বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব ও ভবিষ্যতে দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ২৭ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় ৩ হাজার ২৮০ কোটি টাকা) ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে এই তথ্য জানানো হয়।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস জানায়, বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকদের বোর্ড এই ঋণ অনুমোদন করেছে। অর্থায়নটি ২০২৪ সালের আগস্টে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর পুনরুদ্ধার, অবকাঠামো নির্মাণ ও পুনর্বাসন, কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং মানুষের জীবিকার সুরক্ষায় ব্যয় করা হবে।
এই প্রকল্পের নাম- বাংলাদেশ সাসটেইনেবল রিকভার, ইমারজেন্সি প্রিপারিডনেস এন্ড রেসপন্স (বি-স্ট্রং)। এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের গ্রামীণ এবং বন্যা সুরক্ষা অবকাঠামো নির্মাণ ও পুনর্গঠন করা হবে। এতে প্রায় ১৬ লাখ মানুষ বন্যার ক্ষয়ক্ষতি থেকে সুরক্ষা পাবে।
বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন এবং দুর্যোগ প্রস্তুতিতে অগ্রণী দেশ। তবে ক্রমবর্ধমান জলবায়ু ঝুঁকি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশের অর্থনীতি ও মানুষের জীবনযাত্রার ওপর বড় প্রভাব ফেলে।
তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে স্থিতিশীলতা গড়ে তোলা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার। এই প্রকল্পটি বাংলাদেশের দুর্যোগ প্রস্তুতি ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জীবিকা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।
এই প্রকল্পের অধীনে ৭৯টি বহুমুখী বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও পুনর্বাসন করা হবে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো স্বাভাবিক সময়ে প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হবে। জলবায়ু সহিষ্ণু রাস্তা ও সেতু তৈরি এবং বন্যা সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণ, মেরামত ও পুনর্বাসনও এর অন্তর্ভুক্ত। বন্যা পূর্বাভাস ব্যবস্থার উন্নয়নেও সহায়তা করা হবে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত করতে নৌকা, সরঞ্জাম, প্রশিক্ষণ ও মহড়ার ব্যবস্থা করা হবে।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট স্বর্ণা কাজী এই অর্থায়ন প্রসঙ্গে বলেন, এই প্রকল্প পুনরুদ্ধার ও স্থিতিশীলতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পুনর্গঠন ও অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি অ-ভৌত কার্যক্রমের মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে পুনরুদ্ধার ও স্থিতিশীলতা তৈরির একটি সামগ্রিক পদ্ধতি নিশ্চিত করা যাবে এবং ভবিষ্যতে বন্যার ঝুঁকি কমিয়ে দুর্বল জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, প্রকল্পটি বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের আয়ের সুযোগ বাড়াতে আর্থিক সহায়তা ও বাজার-সংশ্লিষ্ট দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রদান করবে। পাশাপাশি অস্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি করা হবে। এর মাধ্যমে ৩ লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে।
কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়াতে অন্তত ৬৫ হাজার কৃষি পরিবারকে উচ্চ ফলনশীল, জলবায়ু সহিষ্ণু ও টেকসই ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি, কৃষি যন্ত্রপাতি ও উন্নত সেচ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সহায়তা করা হবে। মানসম্পন্ন বীজ সরবরাহের জন্য বীজ গ্রাম স্থাপন করা হবে এবং নারীদের বসতবাড়ি ও কমিউনিটি বাগানে উৎসাহিত করা হবে। টেকসই কৃষি পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার জন্য কৃষক দলও গঠন করা হবে। এর ফলে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির উন্নতি ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ
উপদেষ্টা সম্পাদক : সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, প্রধান সম্পাদকঃ তাজিন মাহমুদ, সম্পাদক: ডা: সাদিয়া হোসেন, যোগাযোগঃ ৪/এ,ইন্দিরা রোড, মাহবুব প্লাজা (২য় তলা) ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ ।মোবাইল: ০১৯৭১-১৯৩৯৩৪, ০১৫৫২-৩১৮৩৩৯, ই-মেইল: [email protected]; [email protected]। ওয়েব:www.bangla71news.com
© All rights reserved © 2018-2025