মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:২৯ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই, আশা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্বাচনের আগে আনসারদের জন্য ১৭ হাজার শটগান কেনা হবে : অর্থ উপদেষ্টা আরাকান আর্মির অতর্কিত হামলায় ৩০ মিয়ানমার সেনা নিহত দেড় বছরে এত সাফল্য অর্জন অন্তর্বর্তী সরকারের মতো কেউ করতে পারেনি রাতে স্থায়ী কমিটির সভা শেষে বিএনপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তি যত ক্ষমতাধরই হোক, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়: প্রধান উপদেষ্টা পল্লবী থানা যুবদলের সদস্য সচিবকে গুলি করে হত্যা শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ আদালত ও জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সাবেক আইজিপি মামুন ৩২ নম্বরে টিয়ারগ্যাস-সাউন্ড গ্রেনেড, তিন দিক থেকে ছাত্রদের মিছিল

চা শ্রমিকদের কাত্যায়নী পূজার রঙে কমলগঞ্জ

মৌলভীবাজার, প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৩৭ বার পড়া হয়েছে

ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই ধলাই নদীর তীর জেগে উঠেছিল ভক্তদের পদচারণায়। কুয়াশামাখা বাতাসে ভেসে আসছিল হরিনাম কীর্তনের সুর- ‘হরি বল, হরি বল’। চারপাশ যেন ভক্তিরাশিতে ভরে উঠেছিল। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা বাগানে সনাতনী চা শ্রমিক সম্প্রদায়ের আয়োজনে গঙ্গা স্নান ও পূজার্চনার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হলো ২৫ তম কাত্যায়নী পূজা।

কার্তিক মাসজুড়ে ব্রত পালন শেষে মঙ্গলবার রাত থেকেই বাগানের বিভিন্ন মন্দিরে শুরু হয় হরিনাম কীর্তন। আর বুধবার ভোর রাত থেকেই হাজারো ভক্তরা হীরামতি এলাকার ধলাই নদীর তীরে সমবেত হন গঙ্গা স্নান ও দেবী কাত্যায়নীর পূজায় অংশ নিতে। প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে চলে এই পূজা ও ধর্মীয় উৎসব। নদীর ঘাটে গঙ্গাস্নান শেষে ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হয় খিচুড়ি। ভক্তির সঙ্গে বিনম্রতায় সবাই গ্রহণ করেন সেই প্রসাদ।

পূজাস্থলে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য, শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও ন্যাশনাল টি কোম্পানির পরিচালক মো. মহসিন মিয়া মধু। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মাধবপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক দীপন কুমার সিনহা, মাধবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা পুস্প কুমার কানু, বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

গঙ্গা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি শ্রী লক্ষ্মী নারায়ণ করি (দাদু), সহসভাপতি পার্থ কাহার ও সাধারণ সম্পাদক রাজু করি জানান, ভগবত পুরাণের দশম স্কন্ধের দ্বাবিংশ অধ্যায়ে কাত্যায়নী ব্রতের উল্লেখ রয়েছে। কাহিনী অনুযায়ী, ব্রজের গোপীগণ কৃষ্ণকে পতিরূপে কামনা করে সমগ্র কার্তিক মাসজুড়ে এই ব্রত পালন করেছিলেন। সেই ঐতিহ্য ধরে চা বাগানের নারীরা আজও পালন করেন এই পূজা।

 এক মাস ধরে তারা মশলাবিহীন খিচুড়ি ও সিদ্ধজাত খাবার খেয়ে ব্রত রক্ষা করেন। প্রতিদিন ভোরে ধলাই নদীতে স্নান শেষে নদীর তীরে মাটির তৈরি কাত্যায়নী মূর্তি গড়ে পূজা করা হয় দেবীর উদ্দেশ্যে। এই পূজা শেষে তারা প্রার্থনা করেন- জীবনে শান্তি, সুখ ও পরিবারের মঙ্গল কামনায়। চা শ্রমিকদের জন্য এই উৎসব শুধু ধর্মীয় আচারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি তাদের ঐক্য, আনন্দ ও সাংস্কৃতিক পরিচয়েরও প্রতীক। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই পূজাই যেন তাদের জীবনসংগ্রামের মাঝে ভক্তি ও উৎসবের উজ্জ্বল রঙ ছড়িয়ে দেয়।

বুধবার ভোরের গঙ্গা স্নান আর পূজার্চনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো চা শ্রমিকদের ঐতিহ্যবাহী ২৫তম কাত্যায়নী পূজা। ধলাই নদীর ঢেউয়ে ভেসে গেল ভক্তদের প্রার্থনা- মা কাত্যায়নী, আমাদের জীবন হোক শান্তি ও ভক্তির আলোয় পূর্ণ।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com