যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে ডেমোক্রেটিক পার্টির মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন স্টেট অ্যাসেম্বলির সদস্য জোহরান মামদানি। প্রথম দফার নির্বাচনে নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী এই তরুণ রাজনীতিক।
মামদানির জয়কে নিউইয়র্কের রাজনীতিতে বড় চমক হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। বিশেষ করে, ফিলিস্তিনিদের প্রতি তার প্রকাশ্য সমর্থন ও ইসরায়েলের সমালোচনা ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বের বড় অংশের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি করে। এ কারণেই তার এই জয়কে একটু আলাদাভাবেই দেখা হচ্ছে।
প্রাইমারি নির্বাচনের ভোটাভুটি হয় গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) রাতে। ফলাফলে দেখা গেছে, মামদানি ৪৩ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন যেখানে কুমো পেয়েছেন ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট।
নির্বাচনের পর বুধবার (২৫ জুন) সকালে সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে মামদানি বলেন, নেলসন ম্যান্ডেলার ভাষায় বলতে গেলে- যেকোনো কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেটা অসম্ভব বলে মনে হয়। আমার বন্ধুরা, আমাদের প্রথম কাজ সম্পন্ন হয়েছে ও আপনারাই এটি করেছ। নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে আপনাদের মনোনীত প্রার্থী হতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি।
মামদানির জন্ম উগান্ডায়। তার বয়স যখন সাত বছর, তখন তার পরিবার নিউইয়র্কে চলে আসে। তার নির্বাচনী প্রচারে দেখা গেছে উর্দু ভাষার ভিডিও, বলিউড সিনেমার ক্লিপ। এমনকি, তিনি স্প্যানিশ ভাষায় ভাষণও দিয়েছেন।
নির্বাচনী প্রচারের সময় মামদানি কিছু ভিডিওর জন্য ভাইরাল হন। ওই সব ভিডিওতে ট্রাম্পকে ভোট দেওয়া ভোটারদের মুখোমুখি হয়ে তাদের এ অবস্থানের পেছনের কারণ জানার চেষ্টা করেন তিনি। প্রশ্ন করেন, কী কারণে তারা ট্রাম্পকে ভোট দেন ও কী করলে তারা ডেমোক্র্যাটদের দিকে ফিরবেন।
মামদানির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বেশ উচ্চাভিলাষী। এসবের মধ্যে আছে, নগরবাসীর জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস, সর্বজনীন শিশুযত্ন, সরকারি ভর্তুকিপ্রাপ্ত বাসার ভাড়া বৃদ্ধি করতে না দেওয়া ও নগর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মুদিদোকান চালানো। এসবের অর্থ জোগান দিতে ধনীদের ওপর নতুন কর আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
বিবিসিকে তিনি বলেন, এই শহরে প্রতি চারজনের একজন দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছেন। পাঁচ লাখ শিশু রাতে না খেয়ে ঘুমায়। এই শহরের বিশেষত্বটাই এখন হুমকির মুখে। আমরা সেই হুমকি থেকে নিউ ইয়র্ক সিটিকে রক্ষা করতে চাই।
মামদানির প্রচারে তাকে সমর্থন দিয়েছেন কংগ্রেস সদস্য আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্টেজ ও সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সও। দুজনই ডেমোক্র্যাটিক ও সমাজতান্ত্রিক।
সূত্র: বিবিসি, সিএনএন