পঞ্চগড়ের বোদায় মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের দুস্থ নারীদের খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচির (ভিডব্লিউবি) আওতায় দেওয়া চাল বিতরণে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে ১১ ইউপি সদস্যকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।
সোমবার (২৬ মে) রাতে ঝলই শালশিরি ইউনিয়ন পরিষদে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
আটকদের মধ্যে আটজন পুরুষ ও তিনজন সংরক্ষিত নারী সদস্য। তাদের থেকে এক লাখ ১৩ হাজার ৯০০ টাকা জব্দ করা হয়। রাতেই তাদের বোদা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে সেনাবাহিনী।
আটকরা হলেন, বোদা উপজেলার ঝলই শালশিরি ইউনিয়ন পরিষদের এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খলিলুর রহমান, দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হামিজ উদ্দিন, তিন নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রিয় নাথ রায়, পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সুনীল চন্দ্র রায়, ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দাহির উদ্দিন, সাত নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খাদিমুল ইসলাম, আট নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মামুন ইসলাম, নয় নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আশরাফুল ইসলাম, ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য শেফালী রাণী, ৪,৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিলকিস বেগম এবং ৭,৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রুপালী বেগম।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের দুস্থ নারীদের খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সোমবার বোদা উপজেলার ঝলই শালশিরি ইউনিয়নের ২৫৮টি পরিবারের মাঝে মাসে ৩০ কেজি হিসেবে পাঁচ মাসের (জানুয়ারি-মে) পরিবার প্রতি ১৫০ কেজি চাল বিতরণ করা হচ্ছিলো। এসময় ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্যরা উপকারভোগীদের কাছে ৫০০ থেকে ৬০০ করে টাকা আদায় করছিলেন।
পরে অবৈধভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে তিন নারী সদস্যসহ ১১ ইউপি সদস্যকে অবরুদ্ধ করে সেনা সদস্যদের খবর দেন উপকারভোগীরা। একপর্যায়ে সেখানে কয়েকশ মানুষ জড়ো হন ও বিক্ষোভ করতে থাকেন। খবর পেয়ে পুলিশসহ বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার নজির সেখানে যান। এসময় ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য বাদে ৮টি ওয়ার্ডের আটজন ইউপি সদস্য ও তিনজন সংরক্ষিত নারী সদস্যকে আটক করে সেনাবাহিনী।
স্থানীয় বাসিন্দা হাসিবুল ইসলাম বলেন, ইউপি সদস্যরা এই চাল বিতরণের জন্য সুবিধাভোগীদের যেখানেই পান, সেখানেই বলে টাকা নেন। তারা আসলে চরম অন্যায় করেছেন। তাদের কঠিন বিচার হওয়া দরকার।
শাহিনুর রহমান নামে একজন বলেন, আমাদের এখানে অনেক অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে। এর মাঝে আজ এ ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে বলে তারা আটক হয়েছে। তাদের বিচার দাবি করছি। বিচার চলাকালে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা প্রদানে প্রশাসনের প্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ আশা করছি।
ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও অভিযুক্ত আট নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুন ইসলাম বলেন, আমরা যেহেতু চালগুলো বোদা থেকে নিয়ে এসেছি। এ কারণে আমাদের পরিবহন খরচ হয়েছিল। উপকার ভোগীদের কাছে ৫০০ টাকা করে চেয়েছিলাম। তারা দিয়েছিল। তবে আমাদের এটি ঠিক হয়নি। আমরা সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলাম যে, এরকম ভুল আর কোনোদিন করা হবে না। এরপরও আমাদেরকে আটক করা হয়েছে।
বোদার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার নজির বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তি ও ঘটনাস্থলে পাওয়া আলামতের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিম উদ্দিন বলেন, আটক ১১ ইউপি সদস্য থানা হেফাজতে আছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ
উপদেষ্টা সম্পাদক : সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, প্রধান সম্পাদকঃ তাজিন মাহমুদ, সম্পাদক: ডা: সাদিয়া হোসেন, যোগাযোগঃ ৪/এ,ইন্দিরা রোড, মাহবুব প্লাজা (২য় তলা) ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ ।মোবাইল: ০১৯৭১-১৯৩৯৩৪, ০১৫৫২-৩১৮৩৩৯, ই-মেইল: [email protected]; [email protected]। ওয়েব:www.bangla71news.com
© All rights reserved © 2018-2025