রবিবার, ১১ মে ২০২৫, ০৪:২৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

মানিকগঞ্জে বাড়ছে গাজর চাষ, মৌসুমে ৫০ কোটি টাকার বিক্রির সম্ভাবনা

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি:
  • আপলোড সময় বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ২৬ বার পড়া হয়েছে

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় প্রতিবছরই বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় গাজর। রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের অঞ্চলের সঙ্গে যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় এখানকার গাজরের চাহিদাও বেশি। খেতে মিষ্টি হওয়ায় দেশজুড়ে চাহিদার পাশাপাশি সুনামও রয়েছে। বেলে দোঁআশ মাটিতে গাজরের ফলনও বেশ ভালো হয়।

ফলে স্বল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে গাজরের আবাদ। আর চলতি মৌসুমে গাজরচাষিরা ৫০ কোটি টাকার গাজর বিক্রি করতে পারবেন বলে জানিয়েছে জেলার কৃষি অধিদপ্তর।

জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মৌসুমের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে গাজর তোলা শুরু করে কৃষকেরা। যা মার্চ মাস পর্যন্ত চলে। গাজর পরিপক্ব হতে প্রায় তিন মাস সময় লাগে।

গত বছর ৯৫০ হেক্টর জমিতে গাজরের আবাদ হলেও চলতি বছরে বেড়েছ ১০ হেক্টর, এ বছর ৯৬০ হেক্টর জমিতে গাজর আবাদ করছে কৃষকেরা। তবে এর মধ্যে ৯৫০ হেক্টরই সিংগাইর উপজেলায়। এই উপজেলায় উৎপাদিত গাজর দিয়ে দেশের চাহিদার ৪০ শতাংশ মেটানো সম্ভব বলে জানায় কৃষি অফিস।

সিংগাইর উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, সিংগাইর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই কৃষকেরা গাজরের আবাদ করে থাকে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গাজর আবাদ করা হয় জয়মন্টপ ইউনিয়নের দুর্গাপুর, চর দুর্গাপুর, ভাকুম, চর ভাকুম, পূর্ব ভাকুম, পশ্চিম ভাকুম গ্রামে। লাভজনক হওয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে গাজরের চাষ। গাজরের গ্রাম হিসেবেই এসব গ্রামের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোরে জমি থেকে গাজর তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষি শ্রমিকরা। দল বেঁধে গাজর তোলার কাজ করছেন তারা। শ্রমিকদের সঙ্গে গাজর ব্যবসায়ী ও কৃষকও রয়েছেন ফসলের মাঠে।

গাজর তুলে সারিবদ্ধভাবে জমিতে ফেলে রাখা হয়, এরপর বস্তায় ভরে গাজর পরিষ্কার করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় মিলে (যেখানে গাজর পরিষ্কার করা হয়)। সিংগাইর উপজেলার জয়পমন্টপ ইউনিয়নের পূর্ব ভাকুম গ্রামের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে দেখা মিলবে গাজর তোলার এমন দৃশ্য।

সিংগাইর উপজেলার চর আজিমপুর গ্রামের কৃষক বাবুল হোসেন। প্রতিবছরের মতো এবারও তিনি সাত বিঘা জমিতে গাজর চাষ করেছেন। আলাপকালে তিনি বলেন, এ বছর গাজর চাষে সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। তবে আমি গাজর বিক্রি করেছি সাত লাখ টাকার মতো। এতে চাষের খরচ বাদে বিঘা প্রতি ৪০ হাজার টাকার মতো লাভ রয়েছে। অনেক চাষিরাই গাজর চাষ করে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হয়েছেন।

ভাকুম এলাকার কৃষক জয়নাল মিয়া বলেন, বিশ বছর ধরে গাজর চাষ করছি। নিজের জমির পাশাপাশি অন্যের জমি ভাড়া নিয়েও গাজর চাষ করেছি। আগে নিজেরাই বাজারজাত করতাম, কিন্তু তাতে অনেক ঝামেলা হয় এজন্য কয়েক বছর ধরে ক্ষেতেই ব্যবসায়ীদের কাছে গাজর বিক্রি করে দিচ্ছি।

এবার প্রায় আট বিঘা জমিতে গাজর চাষ করেছি, এতে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তবে গাজর পরিপক্ক হওয়ার আগেই ক্ষেত থেকে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি।

গাজর ব্যবসায়ী সিদ্দিক বলেন, দুই যুগের বেশি সময় ধরে গাজরের ব্যবসা করি। শুরুর দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে গাজর কিনে নোয়াখালী ও চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে বিক্রি করতাম।

তাতে খরচা বেশি আর লাভটাও কম হতো। তবে গত ১০ বছর ধরে সিংগাইরের কৃষকদের কাছে থেকে ক্ষেত থেকে সরাসরি গাজর কিনছি। পরিবহন খরচ ও শ্রমিকের মজুরি দিন দিন বেড়ে যাওয়া লাভের পরিমাণ কম হচ্ছে।

শ্রমিক মহিবুল্লা বলেন, খোলা তৈরি করে কয়েকজন পা দিয়ে ঘষে ঘষে গাজর পরিষ্কার করতাম। কিন্তু এবছর মেশিন দিয়ে গাজর পরিষ্কার করা হচ্ছে। পা দিয়ে যেখানে ৮০ কেজির ১২০ বস্তা গাজর পরিষ্কার করা যেত, এখন মেশিনের সহায়তায় ৮০ কেজির ৩০০-৪০০ বস্তা পরিষ্কার করা যায়। আমাদের দলে ১০ জন আছে, ৮০ কেজির এক বস্তা গাজর ধুয়ে পরিষ্কার করে বস্তাবন্দি করা পর্যন্ত মজুরি ১২০ টাকা করে পাই। দিনে গড়ে ১০০-১১০ বস্তার কাজ করতে পারি এতে আয় রোজগার ভালোই হয়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. রবীআহ নূর আহমেদ বলেন, মানিকগঞ্জের সিংগাইরের গাজরের সুনাম রয়েছে। চলতি মৌসুমের অক্টোবরের শেষের দিকে গাজরের আবাদ শুরু করে কৃষকেরা। আর জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত চলে গাজর তোলার কাজ।

গত বছর ৯৫০ হেক্টর জমিতে গাজরের আবাদ হয়েছিল। তবে চলতি বছরে তা বেড়ে ৯৬০ হেক্টর হয়েছে। এর মধ্যে ৯৫০ হেক্টরই সিংগাইরের জমি। লাভজনক হওয়ায় দিন দিন গাজর চাষে ঝুঁকছে এখানকার কৃষকেরা।

এই উপজেলার উৎপাদিত গাজর দিয়ে দেশের চাহিদার ৪০ শতাংশ মেটানো সম্ভব আর বাজারদর ঠিক থাকলে উপজেলার কৃষকেরা ৫০ কোটি টাকার গাজর বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি জানান।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com