মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের দৌরাত্মে খোদ কৃষক ধানের প্রকৃত মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অভিযোগ করে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ মেট্রিকটন ধান ক্রয়ের জন্য সরকারের নিকট দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট এবং কৃষক ও খেতমজুর সংগ্রাম পরিষদ।
সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়েছে।
সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যক্ষ ওয়াজেদ পারভেজ ও সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ এক বিবৃতিতে কৃষক সংগঠনসমূহের দীর্ঘদিনের দাবি সত্ত্বেও বোরো ধানের লাভজনক দাম নির্ধারণ না করে চাতাল ও মিল মালিকদের স্বার্থ রক্ষায় ধান চালের ক্রয় মূল্য ও পরিমাণ নির্ধারণ করায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছেন।
তারা বলেছেন, কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষি বিপণন কেন্দ্রের হিসেবে এ বছর বোরো ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয়েছে কেজি প্রতি ২৬ টাকার বেশি। সরকার প্রতি কেজি ২৭ টাকা দাম নির্ধারণ করেছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন থেকে দাবি জানিয়ে আসছি ফসলের লাভজনক দাম অর্থাৎ উৎপাদন খরচের সাথে ৪০ শতাংশ বাড়তি যোগ করে অর্থাৎ মূল্য সহায়তা দিয়ে ধানের দাম নির্ধারণের জন্য, কিন্তু অতীতে এবং এবারেও তা উপেক্ষিত হয়েছে। কৃষি-কৃষক বাঁচাতে বোরো ধানের দাম মণপ্রতি ১৫০০ টাকা নির্ধারণ করে মূল্য সহায়তা দিয়ে প্রতি ইউনিয়নে ক্রয় কেন্দ্র খুলে উৎপাদক কৃষকের কাছ থেকে কমপক্ষে ৫০ লাখ টন ধান ক্রয় করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
কৃষক-খেতমজুর সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক বাংলাদেশ খেতমজুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আকবর খান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ, কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবার বোরো ধানের উৎপাদন খরচ কেজি প্রতি ২৬ টাকার উপরে পড়েছে বলে জানিয়েছেন। সুতরাং উৎপাদন খরচের সাথে মূল্য সংযোজন করে ধানের ক্রয় মূল্য ন্যূনতম মণপ্রতি ১২ শত টাকা নির্ধারণ করা দরকার। তা না হলে করোনা মহামারির সময় কৃষক পরিবার-পরিজন নিয়ে মহাবিপদে পড়বে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারি দলের লোকজন এবং চাতাল মালিক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্মের কারণে প্রতিবছরের ন্যায় এবারো খোদ কৃষক ধানর ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত। তাই প্রতিটি ইউনিয়নে ক্রয় কেন্দ্র চালু করে খোদ কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করতে হবে। করোনা মহাবিপর্যয় থেকে কৃষক বাঁচাতে ক্ষুদ্র ঋণসহ কৃষিঋণ মওকুফেরও দাবি জানান তারা।
বাংলা৭১নিউজ/এবি