চার মাস পর সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতা নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। গ্রেডভিত্তিক ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আগামী ২০ মে বিষয়টি নিয়ে অর্থ ড. উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত ডিসেম্বরে ‘মহার্ঘ ভাতা’ সংস্থানের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি পর্যালোচনা কমিটি গঠন করে সরকার। পর্যালোচনা শেষে কমিটি গ্রেডভিত্তিক ১০ থেকে ২০ শতাংশ ভাতা দেওয়ার সুপারিশ করে। গত জানুয়ারি থেকেই এ ভাতা কার্যকরের পরিকল্পনা ছিল।
কিন্তু বিভিন্ন পক্ষের কঠোর সমালোচনার প্রেক্ষিতে সেসময় সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়া থেকে পিছু হটে সরকার। গত ২৮ জানুয়ারি সাংবাদিকদের অর্থ উপদেষ্টা বলেন, মহার্ঘ ভাতার বিষয়ে এখনো আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি।
তাহলে কি মহার্ঘ ভাতার বিষয় থেকে সরকার সরে আসছে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মহার্ঘ ভাতার ঘোষণা কে দিলো? কে দিয়েছে ঘোষণা আমি জানি না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে এলে তারপরে সিদ্ধান্ত নেবো দেবো কি দেব না। তারপর ঘোষণা দেবো।
অর্থ উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের পর সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতার বিষয়টি আড়ালে চলে যায়। তবে চার মাস পর এখন বিষয়টি আবার সামনে এসেছে। অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে আগামী ২০ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, পাঁচ বছর পরপর সরকারি চাকরিজীবীদের নতুন বেতন কাঠামো হওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু ২০১৫ সালে সর্বশেষ বেতন কাঠামো কার্যকর হয়েছে। এরপর আর নতুন কাঠামো আসেনি। অথচ এ সময়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতি বেশ বেড়েছে। এ কারণে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত জনপ্রশাসনবিষয়ক কমিটি বিষয়টি আগামী সপ্তাহে বৈঠকে বসবে। ওই বৈঠকে সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে আগামী জুলাই থেকে তা কার্যকর হতে পারে। নতুন অর্থ বছরের বাজেটে অর্থ উপদেষ্টা এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে পারেন।
এদিকে গত বছরের ডিসেম্বরে মহার্ঘ ভাতা সংস্থানের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের যে পর্যালোচনা কমিটি গঠন করা হয় ওই কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সাড়ে ১৪ লাখ সরকারি চাকরিজীবীকে মূল বেতনের সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার খসড়া প্রস্তুত করেছিল অর্থ বিভাগ।
তবে এরই মধ্যে পাওয়া সরকারি চাকরিজীবীর বাড়তি ৫ শতাংশ বার্ষিক বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) বাদ দেওয়ার সুপারিশও করা হয়। অর্থ বিভাগের হিসাবে এটি বাস্তবায়নে এক অর্থবছরে বাড়তি খরচ হবে অন্তত পাঁচ হাজার কোটি টাকা।
অর্থ বিভাগের খসড়া প্রস্তাবে ব্যয় কিছুটা কমাতে ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারীদের সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ ভাতা দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও প্রথম থেকে দশম গ্রেডের কর্মচারীদের ১০ বা ১৫ শতাংশ হারে ভাতার বিষয়টি আলোচনায় ছিল।
এ ক্ষেত্রে প্রথম থেকে দশম গ্রেডে ১০ শতাংশ দেওয়া হলে পাঁচ হাজার কোটির কিছু বেশি টাকার প্রয়োজন ছিল। আর ১৫ শতাংশ দেওয়া হলে ব্যয় আরেকটু বেড়ে দাঁড়াতো প্রায় ৫ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগ এ পরিমাণ টাকার সংস্থান করে সংশোধিত বাজেটে তা অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করে। আগামী ২০ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বৈঠকে এই খসড়া উপস্থাপন করা হতে পারে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ
উপদেষ্টা সম্পাদক : সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, প্রধান সম্পাদকঃ তাজিন মাহমুদ, সম্পাদক: ডা: সাদিয়া হোসেন, যোগাযোগঃ ৪/এ,ইন্দিরা রোড, মাহবুব প্লাজা (২য় তলা) ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ ।মোবাইল: ০১৯৭১-১৯৩৯৩৪, ০১৫৫২-৩১৮৩৩৯, ই-মেইল: [email protected]; [email protected]। ওয়েব:www.bangla71news.com
© All rights reserved © 2018-2025