বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: অরুণাচল প্রদেশের পাসিঘাট শহরের একটি সরকারি গেস্ট হাউস। তার সামনে পার্ক করা দুটি গাড়ি। নির্বাচন বিষয়ক কর্মকর্তাদের সন্দেহ হয়। তারা সেই গাড়িতে তল্লাশি চালাতেই বেরিয়ে আসতে থাকে রুপি আর রুপি। এক দু’ রুপি নয়। এক কোটি ৮০ লাখ রুপি। দেশে যখন নির্বাচন তখন এত্ত নগদ অর্থ কোথা থেকে এলো? কে রেখেছে এই অর্থ? শুরু হলো অনুসন্ধান। বেরিয়ে এলো এই অর্থের মালিক অরুণাচল প্রদেশ থেকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একজন প্রার্থী ডাঙ্গি পারমির ছেলে ক্রিস্টোফার পারমির ও সাবেক এমএলএ রালোমগ বোরাং।বুধবার এ কথা জানিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা।
বার্তা সংস্থা পিটিআই লিখেছে, অতিরিক্ত প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা কাঙ্কি দারাঙ বলেছেন, এ যাবত ওই রাজ্যে উদ্ধার করা অর্থের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় অংক। এর মধ্যে ছিল একটি সরকারি গাড়ি। তা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক কোটি রুপি। এ গাড়িটিতে থাকা অর্থ ক্রিস্টোফার পারমির। আরেকটি গাড়ি ছিল সেখানে। সেটি ব্যক্তিগত গাড়ি। এর মালিক সাবেক এমএলএ রালোমগ বোরাং। এই গাড়িটি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৮০ লাখ রুপি।
সরকারি গাড়িটি নিবন্ধিত আছে পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপ সচিবের নামে। প্রথমে খবর প্রকাশ হয় যে, এই গাড়ি দুটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খানডুর গাড়িবহরের অংশ ছিল। এমন দাবি করে কংগ্রেস। তবে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন নির্বাচন বিষয়ক কর্মকর্তারা। যেদিন এ ঘটনা ঘটে সেদিন পাসিঘাটায় একটি নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে আয়কর বিভাগের স্কোয়াড যখন ওই অর্থ উদ্ধার করে তখন গেস্ট হাউসে উপস্থিত ছিলেন ক্রিস্টোফার পারমি ও রালোমগ বুরাং। ক্রিস্টোফার দাবি করেছেন, তিনি স্বর্ণালংকার বিক্রি করে এবং অন্যান্য কিছু জিনিস বিক্রি করে ওই অর্থ পেয়েছেন। বাকি অর্থ মঙ্গলবার আত্মীয়দের কাছ থেকে ধার করেছেন। এরপর তিনি বলেন, নগোপক এবং বাপকোটায় দুটি বাড়ি নির্মাণের জন্য তার ওই অর্থ প্রয়োজন ছিল। এ ছাড়া একটি কন্ট্রাক্টে বিনিয়োগ করার কথা ছিল।
অন্যদিকে রালোমগ বলেছেন, মারিয়াংয়ে এক খ- জমি কেনার জন্য তিনি আত্মীয়দের কাছ থেকে ধার করেছেন ওই অর্থ। এ জন্য দু’জনেই জব্দ করা অর্থ ফেরত চান। এখন প্রশ্ন হলো, স্বর্ণালংকার বিক্রির অর্থ হোক, আর আত্মীয়দের কাছ থেকে ধার করা অর্থই হোক তা কেন সরকারি গেস্ট হাউজে এনে রাখা হয়েছে! একই দিনে কেন দু’জন রাজনীতিকের গাড়িতে এত অর্থ ব্যাংকে না রেখে বা বাসায় না রেখে, পুলিশি নিরাপত্তায় না রেখে, কেন গেস্ট হাউসে নিয়ে রাখা হয়েছে!
এই অর্থের বিষয়ে এবং অভিযুক্ত দু’জনের বিষয়ে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে এ প্রশ্নের জবাবে কাঙ্কি দাড়াং বলেছেন, আইটি বিভাগ বিষয়টি দেখছে। ওদিকে ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেস অভিযোগ তুলতে শুরু করে। তারা বলে, অর্থের বিনিময়ে ভোট কেনার গুমোট ফাঁস হয়ে গেছে অরুণাচল প্রদেশে। সেখানে খানডুর গাড়িবহর থেকে এক কোটি ৮০ লাখ রুপি উদ্ধার করা হয়েছে। এ অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও উপ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনকে মামলা করার আহ্বান জানায় কংগ্রেস।
কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সুর্যেওয়ালা বলেন, বিজেটি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অর্থের বিনিময়ে ভোট কিনছে। এ জন্য মুখ্যমন্ত্রী খানডু ও উপ মুখ্যমন্ত্রী ছোওনা মেইনকে অবিলম্বে বরখাস্ত করার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলা৭১নিউজ/এসক