রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ১০:৪১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

চীনের বেল্ট রোড নিয়ে ঢাকাকে যা বলতে চায় দিল্লি

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯
  • ১৮২ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: চীনের বহুল আলোচিত বেল্ট রোড ইনিশিয়েটিভ বা বিআরএই প্রকল্প থেকে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে দেখা হলে তবেই বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার বা বিসিআইএম আর্থিক করিডরের ভবিষ্যৎ আছে বলে ভারত মনে করছে।দিল্লিতে সরকারের ঘনিষ্ঠ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বেল্ট রোডের অন্যতম প্রধান অংশ যেহেতু বিতর্কিত কাশ্মীর ভূখন্ডের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে তাই সেখানে ভারতের আপত্তি থাকবেই।

আর বিসিআইএম যেহেতু বেল্ট রোডের চেয়ে অনেক বেশি পুরনো প্রকল্প – তাই সেটিকে নিয়ে আলাদাভাবে এগোনো দরকার বলেই তারা যুক্তি দিচ্ছেন।পাশাপাশি বেল্ট রোড প্রকল্পের অর্থায়ন যাতে বাংলাদেশকে কোনও ঋণের জালে জড়িয়ে না-ফেলে সে দিকেও ঢাকার সতর্ক থাকা দরকার বলে দিল্লির অভিমত।

এই মুহুর্তে ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম – দুই সীমান্তে চলছে চীনের বেল্ট রোড ইনিশিয়েটিভের দুটি প্রকল্পের কাজ।একদিকে চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর বা সিপেক, যা বিতর্কিত কাশ্মীরের ওপর দিয়ে যাচ্ছে বলে ভারত এই প্রকল্পের তীব্র বিরোধিতা করছে।

অন্য দিকে পূর্ব সীমান্তের বিসিআইএম নিয়ে ভারতের বিশেষ আপত্তি না-থাকলেও এটাকেও যদি বেল্ট রোডের অংশ হিসেবে দেখা হয় তাহলে ওই একই কারণে দিল্লির পক্ষে তা মেনে নেওয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।

এই পটভূমিতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লিকে পরামর্শ দিয়েছেন, দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক ফোরামে আলোচনার মাধ্যমে বেজিংয়ের সঙ্গে মতবিরোধ মিটিয়ে নিতে।

কিন্তু ভারত কি সেই প্রস্তাব মানতে প্রস্তুত?

সাবেক ভারতীয় কূটনীতিক অশোক কান্থা বছরদুয়েক আগেও চীনে ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন, এখন তিনি দিল্লিতে সরকারি সাহায্যপুষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব চাইনিজ স্টাডিজের অধিকর্তা।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, “আমি কাউকে কোনও উপদেশ দিতে চাই না – কিন্তু এটুকু অবশ্যই বলব যে বিসিআইএম নিয়ে কথাবার্তা কিন্তু বেল্ট রোডের অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে।”

“ফলে আমি মনে করি না অন্য কোনও প্রকল্পের সঙ্গে বিসিআইএমকে যুক্ত করে দেখার অবকাশ আছে – কারণ এটা নিয়ে সংশ্লিষ্ট চারটে দেশের আলোচনা চলছে অনেক অনেক আগে থেকে!”

কিন্তু এই মুহুর্তে চীন বিসিআইএম-কেও বেল্ট রোডের অংশ হিসেবেই দেখাতে চায় বলে একটা ধারণা সৃষ্টি হয়েছে, যদিও তারা বিষয়টা পুরো স্পষ্ট করেনি।

বার্লিন-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেরিকস-এর প্রকাশিত বেল্ট রোড মানচিত্রবার্লিন-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেরিকস-এর প্রকাশিত বেল্ট রোড মানচিত্র।

এই প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা যেমনটা চাইছেন, অর্থাৎ সিপেক নিয়ে ভারত আপত্তি শিথিল করুক, তার কি কোনও সম্ভাবনা আছে?

দিল্লিতে কানেক্টিভিটি বিশেষজ্ঞ প্রবীর দে বেল্ট রোড নিয়ে বহুদিন গবেষণা করছেন, তিনি কিন্তু খুব একটা আশাবাদী নন।

ড: দে বলছিলেন, “দেখুন একটা দেশের অখন্ডতা বা সার্বভৌমত্বের দাবি সবার আগে। তা ছাড়া ভারতে সামনেই নির্বাচন আসছে, ফলে এখুনি বিষয়টা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হবে বা কেউ বিবৃতি দেবে বলেও মনে হয় না।

“তবে বিসিআইএম করিডর যে বাংলাদেশ এবং ভারতের পূর্ব বা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য অনেক সুবিধা বয়ে আনবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।”

“সে কারণেই আমি মনে করি দিল্লিতে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের বিসিআইএম নিয়ে দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে – তা সে সিপেকে আমাদের অবস্থান যা-ই হোক না কেন!”

“কোনও একটা মেকানিজমের মাধ্যমে এই করিডরের কাজ এগিয়ে নিতেই হবে। বিসিআইএমের যাবতীয় স্টাডিও শেষ, এখন চার দেশের একটা বৈঠক ডেকে সেই স্টাডি অনুমোদন করাতে হবে – যে বৈঠক ডাকার দায়িত্ব মিয়ানমারের।”

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও চীন-ভারত সম্পর্কের বিশেষজ্ঞ ড: শ্রীমতি চক্রবর্তীও মনে করেন বিসিআইএম নিয়ে ভারতের উৎসাহ বাংলাদেশের চেয়ে কিছু কম নয় – তবে প্রকল্পটাকে বেল্ট রোড থেকে পৃথকভাবে দেখলে তবেই সমস্যা মেটে।

তার কথায়, “বিসিআইএমের চারটে দেশের মধ্যে সবচেয়ে আগ্রহ দেখা গেছে চীনের।” “মিয়ানমারের উৎসাহ একটু কম ছিল, বাংলাদেশও বলব একটু ইর‍্যাটিক ছিল। ভারতও অবশ্য কখনও কখনও মন্থরতা দেখিয়েছে।”

“তবু আমি মনে করি বিসিআইএম নিয়ে ভারতের আপত্তির কিছুই নেই। আমাদের যাবতীয় আপত্তি সিপেক নিয়ে – আর সেটা একটা বিতর্কিত এলাকা দিয়ে যাচ্ছে বলে।” “এখন সেই জায়গাকে পাশ কাটানো হলে, কিংবা দুটো প্রকল্পকে আলাদা করে দেখা হলেই তো আর অসুবিধার কিছু থাকে না” বলছেন অধ্যাপক চক্রবর্তী।

এদিকে বিআরআই সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দেশকে দীর্ঘমেয়াদী ঋণের জালে জড়িয়ে দিচ্ছে, সম্প্রতি এধরনের সন্দেহ তৈরি হয়েছে শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ বা এমন কী পাকিস্তানেও।

প্রবীর দে বলছিলেন, দিল্লিরও বিশ্বাস বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে খুব সাবধানে পা ফেলতে হবে।”ঢাকাকে আসলে খুবই সতর্কভাবে দেখতে হবে চীন থেকে তারা ঠিক কী নেবে।””এখানে কিন্তু কোনও ‘ফ্রি লাঞ্চ’ নেই, মানে বিনি পয়সায় কেউ কাউকে কিছু অবকাঠামো গড়ে দিচ্ছে না”, বলছিলেন তিনি।

“চীনের ঋণে অনেক জটিল শর্তও আছে। বাংলাদেশের ডেট মার্জিন এমনিতেই অনেক বেশি, এখন বিআরআই প্রকল্পের জন্য সেটা আরও বাড়লে রাজস্ব উৎপাদনের জন্য তাদের আরও অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে।”

আসলে বাংলাদেশের মতো ভারতও বিশ্বাস করে, এই অঞ্চলে বিসিআইএম করিডরের দ্রুত বাস্তবায়ন দরকার।

কিন্তু সুদূর কাশ্মীরের ছায়া পড়াতেই প্রকল্পটি ভারতের চোখে সন্দেহজনক হয়ে উঠেছে – আর তারা এখন বাংলাদেশকেও বার্তা দিতে চাইছে বিষয়টিকে বেল্ট রোড থেকে আলাদা করে দেখলেই এর রূপায়নে কোনও সমস্যা থাকে না।

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র:বিবিসি বাংলা/এসই

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com