হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের বান্ধবী ফারজানা সাকি ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ডেপুটি কমিশনার মো. নাজমুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (২ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন (গালিব) এর আদালতে ডা. জোবায়ের আহমেদ এ মামলার আবেদন করেন। এদিন আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সংস্থাকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ডা. জোবায়ের আহমেদ ২০২০ সালের ১০ আগস্ট থেকে কুমিল্লা জেলার বড়ুরা থানায় তার প্রতিষ্ঠান ডা. জোবায়ের মেডিকেয়ার অ্যান্ড প্যাথলজি সেন্টারের মাধ্যমে মানুষকে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন।
গরিব মানুষকে ফ্রি চিকিৎসা দিয়ে এলাকায় গরিবের ডাক্তার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। করোনাকালীন করোনা রোগীদের জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে ডেডিকেটেড কোভিড ইউনিট গড়ে হাজারো করোনা আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সারা দেশের মানুষের ভালোবাসা ও প্রশংসায় সিক্ত হন। ফারজানা সাকি ব্যক্তিগত আক্রোশে সিটিটিসির নাজমুল ইসলামের সঙ্গে যোগসাজশ করে বাদীকে ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র করেন।
নাজমুল ইসলাম ২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর বাদীকে তার অফিসে দেখা করার জন্য আসতে বলেন। তবে তিনি না আসায় বারবার তাকে নক করে আসতে বলেন এবং বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দেন। উপায়ান্তর না দেখে জোবায়ের আহমেদ ১৫ ডিসেম্বর নাজমুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে আসেন।
সেখানে যাওয়ার পর দেখতে পান ফারজানা সাকি আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত রয়েছেন। জোবায়ের আহমেদ তাকে ডেকে আনার কারণ জানতে চান। তখন নাজমুল ইসলাম বাদীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। ফারজানা সাকি মারের দৃশ্য ভিডিও করেন। পরে তিনি চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
নাজমুল ইসলাম ১৬ ডিসেম্বর জোবায়ের আহমেদকে ফোন করে জানতে চান, তিনি ঠিক আছেন কি না। তখন বাদী বলেন আপনি আমাকে আপনার অফিসে বিনা কারণে ডেকে নিয়ে অপমান ও লাঞ্ছিত করলেন এবং আমাকে ফিজিক্যালি অ্যাসল্ট করলেন। আমার কি অপরাধ ছিল? তখন নাজমুল ইসলাম তাকে মামলা দিয়ে আটকে সাইজ করার হুমকি দেন।
মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, নাজমুল ইসলাম পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে ফারজানা খান নামের এক মহিলার দ্বারা জোবায়ের আহমেদের বিরুদ্ধে রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা দায়ের করান।
পরে ২০২৩ সালের ১৯ জানুয়ারি জোবায়ের আহমেদকে কুমিল্লা থেকে ঢাকায় সামনাসামনি কথা বলার জন্য ডেকে এনে ধানমন্ডি ২৭ নাম্বারে অবস্থিত গার্ডেন বারবিকিউ এন্ড ক্যাফে থেকে গ্রেপ্তার করান। পরে তাকে হেফাজতে নিয়ে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন।
পরে তাকে রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে হাজির করা হয়। আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ২০২৩ সালের ৩ এপ্রিল জামিন পান ডা. জোবায়ের আহমেদ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ