উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করছে। এতে তিস্তা অববাহিকায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে শতাধিক চরের মানুষের মধ্যে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে যেতে শুরু করেছে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ফসলের খেত।
গতকাল তিস্তা ব্যারাজ কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, উজানের ঢলে রবিবার ভোর থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারাজের ৪৪ গেট খুলে রাখা হয়েছে।
উজানের ঢল অব্যাহত থাকায় পানি যে কোনো সময় বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। আমরা সতর্ক আছি। চরের মানুষকে আমরা সতর্ক থাকতে বলেছি।
তিস্তা নদী এলাকার বাসিন্দা কুদ্দুস মিয়া বলেন, আমরা নদী পাড়ের মানুষ সবসময় আতঙ্কে থাকি। বন্যা, খরা নদী ভাঙনের সঙ্গে যুদ্ধ করে আমাদের জীবন অতিবাহিত হয়। বিশেষ করে ভারতের উজানে যে গেট রয়েছে তার নাম গজলডোবা। এটি পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
খরা মৌসুমে গেটটি বন্ধ রাখা হয় আর বর্ষা এলেই থেমে থেমে পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদেরকে ভাসিয়ে দেয় ভারত। কারণ বৃষ্টির পানিতে বন্যা হয় না, বন্যা হয় ভারতের উজানের পানিতে। লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান বাদল বলেন, উজানের ঢলে চরের অনেক ফসল ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে।
তিস্তা সেচ খালের বাঁধ ভেঙে বিস্তৃীর্ণ এলাকা প্লাবিত
নীলফামারী প্রতিনিধি জানান : নীলফামারী জেলা সদর উপজেলার তিস্ত সেচ প্রকল্পের বামতীর বাঁধ ভেঙে রোপা আমনের খেতসহ বিস্তৃীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদরের কালিতলা ভাট্টাতলি নামক স্থানে বামতীর বাঁধ ভেঙে যায়।
এতে তিস্তার দিনাজপুর সেচ খালের চাঁদেরহাট স্লুইচ গেট থেকে নীলফামারী সদর, দিনাজপুরের খানসামা ও চিরিরবন্দর এলাকায় খরিপ-২ মৌসুমের সেচের পানি প্রদান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ (পাউবোর) নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। ধারণা করা হচ্ছে রাতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পাড়ের মাটির ওপর চাপ পড়ে যায়।
এতে ইঁদুরের গর্তে পানি ঢুকে পাড়ের ৩০ ফিট বিধ্বস্ত হয়। প্রাথমিকভাবে সেখানে জিও ব্যাগ ও মাটি দিয়ে ভাঙা অংশে মেরামত করা হচ্ছে। কালিতলা ভাট্টাতলি গ্রামের কৃষক ইউনুছ আলী বলেন, গত কয়েক দিন ধরে বৃষ্টিপাত না থাকায় সেচের পানির চাহিদা বৃদ্ধি পায়।
ফলে দিনাজপুর সেচ ক্যানেলে পানি চাপ বেড়ে যায়। ওই সেচের পানি দিয়ে কৃষকরা রোপা আমন চারা রোপণ করছিল। শনিবার রাতে এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার ফলে ইঁদুরের গর্তে ক্যানেল পাড়ের বাঁধে ফাটল ধরে।
গতকাল সকালের দিকে হঠাৎ করে পানির চাপে এটি বিধ্বস্ত হয়। এতে এলাকার প্রায় ৩০ একর রোপা আমন খেত এবং ঢ্যাঁড়শ, মরিচ, বিভিন্ন শাক-সবজির খেত পানিতে তলিয়ে গেছে। অপর কৃষক মোজাম্মেল আলী বলেন, আমার ৫ বিঘা জমির রোপা আমন খেত পানির নিচে ডুবে গেছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ
উপদেষ্টা সম্পাদক : সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, প্রধান সম্পাদকঃ তাজিন মাহমুদ, সম্পাদক: ডা: সাদিয়া হোসেন, যোগাযোগঃ ৪/এ,ইন্দিরা রোড, মাহবুব প্লাজা (২য় তলা) ফার্মগেট, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ ।মোবাইল: ০১৯৭১-১৯৩৯৩৪, ০১৫৫২-৩১৮৩৩৯, ই-মেইল: [email protected]; [email protected]। ওয়েব:www.bangla71news.com
© All rights reserved © 2018-2025