সংবাদ শিরোনাম
বাংলা৭১নিউজ, সংসদ প্রতিবেদক: বাল্য বিবাহ নিরোধ বিল-২০১৬ এর ওপর মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি রেবেকা মমিন রিপোর্টটি উপস্থাপন করেন। রিপোর্টে বিলটি সংশোধিত আকারে পাসের সুপারিশ করা হয়।
নারী ও পুরুষের ক্ষেত্রে বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স যথাক্রমে ২১ এবং ১৮ বছর নির্ধারণসহ বাল্য বিয়ে নিরোধে প্রয়োজনীয় বিধানের প্রস্তাব করে গত ডিসেম্বরে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ বিলটি উত্থাপন করেন।
বিলে বিধিমালা দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি বাল্য বিয়ে প্রতিরোধের জন্য জাতীয়, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠন ও এর কার্যাবলী নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিধিমালায় স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা এবং স্থানীয় পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তির সমন্বয়ে এ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিলে বাল্য বিয়ে বন্ধে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা এবং স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধির সাধারণ ক্ষমতা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা প্রাথমিক বা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি কোন ব্যক্তির লিখিত বা মৌখিক আবেদন অথবা অন্য কোন মাধ্যমে বাল্য বিয়ের সংবাদ পেলে তিনি উক্ত বিয়ে বন্ধ করবেন। অথবা বিধিমালার দ্বারা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
বিলে স্বউদ্যোগে বা কোন অভিযোগের ভিত্তিতে অথবা অন্য কোন মাধ্যমে তথ্যের ভিত্তিতে নিশ্চিত হয়ে আদালত কোন বাল্য বিয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিলে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গকারীকে ৬ মাসের কারাদ- বা অনধিক ১০ হাজার টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িত এবং অনাদায়ে আরো ১ মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত করার বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিলে বাল্য বিয়ের ক্ষেত্রে মিথ্যা অভিযোগজনিত অপরাধে অনধিক ৬ মাস কারাদ- বা অনধিক ৩০ হাজার টাকা অর্থদ- বা উভয় দন্ডে দন্ডিত এবং অর্থদ- অনাদায়ে আরো ১ মাস কারাদন্ডে দন্ডিত করার বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিলে বাল্য বিয়ে করলে প্রাপ্ত বয়স্ক নারী বা পুরুষ, যিনি দায়ী হবেন তাকে অনধিক ২ বছর কারাদ- বা অনধিক ১ লাখ টাকা অর্থদ- বা উভয়দন্ডে দন্ডিত এবং অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাস কারাদন্ডে দন্ডিত করার বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী বা পুরুষের ক্ষেত্রে অনধিক ১৫ দিনের আটকাদেশ বা অনধিক ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় ধরনের শাস্তিযোগ্য করার বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিলে বাল্যবিয়ে সংশ্লিষ্ট পিতা-মাতাসহ অন্য ব্যক্তির ক্ষেত্রে বাল্য বিয়ের জন্য অনধিক ২ বছর ও অনুন্য ৬ মাস কারাদন্ড-বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডে দন্ডিত এবং অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাস কারাদন্ডে দন্ডিত করার বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিলে বাল্য বিয়ে সম্পাদন বা পরিচালনাকারীর ক্ষেত্রে অনধিক ২ বছর ও অনুন্য ৬ মাস কারাদন্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত এবং অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাস কারাদন্ডে দন্ডিত করার বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
বিলে বাল্য বিয়ে নিবন্ধকের ক্ষেত্রে লাইসেন্স বাতিল, তাকে অনধিক ২ বছর ও অন্যুন ৬ মাস কারাদন্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ডে দন্ডিত এবং অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ৩ মাস কারাদন্ডের বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, কোন বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোন নারীর সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশ এবং পিতা-মাতার সম্মতিক্রমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণক্রমে, বিবাহ সম্পাদিত হলে তা এ আইনের অধীন অপরাধ বলে গণ্য হবে না বলে বিলে বিশেষ বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া বিলে বাল্যবিয়ে বন্ধে উদ্যোগী হতে শর্তে বাল্য বিয়ের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি,বয়সের প্রমাণের দলিল, ক্ষতিপূরণ প্রদান, অপরাধের আমলযোগ্যতা, জামিন যোগ্যতা এবং অ-আপোষ যোগ্যতা, বিচার পদ্ধতি, সরেজমিনে তদন্ত, মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯-এর প্রয়োগ, অপরাধ গ্রহণ ও আমলের সময়সীমাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে।
সংসদে ব্যাটালিয়ন আনসার সংশোধন বিল
ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যদের অঙ্গীভূত ও স্কেলবিহীন চাকরির মেয়াদ ৯ বছর থেকে ৬ বছরে কমিয়ে আনার বিধানের প্রস্তাব করে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ব্যাটালিয়ন আনসার (সংশোধন) বিল-২০১৭ উত্থাপন করা হয়েছে।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিলটি উত্থাপন করেন।
বিলে বিদ্যমান আইনের ধারা ৬ক এ সংশোধন করে ৯ (নয়) সংখ্যা, শব্দ ও বন্ধনীর পরিবর্তে ৬ (ছয়) সংখ্যা, শব্দ ও বন্ধনী প্রতি স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ৭ দিনের মধ্যে সংসদে রিপোর্ট প্রদানের জন্য বিলটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে প্রেরণ করা হয়।
বাংলা৭১নিউজ/এএইচ
