আগামী মাসে দক্ষিণ কোরিয়া সফরে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে তিনি এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলনে যোগ দেবেন। সফরকালে তার সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গেও বৈঠক হতে পারে ট্রাম্পের।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় এপেক বাণিজ্যমন্ত্রীদের বৈঠকের সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠক হতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্টোবর মাসে গিয়ংজু শহরে অনুষ্ঠেয় এ বৈঠকে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টারা।
কর্মকর্তারা জানান, এপেক বৈঠকের ফাঁকে শি জিনপিং-ট্রাম্পের দ্বিপক্ষীয় আলোচনার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হলেও এখনও চূড়ান্ত কোনও পরিকল্পনা হয়নি। অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের শুরুতে অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলনকে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এর আগে গত মাসে এক ফোনালাপে ট্রাম্প ও তার স্ত্রীকে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানান শি জিনপিং। পাল্টা আমন্ত্রণ জানান ট্রাম্পও, তবে তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া সফরের পরিকল্পনা চলছে এবং সেখানে অর্থনৈতিক সহযোগিতাই হবে আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু। বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ও বেসামরিক পারমাণবিক সহযোগিতাও আলোচনায় আসবে বলে জানান তিনি।
কর্মকর্তারা আরও জানান, সফরের লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রে নতুন বিনিয়োগ নিশ্চিত করা, এটি ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বৈদেশিক সফরগুলোর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। এর আগে সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরেও তিনি এ ধরনের উদ্যোগ নেন।
এদিকে এশিয়া সফরের সময় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গেও ট্রাম্পের বৈঠক হতে পারে, যদিও কিম বৈঠকে যোগ দেবেন কি না তা অনিশ্চিত। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জায়ে মিয়ং সম্প্রতি ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে তাকে এপেক সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান এবং জানান, বৈঠকটি কিমের সঙ্গে আলোচনার সুযোগও তৈরি করতে পারে।
শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, তিনি কিমের সঙ্গে বৈঠকে আগ্রহী। তিনি বলেন, “আমি সেটা করব। আমরা কথা বলব। কিম আমার সঙ্গে দেখা করতে চায়। আমরাও তাকে দেখার অপেক্ষায় আছি এবং সম্পর্ক আরও ভালো করব।”
তবে এ সফরটি হচ্ছে এমন এক সময়ে, যখন ট্রাম্পের সঙ্গে শি জিনপিং এবং কিম— দুই নেতার সম্পর্কই টানাপোড়েনে রয়েছে। সম্প্রতি বেইজিংয়ে শি জিনপিংয়ের আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নেন কিম, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই ঘটনায় একাধিকবার সমালোচনা করেন ট্রাম্প, যদিও প্রায়ই তিনি দাবি করেন, এ নেতাদের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো।
কুচকাওয়াজ চলাকালে সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, “প্রেসিডেন্ট শি এবং চীনের জনগণকে অভিনন্দন। পুতিন ও কিমকেও আমার শুভেচ্ছা পৌঁছে দেবেন— যখন আপনারা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।”
পরদিন এক পোস্টে শি জিনপিং, পুতিন ও মোদির একটি ছবি শেয়ার করে তিনি লেখেন, “মনে হচ্ছে আমরা ভারত ও রাশিয়াকেও চীনের হাতে হারালাম। আশা করি তাদের ভবিষ্যৎ সমৃদ্ধ হবে।”
ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প কুচকাওয়াজকে ‘দর্শনীয় অনুষ্ঠান’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “তারা জানত আমি দেখব, আমিও দেখেছি। আমার সবার সঙ্গে সম্পর্কই ভালো। আগামী এক-দুই সপ্তাহে বোঝা যাবে আসলেই সম্পর্ক কতটা ভালো।”
এদিকে শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সম্ভাব্য এ বৈঠকটি হচ্ছে এমন এক সময়, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বাণিজ্যিক টানাপোড়েনের মধ্যে আলোচনায় বসেছে। চলতি বছরের এপ্রিলে ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। পাল্টা পদক্ষেপে চীনও মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক বসায়।
চলমান আলোচনা এগিয়ে নিতে ট্রাম্প গত মাসে এক নির্বাহী আদেশে শুল্কহার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত রাখেন।
সূত্র: এনডিটিভি, সিএনএন
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ
উপদেষ্টা সম্পাদক : সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, প্রধান সম্পাদকঃ তাজিন মাহমুদ, সম্পাদক: ডা: সাদিয়া হোসেন, যোগাযোগঃ ৪/এ,ইন্দিরা রোড, মাহবুব প্লাজা (২য় তলা) ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ ।মোবাইল: ০১৯৭১-১৯৩৯৩৪, ০১৫৫২-৩১৮৩৩৯, ই-মেইল: [email protected]; [email protected]। ওয়েব:www.bangla71news.com
© All rights reserved © 2018-2025