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ০২:২৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

সুনামগঞ্জের সবকটি উপজেলা প্লাবিত

বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ১৭ জুন, ২০২২
  • ১১২ বার পড়া হয়েছে

সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যার পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এই বন্যা অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। টানা কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের পানিতে জেলার কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। জেলার সবকয়টি উপজেলার গ্রামের প্রতিটি ঘরে এখন হাঁটু থেকে কোমর পানি। বৃহস্পতিবার রাত থেকে গ্রামের নারী পুরুষ, শিশু বৃদ্ধরা পানি বন্দি হয়ে আটকা পড়ে রয়েছেন। দ্রুত তাদের উদ্ধার করে উঁচু স্হান বা আশ্রয় কেন্দ্রে না দিলে বড় দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভারী বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জের বন্যা চরম অবনতি হয়েছে । জেলা ও উপজেলার প্রতিটি  ঘর বাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। পানির উচ্চতা ক্রমশ বাড়ছে। ফলে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

এ অবস্থায় বন্যাকবলিতদের উদ্ধারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও জরুরি অবস্থা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন অনেকে।

বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের বন্যার পানির উচ্চতা সুনামগঞ্জের সবচেয়ে উঁচু স্হান ও নতুন নতুন এলাকায় উঠেছে । গত দুইদিন ধরে সুনামগঞ্জ সিলেট সড়কে এবং উপজেলার সঙ্গে জেলার সদরের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় সড়কের এপাড়ে ওপারে কয়েক শতাধিক পন্যবাহী গাড়ি আটকা পড়েছে।

জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোদাচ্ছির আলম সবুল বলেছেন, এবার যে পরিমান পানি হয়েছে ২০০৪ সালের বন্যায় এতো পানি হয়নি। স্কুলে আসার সকল রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সুনামগঞ্জ জেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের সভাপতি সেলিম আহমদ জরুরি ভিত্তিতে বন্যার পানিতে আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধারের জন্য প্রাকৃতিক দূর্যোগ ঘোষণা দিয়ে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক উদ্ধারের জন্য জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি ।

গোলাবাড়ী গ্রামের খসরু মিয়া  জানিয়েছেন, একদিকে বন্যার পানি হু হু করে বাড়ছে। অন্যদিকে হাওরের প্রবল ঢেউয়ের আঘাতর বাড়ি ঘর তছনছ হয়ে যাচ্ছে।

মাও.নুরুল ইসলাম জানান, বন্যার পানি ঘরে ঢুকে হাঁটু পানি। পানির মধ্যেই সরারাত ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে পার করেছি। গরুগুলো পানির মধ্যেই দাঁড়িয়ে আছে। এগুলো উদ্ধার করে কোথাও নিয়ে যাবো সে সুযোগটুকু পাচ্ছি না।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হোসেন খান বলেন,গত ২৪ ঘন্টা ধরে একনাগাড়ে বৃষ্টি, বাতাস ও বজ্রপাতের বিকট শব্দ হচ্ছে। এর অনেক বন্যা হয়েছে, তবে এবারের মতো বন্যা এর আগে কখনও দেখিনি। 
বালিয়াঘাট গ্রামের ইসলাম উদ্দিন জানান, বন্যার পানিতে রান্নার ঘর সহ বসত ঘর ডুবে গেছে। গত রাত থেকে চুলায় আগুন নেই। কিছু শুকনো খাবার ছিল তা দিয়ে বাচ্চাদের খেতে দিয়েছেন। তারা না খেয়ে এখনও পানি বন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

এইদিকে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে সারাদেশের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত দুইদিন ধরে জেলা সদরের সঙ্গে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে ।

তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগ সহ কয়েকটি হাসপাতালের নীচতলা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। গত দুইদিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর, বিশ্বম্ভপুর, জামালগঞ্জ, মধ্যেনগর সহ সব কয়টি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ এখন পানি বন্দি হয়ে রয়েছেন।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম জানান, সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ২০২০ সালের বড় বন্যার সময় পানির উচ্চতা ছিল বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার উপরে। বৃহস্পতিবার সেটি অতিক্রম করেছে। বিপদসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে সুরমার পানি। মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জিতেও গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড পরিমাণ ৬৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সুনামগঞ্জে হয়েছে ১৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন, আগামী ১০ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে দেখা গেছে, একইভাবে চারদিন বৃষ্টি হবে। এ কারণে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতিও হতে পারে।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন, বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা অতিতের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বন্যা তথ্য কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ছাতকে ১৭ টি, দোয়ারাবাজারে ১৬টি এবং সুনামগঞ্জ সদরে ১০ টি তাহিরপুরে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বন্যা দুর্গদের মধ্যে বাড়িঘরে থাকার অনুপযোগী সকলকেই আশ্রয়কেন্দ্রে আনা, শুকনো খাবারসহ সাময়িক খাদ্য সহায়তা দিয়ে সহায়তায় করবে প্রশাসন। দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকলের সহযোগিতা ছেয়েছেন তিনি।

বাংলা৭১নিউজ/এবি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com