ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের পানির কারণে কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদীর পানি প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। এতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পদ্মার তীরবর্তী চরাঞ্চল রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্লাবিত হয়েছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, স্কুল ও ফসলি জমি। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের মাঝে চাল বিতরণ করা হচ্ছে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা পরিমাপ করা হয় ১২.৯৪ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমা (১৩.৮০ সেমি.) থেকে কিছুটা নিচে। গড়াই নদীর পানির উচ্চতা পরিমাপ করা হয় ১২.৭৫ সেন্টিমিটার, যা এই পয়েন্টের বিপৎসীমা। আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রতিদিনই পানি বাড়ছে।
এতে দৌলতপুর উপজেলার অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন চরের ১৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। নদীর তীরবর্তী বহু রাস্তাঘাট ও স্কুল প্লাবিত হয়েছে।
চরাঞ্চলের ফসলি মাঠ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং গোখাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক পরিবার তাদের গরু-মহিষ নিয়ে নিরাপদে সরে যাচ্ছে।
চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে। চরের ধান, মরিচ ও পাট ডুবে গেছে। ঘরবাড়িতে পানি উঠে গেছে।
হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় ওইসব বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল বলেন, নদীর পানি বাড়ায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন ফসল বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছি। পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে এবং তাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ২০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা মরিচা, রামকৃষ্ণপুর, ফিলিপনগর ও চিলমারী ইউনিয়নের মানুষের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।
নদীর পানি বাড়ার কারণে বহু রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও স্কুল প্লাবিত হয়েছে। ১৬টি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হবে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, প্রতিদিনই পানি বাড়ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আমরা নজরদারি বাড়িয়েছি এবং এ বিষয়ে আমরা সজাগ আছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করছেন।
বাংলা৭১নিউজ/এবি
উপদেষ্টা সম্পাদক : সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, প্রধান সম্পাদকঃ তাজিন মাহমুদ, সম্পাদক: ডা: সাদিয়া হোসেন, যোগাযোগঃ ৪/এ,ইন্দিরা রোড, মাহবুব প্লাজা (২য় তলা) ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ ।মোবাইল: ০১৯৭১-১৯৩৯৩৪, ০১৫৫২-৩১৮৩৩৯, ই-মেইল: [email protected]; [email protected]। ওয়েব:www.bangla71news.com
© All rights reserved © 2018-2025