শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ

উগ্রবাদ যাতে না বাড়ে সজাগ থাকতে হবে

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১ আগস্ট, ২০২৫
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, একজন মায়ের চোখে যেমন বাংলাদেশ হওয়া দরকার, তেমন একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে আগামী জাতীয় নির্বাচন দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশে যাতে আর কোনোভাবেই আর কোনো দিন ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ, চরমপন্থা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, এ ব্যাপারে বিশেষ করে নারীসমাজকে অত্যন্ত সতর্ক এবং সজাগ থাকতে হবে। এজন্য আমি সমগ্র বাংলাদেশের মা-বোনদের আহ্বান জানাই।

গতকাল জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই আহ্বান জানান। জুলাই-আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীর অবদান শীর্ষক’ এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস। অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা মেডেল প্রদান করা হয়। এ ছাড়া ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের অবদানের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, আসুন, নারী-পুরুষ-শিশু, ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবার জন্য শহীদদের কাঙ্ক্ষিত একটি ইনসাফভিত্তিক গণতান্ত্রিক নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি। সবার জন্য একটি নিরাপদ, গণতান্ত্রিক, মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার চলমান অভিযাত্রায় অতীতের মতো আগামী দিনেও আমরা আমাদের মা-বোনদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সমর্থন আশা করি দৃঢ়ভাবে।

ফ্যাসিবাদ আন্দোলনে আমার মা-ও এক সন্তানকে হারিয়েছেন : তারেক রহমান বলেন, ‘বিগত দেড় দশকেরও বেশি সময় ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সময় অনেক মা তার প্রিয় সন্তান হারিয়েছেন। আমার মা-ও (বেগম খালেদা জিয়া) তাঁর এক সন্তানকে (আরাফাত রহমান কোকো) হারিয়েছেন আপনাদেরই মতো।

বহু স্ত্রী তার প্রিয়তম স্বামীকে হারিয়েছেন, বোন তার ভাইকে হারিয়েছেন, অনেক মা বহুভাবে নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছেন। অনেক পরিবারের পারিবারিক বন্ধন ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।

আজ শহীদ আর স্বজন হারানোর অসংখ্য মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনমিয়ে শেষ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদ অবসানের পর আমাদের সবার সামনে শিশু-নারী-পুরুষ, ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে একটি মানবিক বাংলাদেশ গঠনের সুযোগ সামনে এসেছে। একে কাজে লাগিয়ে শহীদদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গঠনের জন্য আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামী দিনে নারীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নারী প্রধানদের নামে হবে ফ্যামিলি কার্ড : তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশে পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি। এর মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলোর মধ্যে থেকে আমরা সামনের দিনগুলোতে সুযোগ এলে প্রথম পর্যায়ে কমপক্ষে ৫০ লাখ প্রান্তিক পর্যায়ে যে পরিবার আছে, তাদের কাছে আমরা ফ্যামিলি কার্ড চালু করব।

ইনশাল্লাহ আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে পরিবারের নারীপ্রধানের নামে কিন্তু এই ফ্যামিলি কার্ডটি আমরা ইস্যু করব। এর লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রান্তিক পরিবারগুলোকে প্রতি মাসে রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক অথবা প্রয়োজনীয় খাদ্যসহায়তা প্রদান করা হবে। আমরা আশা করছি এই ধরনের উদ্যোগে পরিবার এবং সমাজে একদিকে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ঘটাবে। অপরদিকে পরিবারগুলোর সামনে ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার সুযোগও তৈরি হবে।

নারী উন্নয়নে বিএনপি : সভায় নারীদের উন্নয়নে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে, দেশের অর্ধেকসংখ্যক নারীকে রাষ্ট্র এবং রাজনীতির মূলধারার বাইরে রেখে কখনোই আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন করতে পারব না, সম্ভব নয়। নারীশক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে শুধু বাংলাদেশ নয় কোনো রাষ্ট্রই এগিয়ে যেতে পারে না।

সে কারণে নারীশক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে বিএনপি সব কর্মপরিকল্পনা সাজিয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের সব দেশে নারীদের জন্য শিক্ষা-চাকরি-ব্যবসাসহ সব সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত। বিশ্বায়নের এই সময়ে শুধু নারী পুরুষ ভেদাভেদ না করে সবাইকে শিক্ষা-দীক্ষায় কমপক্ষে কর্মদক্ষ করে গড়ে তোলা প্রয়োজন অত্যন্তভাবে জরুরি।

নারীদের জন্য শিক্ষা ও চাকরি বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি নারীদের শিক্ষা এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা গেলে নারীর প্রতি বৈষম্যের পাশাপাশি পারিবারিক সহিংসতাও রোধ করবে বা রোধ করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। সে কারণেই বিএনপির স্লোগান ‘ক্ষমতায়িত নারী শক্তি, পরিবারের মুক্তি’।

মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, তাহসিনা রুশদীর লুনা, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, শহীদ পরিবারের মধ্যে সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জনপ্রিয় টক শো উপস্থাপক হাসিনা আখতার।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com