শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করেছে সরকার বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল চুক্তিতে অগ্রগতি, খসড়া চূড়ান্ত অটোরিকশা স্ট্যান্ড দখল নিয়ে যুবদলের সংঘর্ষ, বিএনপি নেতা গুলিবিদ্ধ লক্ষ্মীপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু দেশের সব মসজিদে দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায়ের নির্দেশনা দেশের ১০টি ইকোনমিক জোন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সাড়ে ৯ একর জমি জব্দ, ২৮ কোটির সম্পদ অবরুদ্ধ ইভ্যালির রাসেল-শামীমার ৩ বছরের কারাদণ্ড গত ১৬ বছর নববর্ষে দলীয় ও বিদেশি রাষ্ট্রের প্রভাব ছিল: সারজিস বৈষম্যহীন কর ব্যবস্থা চায় এনবিআর দুর্নীতির মামলা থেকে খালাস পেলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু ২৩ এপ্রিল থেকে অনুমতি ছাড়া মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ইউক্রেনে রাশিয়ার মিসাইল হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ফুলবাড়ীতে ঝড়ে ঘরের ওপর গাছ চাপা পড়ে নারীর মৃত্যু বাংলাদেশি পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শর্ত পুনর্বহাল সম্প্রীতি ধরে রাখতে সেনাবাহিনী সব করতে প্রস্তুত: সেনাপ্রধান আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু সকাল ৯টায় শিল্পে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে বাড়লো ১০ টাকা বাংলাদেশে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে অর্থায়ন করবে চীন ডিবিপ্রধানের পদ থেকে সরানো হলো রেজাউল করিমকে

কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে ভুট্টা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ২৩ জুন, ২০২০
  • ৫৯ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: সারাদেশে বেড়েই চলেছে ভুট্টার উৎপাদন। মাঠের পর মাঠ সবুজ পাতার আড়ালে হাসছে হলুদ রঙের ভুট্টার মোচা (ফল)। ভুট্টা উৎপাদন ও বিক্রি করে কৃষক খুব খুশি। উৎপাদনে ধানের চেয়ে ভুট্টার খরচ কম হওয়ায় অনেক কৃষক ভুট্টার চাষের দিকে ঝুঁকছেন। ধানের চেয়ে ভুট্টা চাষে দ্বিগুণ লাভ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।

ভুট্টা উৎপাদন ও গবেষণার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, এবার ভুট্টা উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে তা ছাড়িয়ে যাবে। কারণ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার ভুট্টা চাষে অনেক কৃষককে প্রণোদনা দিচ্ছে। এছাড়া মাঠ প্রদর্শনী বাবদও অনেক কৃষক প্রণোদনা পাচ্ছেন। দেশের অধিকাংশ উপজেলায় ৭০০ থেকে ৮০০ জন ভুট্টা চাষিকে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। প্রণোদনার আওতায় প্রত্যেক চাষিকে দুই কেজি করে ভুট্টার বীজ, ২০ কেজি ডিএপি (ড্যাপ সার) ও ১০ কেজি এমওপি (পটাশ) সার বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে। রাজস্ব খাত থেকেও এনএটিপি (ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রজেক্ট) প্রকল্পের আওতায় অনেকে ভুট্টার ওপর প্রদর্শনী প্লট পেয়েছেন। এসব কৃষকের প্রত্যককে নগদ দেড় হাজার টাকাসহ সার, কীটনাশক, সাইনবোর্ড বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে।

বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার চরপাড়া গ্রামের কৃষক আকিমুদ্দিন শেখ এবার ১০ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। গত আমনের সিজনে ধানের দাম কম পাওয়ায় এবার বোরো ধান আবাদ না করে তিনি ভুট্টার চাষ করেছেন। ১০ বিঘা জমিতে তার ৪২০ মন ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে। প্রতি মণ ভুট্টা (কাঁচা) খোলা থেকেই ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি করে দিয়েছেন। প্রতিবিঘা জমিতে তার উৎপাদন খরচ হয়েছে গড়ে ৯ হাজার টাকা। মোট খরচ হয়েছে ৯০ হাজার টাকা। ৪২০ মণ ভুট্টা বিক্রি করে তিনি এক লাখ ৪১ হাজার টাকা নিট প্রফিট করেছেন।

কৃষক আকিমুদ্দিন শেখ বলেন, এখন থেকে আর ধান আবাদ করব না। শুধু বছরে খাওয়ার জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু করব। ভুট্টা, পাট, মরিচ ও সবজিসহ অন্যান্য ফসল চাষ করব। তিনি বলেন, ধান এক হাজার টাকা মণ বিক্রি করলেও ধানের চেয়ে ভুট্টায় দ্বিগুণ লাভ। তিনি হিসাব করে বলেন, এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন খরচ ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। ধান উৎপাদন হবে ২০ মণ। এক হাজার টাকা মণ দরেও ধান বিক্রি করলে এক বিঘা জমিতে ৫-৬ হাজার টাকার বেশি লাভ হবে না।

তিনি বলেন, ‘এবার এক বিঘা জমিতে আমার ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে ৪২ মণ। প্রতি মণ ৫৫০ টাকা দরে এসেছে ২৩ হাজার ১০০ টাকা। উৎপাদন খরচ ৯ হাজার টাকা বাদ দিলে প্রতি বিঘায় আমার ১৪ হাজার ১০০ টাকা লাভ হয়েছে। যা ধানের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। এ কারণে ধান উৎপাদনের দিকে আমার আর ঝোঁক নেই।’

একই জেলার উল্লাপাড়া গ্রামের কৃষক হেলাল খাঁ  বলেন, আমি এবার পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টা এবং পাঁচ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। পাঁচ বিঘা জমিতে ধান হয়েছে ১১০ মণ। বিক্রি করেছি ৮০০ টাকা মণ দরে। এতে আমার মোট আয় হয়েছে ৮৮ হাজার টাকা। অথচ পাঁচ বিঘা জমিতে ধান উৎপাদনে ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলে ধানে আমার লাভ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা। অন্যদিকে পাঁচ বিঘা জমিতে ভুট্টা উৎপাদন হয়েছে ২১৫ মণ। প্রতি মণ ভুট্টা বিক্রি করেছি ৫৫০ টাকা দরে। ভুট্টা বিক্রি বাবদ আমার এসেছে এক লাখ ১৮ হাজার ২৫০ টাকা। আর খরচ হয়েছে ৫২ হাজার টাকা। আমার মোট লাভ হয়েছে ৬৬ হাজার ২৫০ টাকা। তিনি বলেন, পাঁচ বিঘা জমিতে ধান করে লাভ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা আর একই পরিমাণ জমিতে ভুট্টা করে লাভ হয়েছে ৬৬ হাজার ২৫০ টাকা।

বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সরেজমিন উইংয়ের পরিচালক ড. আলহাজ উদ্দিন এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘ভুট্টা চাষিরা এই আবাদ করে লাভবান হচ্ছেন। সে কারণে প্রতিনিয়ত ভুট্টার আবাদ বাড়ছে। ভুট্টা দিয়ে পোল্ট্রি এবং মাছের খাবার তৈরি হয়। আমাদের দেশে পোল্ট্রি এবং ফিশারিজের প্রসার ঘটার সঙ্গে সঙ্গে ভুট্টার চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘চলতি বছরে আমাদের ভুট্টা উৎপাদনের জন্য চার লাখ ৫২ হাজার ৩৪১ হেক্টর জমি নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু এবার চার লাখ ৬২ হাজার ৮৮ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষাবাদ হয়েছে। আশা করি, এবার ভুট্টা উৎপাদনের জন্য ৪৪ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টনের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তা ছেড়ে যাবে। কারণ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত ১০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।’

বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট নশিপুর, দিনাজপুরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ড. মো. আবু জামান সরকার বলেন, ‘প্রথমে আমরা ভুট্টা চাষের জন্য কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছি। ট্রেনিং দিয়েছি। এরপর প্রণোদনা ও প্লট প্রদর্শনী বাবদ ভর্তুকি দিচ্ছি। এখন কৃষক নিজেরাই ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। কারণ এই ফসলটির উৎপাদন খরচের চেয়ে লাভ অনেক বেশি পাচ্ছে কৃষক। এজন্য কৃষক ভুট্টা চাষের দিকে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই ভুট্টা চাষের জন্য জমির পরিমাণ বাড়ছে। মানুষের জন্য খাওয়ার উপযোগী ভুট্টা কীভাবে উৎপাদন করা যায় সে বিষয়টি নিয়েও আমরা ভাবছি।

বাংলা৭১নিউজ/এমএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com