বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১১:২৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

তিস্তা ব্যারাজ কমান্ড এলাকায় বোরোর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২০
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,(রংপুর)প্রতিনিধি: করোনাক্রান্তির মধ্যেও সুখবর-দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের আওতায় চলতি মৌসুমে সেচনির্ভর বোরো আবাদে সেচ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। উত্তরের তিন জেলা নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুরে এ বছর ৩৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তা অতিক্রম করে ৫০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান করা হচ্ছে।
এতে তিস্তা ব্যারাজ কমান্ড এলাকায় এই মৌসুমে দুই লাখ ৫০ হাজার মেট্রিকটন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৬০০ কোটি টাকা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম শুরু হয় গত ২৭ জানুয়ারি। রংপুর, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার ৩৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি সেচের আওতায় নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় পাঁচ হাজার হেক্টর, জলঢাকা উপজেলায় আট হাজার হেক্টর ও নীলফামারী সদর উপজেলার সাত হাজার হেক্টর, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় পাঁচ হাজার হেক্টর, সৈয়দপুর উপজেলায় দুই হাজার হেক্টর, রংপুর সদর উপজেলায় দুই হাজার হেক্টর, গঙ্গাচড়া উপজেলায় পাঁচ হাজার হেক্টর, তারাগঞ্জ উপজেলায় তিন হাজার হেক্টর ও দিনাজপুরের খানসামা ও চিরিরবন্দর উপজেলায় এক হাজার ৫০০ হেক্টর জমি রয়েছে। তিস্তার সেচ কমান্ড এলাকার প্রায় প্রায় দুই লাখ কৃষক এই সেচের সুবিধা পাচ্ছেন। শুরুতে তিস্তায় পানিপ্রবাহ কম থাকায় দিনাজপুর ও রংপুরের কমান্ড এলাকার প্রায় অর্ধলাখ হেক্টর জমি সেচ কার্যক্রম থেকে বাদ দিয়ে শুধু নীলফামারী জেলার ডিমলা, জলঢাকা, নীলফামারী সদর, কিশোরগঞ্জ, সৈয়দপুর, রংপুরের তারাগঞ্জ ও গঙ্গাচড়া এবং দিনাজপুরের খানসামা ও চিরিরবন্দর উপজেলাকে সেচের আওতায় রাখা হয়েছে। যদিও রংপুর, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার ১২ উপজেলায় সেচ দেওয়া কথা ছিল। তবে এবারে উজানের পানিপ্রবাহ ঠিক থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সেচ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৯৩-৯৪ শস্যবছর থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ১২টি উপজেলায় ব্যাপকভাবে আউশ ও আমন উৎপাদনের মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষে তিস্তার পানি দিয়ে সেচ কার্যক্রম শুরু হয়। পরে ২০০৬-০৭ শস্যবছর থেকে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে বোরো মৌসুমেও সেচ কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা হয়। আমন মৌসুমে মোট সেচযোগ্য ৮৩ হাজার হেক্টর এলাকার প্রায় সম্পূর্ণটাই সেচের আওতায় আনা সম্ভব হলেও বোরোর ক্ষেত্রে পানির দুষ্প্রাপ্যতায় সেচ-সাফল্যের চিত্র একেবারেই হতাশাজনক। শুকনো মৌসুমে যে সামান্য পরিমাণ পানি তিস্তা নদীতে পাওয়া যায় তার সবটুকুই সেচ চাহিদা মেটানোর লক্ষে তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের ৩৪টি সেচ খালের মাধ্যমে কৃষিজমিতে সরবরাহ করা হচ্ছে। পরিণতিতে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা ব্যারাজের ভাটিতে রংপুরের কাউনিয়া পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার বিস্তৃত এই নদীতে পানিও থাকছে না। এ কারণে তিস্তা অববাহিকার বাংলাদেশ অংশের এই বিশাল পরিমাণ নদীগর্ভ পরিণত হচ্ছে বালুচরে। অপরদিকে দীর্ঘদিন থেকে সেচ খালগুলো সংস্কার না করায় খালগুলোর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ডিসেম্বর মাসের পর থেকে তিস্তায় পানিপ্রবাহ মারাত্মকভাবে কমে যায়। শুধু তাই নয়, বর্ষাকালে অতিরিক্ত পানির কারণে ব্যারাজ ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ফসল ও ঘরবাড়ি ঝুঁকির মুখে পড়ে। ভারত তখন সব গেট খুলে দেয়। এতে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট ২৪ ঘণ্টা খুলে দিয়েও পানি সরানো সম্ভব হয় না।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিগত শুষ্ক মৌসুমে তিস্তা নদীতে পানির প্রবাহ কম থাকলেও এবার সেই পরিস্থিতি নেই। বাংলাদেশে তিস্তার পানি ব্যবহার হচ্ছে পরিকল্পিত সেচ দেওয়ার কাজে। কমান্ড এলাকার কৃষক আবু আলম, নয়া মিয়া, অশোক কুমারসহ অনেকে বলেন, মাঠে সেচনির্ভর বোরো ও ভুট্টা আবাদ চলছে। করোনাভাইরাসের কারণে সরকারি ছুটি ও লকডাউন ঘোষণা করা হলে আমরা চিন্তায় পড়ে যাই। কারণ সেচ কার্যক্রম বন্ধ হলে ফসল ঘরে উঠবে না। কিন্তু করোনাক্রান্তিতেও কর্তৃপক্ষ সেচকার্যক্রম পরিচালনা করায় অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারে ক্ষেতের চেহারা ভালো হয়েছে। ঠিকমতো সেচসুবিধা পাওয়ায় এ বছর তিস্তার সেচ কমান্ড এলাকায় বোরোর বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহ মাহফুজুল হক জানান, চলতি বোরো মৌসুমে তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতায় আট হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান লাগানো হয়েছে। অন্যান্য বছরের মতো তিস্তায় পানি সংকট না থাকায় এবারে বোরোর বাম্পার ফলন হবে।
তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের সেচ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী জানান, উজানে পানিপ্রবাহ ভালো থাকার ফলে তিস্তা ব্যারাজের কমান্ড এলাকায় সেচকার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে। বিগত সময়ের চেয়ে এবার শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, শুরুতে দুই হাজার কিউসেক পানি পাওয়া গেলেও এখন সেই প্রবাহ তিন হাজার কিউসেকের ওপরে রয়েছে। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে সরকারি ছুটি ও লকডাউন ঘোষণা করা হলেও কৃষকের মাঠের সেচনির্ভর বোরো ধান আবাদের কথা মাথায় রেখে মুজিববর্ষ সফল করতে তিস্তা সেচ প্রকল্পের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তিস্তা ব্যারাজের কমান্ড এলাকায় বোরোর বাম্পার ফলনের আশা করছেন এই সেচ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা।

বাংলা৭১নিউজ/এমএ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com