বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক : ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিজান রেস্তোরার হামলার প্রেক্ষাপটে সিরিয়া থেকে এমন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে কথিত ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠী, যেখানে বক্তারা বাংলায় কথা বলছেন।
বিশ্বজুড়ে জঙ্গি সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করে এমন সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্সের ওয়েবসাইটে মঙ্গলবার কোন এক সময়ে ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সিরিয়ার রাক্কা প্রদেশ থেকে বাংলাদেশি আইএস যোদ্ধারা গুলশানের হামলাকারীদের প্রশংসা করছে এবং বাংলাদেশে এরকম আরো হামলা চালানোর হুমকি দিচ্ছে।
প্রায় ছয় মিনিটের এই ভিডিওটির শুরুতেই ছিল ঢাকা-সহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে কথিত আইএসের দাবী করা হামলা সমূহের বিবরণ।
ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজছিল একটি আরবি ভাষার সঙ্গীত, যে সঙ্গীতটি প্রায়শই আইএসের বিভিন্ন ভিডিওর আবহ সঙ্গীত হিসেবে ব্যাবহার করা হয়।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ভিডিওতে এক তরুণের আবির্ভাব হয়। তার গায়ে শার্ট, মাথায় কান ঢাকা কালো টুপি, কাঁধে ব্যাগ।
কোন এক শহরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছে সে, বিদেশী কোন শহর। সে বাংলায় কথা বলছিল।
সে বাংলাদেশের সরকার ও কর্মচারীদের হুমকি দিচ্ছিল এবং বলছিল এবার তারা যে ‘জিহাদ’ প্রত্যক্ষ করেছে এর আগে সেটা তারা দেখেনি।
তার বক্তৃতার শেষ অংশটি ছিল ইংরেজিতে। এখানে সে বাংলাদেশের হামলাকে ‘গতকালের’ হামলা বলে উল্লেখ করছিল।
যার ফলে মনে করা হচ্ছে ভিডিওটি গুলশান হামলার পরদিন, অর্থাৎ শনিবার সিরিয়া সময় সন্ধ্যের পর ধারণ করা হয়েছে।
ভিডিওতে বক্তাদের পেছনে প্রচুর যানবাহন চলতে দেখা যাচ্ছিল।
এই তরুণের বক্তব্যের পর আরো দুজন তরুণের বক্তৃতা ছিল ভিডিওতে। তারাও বাংলায় বক্তব্য দিচ্ছিল।
দ্বিতীয় ব্যক্তি ছিল পাঞ্জাবী পরা। তার মুখ ছিল কাপড়ে ঢাকা।
তৃতীয় তরুণটি ছিল টিশার্ট পড়া। তার মাথাতেও ছিল কান ঢাকা কালো টুপি। কাঁধে ব্যাগ। মুখে ঘন কালো দাড়ি।
সে গুলশানের হামলাকারীদের প্রশংসা করছিল।
এই ভিডিওটি এখন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে বহুবার শেয়ার হচ্ছে।
এরই মধ্যে যে দুজনের চেহারা দেখা গেছে তাদের চিনতে পারছে কেউ কেউ।
প্রথম বক্তাকে যারা চিনতে পারছেন তারা বলছেন, সে ছিল বাংলাদেশের একটি বেসরকারি মোবাইল ফোন কোম্পানির চাকুরে এবং সঙ্গীতশিল্পী।
বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত একটি সঙ্গীত বিষয়ক রিয়েলিটি শোয়ের মাধ্যমে সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল তার।
সঙ্গীতাঙ্গনের দু-একজন এবং ওই মোবাইল ফোন কোম্পানিটির কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে এই দাবির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যাচ্ছে।
তৃতীয় তরুণটির পরিচয় সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
প্রথমজন দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছে। সে তিন বছর ধরে চাকরি করছে না আর।
এই সময়ের মধ্যে সে কোন সঙ্গীতের অনুষ্ঠানে যোগ দেয়নি, কোনও অ্যালবামও তার বের হয়নি বলে জানাচ্ছেন ঢাকার একজন সঙ্গীতশিল্পী।
একটি সূত্র জানাচ্ছে সে এক বছর আগে সপরিবারে সিরিয়া চলে যায়।
বাংলা৭১নিউজ/সূত্র:বিবিসি