বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: বর্ষা মৌসুমকে কাজে লাগিয়ে ১৫আগস্টের আগে বাংলাদেশ থেকে জঙ্গিরা ভারতে প্রবেশ করতে পারে। বিশেষ করে পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে প্রবেশের আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী থেকে এমনই ’ইনপুট’পেয়ে সীমান্তবর্তী এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার লালবাগ এবং ডোমকল মহকুমার সীমান্তবর্তী এলাকায় সবচেয়ে বেশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
বর্ডারের বেশ কিছু ‘সেন্সেটিভ’ পয়েন্টে বাড়তি বিএসএফও মোতায়েন করা হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ষা মৌসুমে জঙ্গিরা এরাজ্যে সবচেয়ে বেশি ঢোকার চেষ্টা করে। পদ্মায় জল বেড়ে যাওয়ায় সব জায়গায় বিএসএফের নজরদারি চালানো সম্ভব হয় না। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে জঙ্গিরা এরাজ্যে ঢোকার চেষ্টা করে। সম্প্রতি পদ্মায় কলার ভেলা ভাসতে দেখা যাওয়ায় বিএসএফ আরও বেশি সতর্ক হয়েছে। বেশিরভাগ সময় কলার ভেলায় ভাসিয়ে গোরু পাচার করা হয়। কিন্তু রাতের অন্ধকারে ওপার থেকে কলার ভেলায় চড়ে জঙ্গিরা এপারে চলে আসতে পারে বলে গোয়েন্দাদের আশঙ্কা।
তাদের কাছে থেকে সতর্কবার্তা পেয়ে কলার ভেলাগুলির দিকে নিরপত্তারক্ষীরা বাড়তি দৃষ্টি দিয়েছে। ডোমকলের কাহারপাড়া বর্ডার দিয়ে এভাবে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা বেশি। সম্প্রতি ওই এলাকায় বেশ কয়েকজনকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করা হয়। যদিও তেমন কিছু না পাওয়া যাওয়ায় তাদের জেরা করেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এক আধিকারিক বলেন, প্রতিবারই ১৫আগস্টের আগে গোয়েন্দারা বেশ কিছু ইনপুট দেয়। তবে এবার একটু বেশি সতর্কতা বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। পদ্মার জল বাড়ার সঙ্গে গোরু পাচারকারীরাও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা বিভিন্ন কৌশলে গোরু পাচার করছে। কয়েকদিন আগে বিএসএফকে ভয় দেখানোর জন্য গোরুর গলায় তারা সকেট বোমার খোল বেঁধে দেয়। তাদের ধারণা ছিল ভয় পেয়ে বিএসএফ হয়তো পিছু হটবে। তদন্তকারীদের দাবি, এই কৌশল জেলায় এর আগে পাচারকারীরা কোনও দিনই নেয়নি। জঙ্গিরা এই পাচারকারীদের ঢাল করেই এরাজ্যে ঢোকার চেষ্টা করছে।
এক আধিকারিক বলেন, এই সময় নদীর ওপারে থাকা চরে বহু লোকজন চাষের কাজ করতে যান। তাঁদের পরিচয়পত্র দেখার ক্ষেত্রে আরও কড়াকড়ি করা হয়েছে। এছাড়া লালবাগ মহকুমার ভগবানগোলা, রানিতলা এবং লালগোলা থানা এলাকার বর্ডারগুলিতেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এই তিনটি বর্ডার দিয়ে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রবেশ হয়। বিভিন্ন সময় এই এলাকাগুলি থেকে ২০০ বেশি’র বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, প্রায় ২০০কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বাংলাদেশ বর্ডার রয়েছে। অধিকাংশ এলাকায় কাঁটাতার থাকলেও বেশ কিছু এলাকা অরক্ষিত রয়েছে। গোয়েন্দারা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, বর্ডারের বিভিন্ন এলাকা বিভিন্নভাবে ব্যবহার হয়। জঙ্গিপুর মহকুমার বর্ডার এলাকাগুলি দিয়ে মূলত বেশি গোরু পাচার হয়। ডোমকল এবং লালবাগ মহকুমার বর্ডার এলাকা দিয়ে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রবেশকারীরা ঢোকে। এপারে তাদের দালালরা আশ্রয় দেয়। সেকারণে সীমান্তবর্তী এলাকার গ্রামগুলিতেও নজরদারি চলছে। বাইরের কাউকে ঘুরতে দেখা গেলেই তাদের পরিচয়পত্র দেখতে চাইছেন আধিকারিকরা।
বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: অনলাইন বর্তমান