মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ০৬:১৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

ভোগ্যপণ্যে পড়তে শুরু করেছে বাজেটের প্রভাব

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শনিবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৯
  • ৭৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: বোরো মৌসুমে ধানের দরপতন ঠেকাতে চাল আমদানিতে শুল্ক দ্বিগুণ করে সরকার। এর পর পরই বাজেট প্রস্তাবে অতি প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের আমদানিতে আরোপ করা হয় অতিরিক্ত শুল্ক। সম্প্রতি বাজেটের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ভোগ্যপণ্যের বাজারে। আরেক দফায় বাড়তে শুরু করেছে পণ্যের দাম।

চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর পরই পাইকারি বাজারে ভোজ্যতেল, চিনিসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। বাজেট পাসের পরও অব্যাহত ছিল দামের ঊর্ধ্বমুখিতা। বর্ষা মৌসুমে বন্যা পরিস্থিতিতে বিক্রয়ে মন্দার ফলে বাজার কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। তবে কোরবানির ঈদের কয়েক দিন আগে থেকেই ফের অস্থির হয়ে ওঠে ভোগ্যপণ্যের বাজার। ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্য আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব পড়তে শুরু করায় বাজারে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে অস্থিরতার ফলে ভোগ্যপণ্যের বুকিং দরের ওঠানামাও পণ্যের দাম বাড়ার একটি কারণ।

সম্প্রতি তৃতীয় দফায় বেড়েছে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম। এর প্রভাব আনুষঙ্গিক অন্যান্য পণ্যেও পড়েছে। পাল্লা দিয়ে বাড়তে শুরু করে আদা, রসুন ও গরম মসলার দাম।

ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী একাধিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, ভোজ্যতেল আমদানিতে আগে ১৫ শতাংশ ভ্যাট পরিশোধ করতে হতো। গত দেড় দশক ধরে অতি প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য হিসেবে ভোজ্যতেল আমদানির ক্ষেত্রে অগ্রিম আয়কর (এআইটি) নেয়া হতো না। কিন্তু এবারের বাজেটে ৫ শতাংশ অগ্রিম কর (এটি) আরোপের পাশাপাশি ৫ শতাংশ এআইটি আরোপ করা হয়। অর্থাৎ ভোজ্যতেল আমদানিতে সর্বমোট ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে সরকার। এর প্রভাবে পণ্যটির দাম বাড়তে শুরু করেছে।

বাজেট ঘোষণার আগে শুল্ক বৃদ্ধির গুজবে অনেক ব্যবসায়ী ভোজ্যতেল আমদানি কমিয়ে এনেছিলেন। বাজেটে কী ঘোষণা আসতে পারে কিংবা আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়বে না কমবে, সেটির দিকেই দৃষ্টি ছিল দেশের আমদানিকারকদের। তবে বাজেটের পর এসআরও জারি হলে এখনই নতুন করে ভোজ্যতেল আমদানি শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্যমতে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে দেশে ভোগ্যপণ্য আমদানি হয়েছিল ৫৮ লাখ ৬৭ হাজার টন। যদিও ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি হয়েছে ৫৮ লাখ ৪৩ হাজার টন। এছাড়া একই অর্থবছরের শেষ মাস অর্থাৎ ২০১৯ সালের জুনে আমদানি হয়েছে ৬ লাখ ২৭ হাজার টন ভোগ্যপণ্য। এর আগে প্রতি মাসে গড়ে সাড়ে ৬ লাখ টন করে আমদানি হলেও শেষ দিকে এসে ভোগ্যপণ্য আমদানির পরিমাণ কিছুটা কমে আসে। মূলত বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ ভোগ্যপণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের কারণে আমদানিও কমিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে টি কে গ্রুপের পরিচালক (ফিন্যান্স) নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বাজেটে ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ক বাড়ানোর ফলে আমদানিও কম হয়েছিল। এখন ব্যবসায়ীরা আমদানির দিকে ঝুঁকলেও বৈশ্বিক বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিশোধিত সয়াবিনের দাম টনপ্রতি প্রায় ৮০ ডলার বেড়ে ৭৮০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈশ্বিক বাণিজ্যে একাধিক সংকটের কারণে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সয়াবিনের দাম বাড়ায় পাম অয়েলের দামও সমানতালে বেড়ে ৫৮০ ডলারে লেনদেন হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশে বাড়তি দামে ভোজ্যতেল বিক্রি ছাড়া মিল মালিকদের কোনো উপায় নেই বলে দাবি করেছেন তিনি।

চলতি অর্থবছরের বাজেটে আমদানীকৃত প্রতি টন অপরিশোধিত চিনির ক্ষেত্রে শুল্ক ২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা, পরিশোধিত চিনির ক্ষেত্রে শুল্ক সাড়ে ৪ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক (আরডি) ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। নতুন করে শুল্কারোপের ফলে বাজেট ঘোষণার পর পরই বাজারে আমদানি মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে চিনি ও ভোজ্যতেল বিক্রি শুরু করেন ব্যবসায়ীরা।

ফলে ওই সময়েই দুই দফায় পণ্য দুটির দাম মণপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু চাহিদা বৃদ্ধি ও বিশ্ববাজারে বুকিং সামান্য বাড়ার সুযোগে আমদানিকারক পর্যায়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে আবারো মণপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা দাম বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে পাইকারি পর্যায়ে মণপ্রতি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮৯০ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৯২০ টাকায়।

দ্য চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম এ বিষয়ে বলেন, সরকার বাজেটে একাধিক ভোগ্যপণ্য আমদানিতে শুল্কারোপ করেছে। এর প্রভাবেই স্বাভাবিকভাবে দাম বাড়ছে। তবে শুল্ক বৃদ্ধির ফলে চিনি ও ভোজ্যতেলের দাম কতটুকু বৃদ্ধি পাবে, সেটি মিল মালিকরাই বলতে পারবেন। আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ হলে আমদানীকৃত পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এদিকে ভোজ্যতেল ও চিনির পাশাপাশি আদা ও রসুনের বাজারও গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে গেছে। আগে পণ্য দুটি আমদানিতে ৫ শতাংশ এআইটি দিতে হতো ব্যবসায়ীদের। কিন্তু চলতি অর্থবছরের বাজেটে এআইটি দ্বিগুণ করা হয়েছে। এ কারণে এক মাস ধরে রসুন ও আদার দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। সর্বশেষ কোরবানির ঈদের আগে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি রসুন ১৬০ ও আদা ১৭০ টাকায় লেনদেন হয়। পাইকারি বাজারে মূল্য বৃদ্ধির কারণে খুচরা পর্যায়েও নিয়ন্ত্রণহীন দামে বিক্রি হচ্ছে মসলা পণ্য দুটি।

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট কাঁচা পণ্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, দেশে আদা-রসুন উৎপাদন হলেও এখনো আমদানিনির্ভরতা কমেনি। এ কারণে শুল্ক দ্বিগুণ করায় আদা ও রসুনের বাজারও অস্থির হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি কোরবানির ঈদ শেষ হওয়ায় বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণেও দাম বেড়েছে। তবে বাজেটের কারণে আদা ও রসুনের বাড়তি এ দাম আর কমবে না বলেই আশঙ্কা করছেন তিনি।

গরম মসলা আমদানিতেও ৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ছিল প্রস্তাবিত বাজেটে। এর ফলে কোরবানির ঈদের আগে এলাচ, দারচিনি, জিরা, জায়ফল, জয়ত্রিসহ শীর্ষ গরম মসলার দাম ধারাবাহিকভাবে বেড়ে যায়। তবে এসআরও জারির পর ৬৫ শতাংশ আগের শুল্কই বহাল থাকায় গরম মসলার দাম তেমন একটা বাড়েনি। তবে না বাড়লেও কোরবানির ঈদের আগে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্ধিত দামেই স্থিতিশীল রয়েছে গরম মসলার বাজার।

একই চিত্র দেখা গেছে ডালের ক্ষেত্রেও। বাজেটে নতুন শুল্ক আরোপের গুজবে মসুর, ডাবলি ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ডালের দাম কেজিপ্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়নি। কিন্তু বর্ধিত দামই স্থির হয়ে গেছে ডালের বাজারে। দেশের বন্যা পরিস্থিতির পাশাপাশি বর্ষা মৌসুমের কারণে সবজির দাম চড়া থাকা এবং প্রায় দুই মাস সমুদ্রে মত্স্য আহরণ বন্ধ থাকায় ডালের বাজারে এর প্রভাব পড়েছিল বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বাংলা৭১নিউজ/ওবি

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com