বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১০:৩৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

লকডাউনের শ্রমিক সংকট: হাওড়ে ধান কাটা নিয়ে সংশয়

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ৭ এপ্রিল, ২০২০
  • ৯৯ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: পাহাড়ি ঢল ও আগাম বন্যার কারণে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই কেটে নিতে হয় হাওড় অঞ্চলে আবাদকৃত বোরো ধান। এজন্য ধান কাটার কাজে আশপাশের জেলাগুলো থেকে হাওড়ে নিয়ে আসা হয় প্রচুর মৌসুমি শ্রমিক। কিন্তু নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার আসতে পারছেন না এসব শ্রমিক। অন্যদিকে রয়েছে উন্নত কৃষি যন্ত্রপাতিরও অভাব। সব মিলিয়ে হাওড় অঞ্চলে বোরো ধান কাটা নিয়ে এবার দেখা দিয়েছে সংশয়।

চলতি বোরো মৌসুমে দেশে ৪১ লাখ ২৮ হাজার ৫৪৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে, যার প্রায় ২৩ শতাংশই হয়েছে হাওড় অঞ্চল হিসেবে পরিচিত সাত জেলা সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। এসব অঞ্চলে এরই মধ্যে হাইব্রিড জাতের কিছু ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে।পুরোদমে বোরো ধান কাটা শুরু হয় ১৫ এপ্রিলের পর থেকে। যদিও এ সময়েই সিলেট অঞ্চলে শুরু হয় বৃষ্টি। বৃষ্টি আর ঢলের কারণে হাওড়ে দেখা দেয় আগাম বন্যা।

কোনো কোনো বছর মার্চেই অকালবন্যা দেখা দেয়। এবার মার্চে বৃষ্টি না হলেও এপ্রিলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ফলে রয়েছে অকালবন্যার শঙ্কাও। অন্যান্য বছর বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষায় অধিক শ্রমিক দিয়ে তড়িঘড়ি করেই ধান কাটিয়ে নিলেও এবার সেক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চলমান লকডাউন।

জানা গেছে, প্রতি বছর ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও উত্তরাঞ্চল থেকে প্রচুর মৌসুমি শ্রমিক হাওড়াঞ্চলে যান ধান কাটতে।ব্যাপারী বা ঠিকাদারের মাধ্যমে আনা হয় এসব শ্রমিক। কিন্তু এবার নভেল করোনাভাইরাসের শঙ্কায় ধান কাটতে আসতে পারছেন না তারা। উচ্চমজুরি দিয়েও শ্রমিক মিলছে না।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ এ বিষয়ে বলেন, শ্রমিক সংকট নিয়ে গত রোববার জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে তুলে ধরেছি। আশা করছি শিগগিরই সমাধান পাব।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) সূত্রে জানা গেছে, হাওড় অঞ্চলের সাত জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৯ লাখ ৩৬ হাজার ১০১ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ধান আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭২১ হেক্টর, উফশী ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬৪৫ ও স্থানীয় জাতের ধান ১১ হাজার ৭৩৫ হেক্টর সবচেয়ে বেশি আবাদ হয় সুনামগঞ্জ জেলায়। জেলাটিতে ২ লাখ ১৯ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে এবার। এছাড়া নেত্রকোনায় ১ লাখ ৮৩ হাজার ৮৭০ হেক্টর, কিশোরগঞ্জে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৬৭৬ হেক্টর, হবিগঞ্জে ১ লাখ ২০ হাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১ লাখ ১১ হাজার ৫৫৫, সিলেটে ৮০ হাজার ৫০ ও মৌলভীবাজার জেলায় ৫৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে এবার। 

দুই সপ্তাহের মধ্যে শুরু হবে এসব অঞ্চলে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। ধান কাটতে প্রচুর শ্রমিকের পাশাপাশি যন্ত্রের প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে হাওড়াঞ্চলে ৩৬২টি কম্বাইন হারভেস্টর ও ১ হাজার ৫৬টি রিপার সচল রয়েছে। এছাড়াও পুরনো মেরামতযোগ্য ২২০টি কম্বাইন হারভেস্টর ও ৪৮৭টি রিপার মেশিন রয়েছে, প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। তার ওপর এবার দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। এ অবস্থায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলে এলে মাঠের ধান মাঠেই রয়ে যাবে। 

হাওড় অঞ্চলে ধান কাটা তৈরি হওয়া সংকট প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সুনামগঞ্জের স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস বোরো ধান। ধান কাটা ও বিপণন উপযোগী করে তুলতে প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন রয়েছে। যন্ত্র ও শ্রমিক পাওয়া না গেলে কৃষক ধান কাটতে পারবেন না। এটা উপলব্ধি করেই জনপ্রতিনিধিরা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কাজ শুরু করেছেন।

এরই মধ্যে কৃষি যন্ত্রপাতির বিষয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় তাদের যন্ত্র এ অঞ্চলে নিয়ে যাবে। তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবে কোম্পানিগুলো। কৃষকদের স্বল্প সুদে ঋণ দিয়ে যন্ত্র ক্রয়ের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনাও হাতে নেয়া হয়েছে। শ্রমিকদের চলাচলের বিষয়টি সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কীভাবে করা যায়, সেটি নিয়েও আমরা কাজ করছি।

এদিকে নভেল করোনাভাইরাসের কারণে শ্রমিকের অভাব দেখা দেয়ায় হাওড়ের সাত জেলায় ধান কাটার জন্য জরুরি ভিত্তিতে নতুন ১৮০টি কম্বাইন হারভেস্টর ও ১৩৭টি রিপার বরাদ্দ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

গতকাল মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিচালন বাজেটের আওতায় কৃষি যন্ত্রপাতিতে উন্নয়ন সহায়তা প্রদান সংক্রান্ত সমন্বয় কমিটির’ সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। 

এ বিষয়ে কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, হাওড়ের বোরো ধান কাটার জন্য আমরা জরুরি ভিত্তিতে এসব যন্ত্রপাতি বরাদ্দ করেছি। আমরা মনে করছি, এ অঞ্চলের ধান কাটায় আর কোনো সমস্যা হবে না। কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরিচালন বাজেটের আওতায় ৫০ শতাংশ ভর্তুকিতে ১০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহের কার্যক্রম চলছে।

আগামী জুনের মধ্যে সারা দেশের ৬৪টি জেলায় তিন ক্যাটাগরির কৃষি যন্ত্রপাতি বিশেষ করে কম্বাইন হারভেস্টর, রিপার ও রাইস ট্রান্সপ্লান্টার সরবরাহ করা হবে। এসব আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ ও ব্যবহার বাড়লে কৃষি উৎপাদন ব্যয় হ্রাস পাবে, ফসলের উৎপাদনশীলতা বাড়বে ও ফসলের অপচয় রোধ হবে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে কৃষি অধিকতর লাভবান হবে ও কৃষির বাণিজ্যিকীকরণ ঘটবে।

বাংলা৭১নিউজ/তথ্যসূত্র: বণিক বার্তা

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com