পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রক কমিটির সভা ডেকেছে বলে শনিবার (১০ মে) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে। কিন্তু দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে, ভারতের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের পর পারমাণবিক অস্ত্রাগার দেখভাল করা শীর্ষ সামরিক ও বেসামরিক সংস্থার কোনো বৈঠকের সময়সূচী নির্ধারণ করা হয়নি। খবর রয়টার্সের।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এর আগে বলা হয়েছিল যে, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পরমাণু অস্ত্র নিয়ন্ত্রক কমিটিকে দেখা করার জন্য ডেকেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
১৯৯৯ সালের পর পারমাণবিক অস্ত্রধারী এই দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দেশটির ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির (এনসিএ) বৈঠক ডেকেছেন। এনসিএ দেশটির স্থল, আকাশ ও নৌ বাহিনীর জন্য যৌথ কৌশল প্রণয়নে ভূমিকা রাখে। তবে এর আরও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের দেখভাল করা এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া।
কিন্তু শনিবার আরও পরের দিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বরাত দিয়ে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের কোনো বৈঠকের সময়সূচী নির্ধারণ করা হয়নি।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এআরওয়াই টেলিভিশনকে বলেন, আপনি যে বিষয়টি (পারমাণবিক বিকল্প) সম্পর্কে কথা বলেছেন তার উপস্থিতি আছে। কিন্তু আসুন এটি নিয়ে কথা না বলি। আমাদের এটাকে খুব দূরবর্তী সম্ভাবনা হিসাবে বিবেচনা করা উচিত, আমাদের তাৎক্ষণিক প্রেক্ষাপটে এটি নিয়ে আলোচনা করাও উচিত নয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা সেই পর্যায়ে পৌঁছানোর আগে আমার মনে হয় উত্তেজনা কমে আসবে। ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির কোনো সভা হয়নি এবং এমন কোনো সভার সময়সূচিও নির্ধারিত হয়নি।
এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ ইসহাক দার স্থানীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, ভারত যদি এখানে থামে তবে আমরাও এখানে থামার কথা বিবেচনা করব।
অপরদিকে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয় পক্ষকে পরিস্থিতির উত্তেজনা কমানোর উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন।
আসিম মুনিরের সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়ে রুবিও বলেছেন, ভবিষ্যতে সংঘাত এড়াতে গঠনমূলক আলোচনা শুরু করতে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলার সময় উভয় পক্ষকে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন মার্কো রুবিও।
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার ঘটনায় ২৬ পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। ওই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। কাশ্মীরের হামলার জন্য শুরু থেকেই ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে কিন্তু ইসলামাবাদ এ ধরনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
‘অপারেশন সিঁদুর’ এর প্রতিশোধ হিসাবে পাকিস্তানও অভিযান শুরু করেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে, ‘অপারেশন বুনিয়ান-মারসুস’। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও সেনাবাহিনীর জনসংযোগ বিভাগ দাবি করেছে, ভারত নতুন করে তাদের তিনটি বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এর জবাবে ভারতের পাঠানকোট, উধমপুরসহ বিভিন্ন সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে তারা।
পাকিস্তানের বেশ কিছু ড্রোন ধ্বংসের দাবি করেছে ভারতের সেনাবাহিনী। ভারতীয় বাহিনী রাতভর একাধিক এমন পরিস্থিতিতেপাকিস্তানি সামরিক পোস্ট এবং একটি লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করেছে বলেও দাবি করা হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তান সামরিক বাহিনী ভারতে হামলার বিষয়ে একের পর এক দাবি করে যাচ্ছে। সবশেষ তারা ভারতের এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়ার দাবি করেছে।
এছাড়া শনিবার ভোর পৌনে ছয়টার দিকে শ্রীনগরে কয়েকটি বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে। শহরজুড়ে এখন পুরোপুরি ব্ল্যাকআউট চলছে। এর আগে ভারত এবং পাকিস্তান দুই দেশই দাবি করেছে যে, শুক্রবার দিবাগত রাতে তাদের ওপরে অপর দেশ থেকে হামলা হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ
উপদেষ্টা সম্পাদক : সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, প্রধান সম্পাদকঃ তাজিন মাহমুদ, সম্পাদক: ডা: সাদিয়া হোসেন, যোগাযোগঃ ৪/এ,ইন্দিরা রোড, মাহবুব প্লাজা (২য় তলা) ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ ।মোবাইল: ০১৯৭১-১৯৩৯৩৪, ০১৫৫২-৩১৮৩৩৯, ই-মেইল: [email protected]; [email protected]। ওয়েব:www.bangla71news.com
© All rights reserved © 2018-2025