বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

মন শুধু মন ছুঁয়েছে

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ১০১ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,খায়রুন্নেসা: -আরে আপনি আমার পিছন পিছন আসছেন কেন?

-মিস, এটা রাস্তা। আর এখান দিয়ে তো যে কেউ চলাচল করতে পারে তাই না!

-সেরকম কোনো ব্যাপার হলে আমি কিন্তু বলতাম না। আমি বেশ কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করেছি আপনি আমার পিছু নেন। আপনার জন্য আমি এখন সরাসরি বাড়ি ফিরতে পারছি না। কেন এমন করছেন, বলুন?

-প্লিজ, রাগ করবেন না। আসলে আপনাকে আমার খুব পরিচিত মানুষের মতো লাগে। প্রথমে তো ভেবেছিলাম আপনিই সে-ই। তাই তো কয়েকদিন আপনার পিছু পিছু এসেছি সিওর হতে। আপনি আসলেই আমার প্রিয় মানুষ কিনা।

-বাঃ ফাইন, আপনি তো দারুণ গল্প বানাতে পারেন! শুনুন, আজকেই লাস্ট ওয়ানিং দিলাম। এরকম আরেক দিন দেখলেই কিন্তু খবর করে দেব। এমন কাজ করবো না সোজা শ্বশুরবাড়ি। ঠিক আছে…।

মেয়েটা চলে যাওয়ার পর কিছুখন চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে শামিম। কি সাহসী মেয়েরে বাবা! আর এত দ্রুত কথা বলে যে কাউকে কিছু বলার সুযোগই দিতে চায়। কিন্তু মেয়েটার হুমকিতে শামিম কিছুটা ভয় পেলেও সেসব ছাপিয়ে এখন কেবলই মুগ্ধতা। না, এই মেয়ের পিছু তো সে কিছুতেই ছাড়বে না।

মেধাকে নিয়ে বরাবরই খুব উদ্বেগে থাকেন তার মা ফারজানা। যেই ডাকাবুকো মেয়ে, কবে যে কোথায় কার সঙ্গে লেগে যায়। এখন তো সময় ভালো না, কিন্তু মেয়েতে তো বুঝিয়ে বলেও কাজ হয় না। অন্যায় দেখলেই রুখে দাঁড়াবেই, তা সেটা যখন আর যেখানেই হউক না কেন। আজও হয়তো কোনো একটা ঝামেলা পাকিয়েছে। নইলে এত দেরি হচ্ছে কেন। এরই মধ্যে দুবার ফোন করেছেন, কিন্তু ধরেনি। এখন আর কি করতে পারেন ফারজানা ভেবে পাচ্ছেন না। বারবার ব্যালকনিতে গিয়ে পথ দেখছেন, না মেয়ের কেনো খবর নেই। এ অবস্থায় কলিং বেজে উঠতেই ছুটে যান ফারজানা। যা ভেবেছেন তাই। মেয়ের চোখমুখ লাল, যেন ফেটে রক্ত বেরোবে।

-কি রে আজ আবার কার সঙ্গে লাগলি? কত দিন না বারণ করেছি রাস্তায় মাথা নিচু করে হাঁটবি। কে কি করছে না করছে, দেখার দরকার নাই।

-মা, কথা না বলে খাবার দাও, খুব খিদে পেয়েছে। মাকে আর কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ব্রাগ রেখে ওয়াশরুমে ঢুকে জেবা।

দিন কয়েক পরের কথা। রাতে মেয়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে ফারজানা বলেন,‘মা রে এত রাগ কেন তোর? রাগ থেকে কত কিছু হয়ে যায় জানিস তো!

-ভূমিকা না করে যা বলবে বলো।

-আরে সেদিন তোর কমপ্লেন পেয়ে যে ছেলেটাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে, সে তো সুস্থ নয়। আসলে মাথা ঠিক নেই।

মায়ের কথা শুনে শোয়া থেকে উঠে বসে মেধা, সেদিনের কথা তুমি জানলে কি করে? আমি তো কিছু বলিনি।

ওইদিনের ওয়ানিংয়ের পর আরো দুদিন ছেলেটা মেধার পিছু নিয়েছিলো। চুপচাপ দেখে গেছে মেধা। ছেলেটাকে কিছু বলেনি। কেবল রমনা থানায় গিয়ে কমপ্লেন করেছে, ইভটিজিং কমপ্লেন। ব্যস তৃতীয় দিন মেধার পিছু নিতেই পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যায়। কিন্তু মায়ের কাছে সব শোনার পর অনুশোচনাই হয মেধার। পরদিন বাড়ি ফেরার পথে থানায় গিয়ে অভিযোগ তুলে নেয় সে।

সন্ধ্যার পর মেধাদের বাসায় আসেন এক অপরিচিত মধ্যবয়সী নারী। মেধার মা তাকে আন্তরিকতার সঙ্গে স্বাগত জানান।

-আরে আপা আসুন। মেধা, উনি তোর সঙ্গে কথা বলতেই এত দূর থেকে এসেছেন।

মেধাকে দেখেই দু হাতে জড়িয়ে ধরেন ওই নারী।

-মা, তোমাকে যে কি বলে ধন্যবাদ দিব! তুমি আমার শামিমের জীবন বাঁচিয়েছ।

মেধার খুব অস্বস্তি হতে থাকে। সে ওই নারীর বাহুবন্ধন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়।

-আসলে তুমি বিশ্বাস করতে চাইবে কিনা জানি না। তাহলে একটা ছবি দেখ।

ছবিটা হাতে নিয়ে চমকে যায় মেধা। ছবির মেয়েটা একটা গোলাপ বাগানে দাঁড়িয়ে আছে। নীল একটা শাড়ি পরা, চুলগুলে খোলা। কী সুন্দর দেখতে! ঠিক যেন মেধাই। তবে এমন কোনো স্থানে তো ও কখনও যায়নি ও।

-কি অবাক হলে তো? ওর নাম স্বপ্ন, ঢাবিতে পড়তো। শামিম পাবলিক এড আর ও ইতিহাসে। কীভাবে যেন দুজনের ভাব হয়ে যায়। রপর পাস করে বিসিএস দিয়ে সরকারি চাকরিতে ঢুকলো শামিম। মেয়েটা তখনও ঢাবিতেই পড়তো। দুজনের বিয়ে ঠিক হলো, ১৪ ফেব্রুয়রি। হ্যা, ভালোবাসা দিবসেই ঠিক হয়েছিলো ওদের বিয়েটা। সেই দিনটার কথা এখনও মনে আছে আমার। আট ফেব্রুয়ারি বিকেলে দুজনে গেলো মার্কেটে। স্বপ্নার জন্য বিয়ের শাড়ি কিনতে। শাড়িটারি কেনা শেষে গাউছিয়া মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলো ওরা। কারণ স্বপ্না ভেলপুরি খাবে। অঅচ্ছা বলতো মা, যার দুদিন পর বিয়ে সে কি এভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভেলপুরি খায়! কিন্তু মেয়েটা তো এরকম পাগলিই ছিলো। তো, শামিম বলেছিল, আরে, এটা কি একটা সময় হলো, পরে খেও।

-না, আজকেই খাব। কারণ এটাই হবে মিস স্বপ্না হিসাবে আমার শেষ ভেলপুরি খাওয়া। এরপর তো অনেক দিন ভেলপুরি খেতে পারবো। কিন্তু তখনকার আমি তো আর আজকের আমি থাকবো না। তখন আমি হবো মিসেস শামিম স্বপ্না। দু টো স্বপ্না কি এক হয় বলো তো!

-এরপর আর শমিম না করতে পারেনি। স্বপ্না ভেলপুরি খাচ্ছে আর শামিম পাশে দাঁড়িয়ে আছে। আর সে সময়ই ঘটলো ঘটনাটা।

মহিলার কথা রুদ্ধশ্বাসে শুনছিলো মেধা। মহিলা থামতেই মেধার প্রশ্ন।

-কি ঘটনা আন্টি?

-একটা ট্যাক্সি এসে স্বপ্নাকে গিলে খেলো। এরপর সব শেষ। আমার শামিম আর স্বাভাবিক হতে পারলো না। চাকরিটাও গেলো ছেলেটার। মা আমি মাঝে মাঝে আসবো তোমার কাছে। রাগ করবে নাতো?

-রাগ করার কি আছে, আপনি অবশ্যই আসবেন। প্রয়োজনে আপনার ছেলেকে নিয়ে আসবেন। মেধার হয়ে উত্তর দেন ওর মা ফারজানা।

-না আপা, আমি কিন্তু শামিমের মা নই, মেধার মা। দুঃখিত প্রথমেই নিজের পরিচয়টা দেয়া উচিত ছিলো।

-সরি আসলে আমরা বুঝতে পারিনি। আপনি যেভাবে ছেলেটার জন্য ছুটে এলেন…।

-আজকে আমার মেয়ের জন্যই তো ছেলেটার এ অবস্থা। তাই শামিমের জেলে যাওয়ার কথা শুনে ঠিক থাকেতে পারিনি। ছুটে এসেছি আপনার কাছে। আপনার মেয়েকে দেখে মনে হচ্ছে যেন আমার স্বপ্নকেই খুঁজে পেয়েছি। আপনারা মাইন্ড করলেও আমি কিন্তু আসবো মাঝে মাঝে, আমার মেয়েটাকে দেখতে।

চলবে…

বাংলা৭১নিউজ/সি এইস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com