বিশ্বের সবচেয়ে বড় বালি ব্যাটারি উদ্বোধন করেছে ফিনল্যান্ড। এই বালি ব্যাটারি সৌর ও বায়ুর মতো পুনরায় ব্যবহারযোগ্য উৎস থেকে তৈরি বিশাল পরিমাণ শক্তি সংরক্ষণ করবে বলে দাবি নির্মাতাদের।
১৩ মিটার উঁচু এই কাঠামোটি ফিনল্যান্ডের দক্ষিণের পৌর এলাকা পোর্নেইনে অবস্থিত। প্রতি ঘণ্টায় একশ মেগাওয়াট পর্যন্ত শক্তি সংরক্ষণ করতে পারে এটি, যা প্রায় ১০ হাজার বাড়িতে একদিনের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
ফিনল্যান্ডের কোম্পানি ‘পোলার নাইট এনার্জি’র তৈরি এ তাপ-সংরক্ষণ ব্যবস্থাটি পরিবেশবান্ধব উৎস যেমন সৌর বা বায়ু শক্তি থেকে তৈরি বাড়তি বিদ্যুৎ দিয়ে বালি গরম করে। কারণ বালি অনেক তাপ শোষণ করে রাখতে পারে।
ফলে বিদ্যুতের দরকার হলে সেই গরম বালির তাপ আবার শক্তি উৎপাদনের জন্য কাজে লাগানো হয়। এ গরম বালি প্রায় পাঁচশ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সপ্তাহের পর সপ্তাহ তাপ বা শক্তি জমিয়ে রাখতে পারে, যতক্ষণ না বিদ্যুৎ গ্রিডে আবার বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়।
এ বালি ব্যাটারি তাপ জমিয়ে রাখে। বিদ্যুতের প্রয়োজন হলে বালি ব্যাটারি থেকে গরম বাতাস ছাড়ে। এই গরম বাতাস ব্যবহার করে পরে তা স্থানীয় এলাকায় গরম পানি বা ঘর গরম রাখার সিস্টেমে ব্যবহৃত হয়।
এ গরম পানি ফিনল্যান্ডের কাঙ্কানপা অঞ্চলের বাড়ি, অফিস, একটি স্কুল ও সুইমিং পুল গরম রাখার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। ওই এলাকার পুরানো কাঠের টুকরা দিয়ে চলা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জায়গা নিয়েছে এ বালি ব্যাটারি। ফলে অঞ্চলটিতে প্রায় ৭০ শতাংশ কার্বন নির্গমন কমেছে।
‘পোলার নাইট এনার্জি’র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা লিসা নাসকালি বলেছেন, “এ সুবিধাটি এখন চালু রয়েছে ও গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে গরম পানি ও ঘর গরম রাখার সুবিধা দিচ্ছে। মানুষ ভাবে গরম রাখার জন্য বিদ্যুৎ ব্যবহার করার খরচ বেশি। তবে আমরা প্রমাণ করেছি, গরম রাখার ব্যবস্থা বিদ্যুৎ দিয়ে চালানো সম্ভব এবং তা সাশ্রয়ী উপায়েই করা যায়, কেবল সাহস করে বিনিয়োগ করাটা দরকার।”
‘পোলার নাইট এনার্জি’ বলেছে, তাদের এ প্রযুক্তি বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার জন্য স্বল্পমূল্যে ও পরিবেশবান্ধব শক্তি সরবরাহ করার বড় সম্ভাবনা তৈরি করেছে, বিশেষ করে যেখানে বাড়তি বা জরুরি বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়।
আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভালকেয়াকোস্কিতে আরেকটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প শুরু হতে যাচ্ছে। ফিনল্যান্ড এখন নতুন শক্তির প্রযুক্তি পরীক্ষার জন্য ভালো জায়গা হয়ে উঠেছে। কারণ নেটোতে যোগ দেওয়ায় রাশিয়া থেকে গ্যাস-বিদ্যুৎ বন্ধ হয়েছে দেশটির। ফলে এখন নিজেই বিকল্প শক্তির পথ খুঁজছে ফিনল্যান্ড।
আগামী ১০ বছরের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে ফিনল্যান্ড। যার মানে, দেশটি যতটা সম্ভব কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ কমিয়ে শূন্যে নামিয়ে আনবে। এরপর ২০৫০ সালের মধ্যে সব ধরনের গ্রিনহাউস গ্যাস ৯০ শতাংশেরও বেশি কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির।
এ বালি ব্যাটারির উদ্বোধনের সময় ফিনল্যান্ডের পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রী সারি মুলটালা বলেছেন, শক্তি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে শক্তি সংরক্ষণ, যেখানে পেট্রোল, কয়লা বা গ্যাস জ্বালিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি কমিয়ে পরিবেশবান্ধব শক্তির দিকে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়া যাচ্ছে।
তথ্য সূত্র- ওয়েব-প্রো-নিউজ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএবি
উপদেষ্টা সম্পাদক : সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, প্রধান সম্পাদকঃ তাজিন মাহমুদ, সম্পাদক: ডা: সাদিয়া হোসেন, যোগাযোগঃ ৪/এ,ইন্দিরা রোড, মাহবুব প্লাজা (২য় তলা) ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ ।মোবাইল: ০১৯৭১-১৯৩৯৩৪, ০১৫৫২-৩১৮৩৩৯, ই-মেইল: [email protected]; [email protected]। ওয়েব:www.bangla71news.com
© All rights reserved © 2018-2025