বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা : সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই নগরীর যান্ত্রিকতা ফেলে সবাই ছুটছেন আপন ঘরের পানে নাড়ির টানে। প্রিয়জনদের সঙ্গে মিলিত হবার বাসনায় সব ঝক্কি-ঝামেলা হাসিমুখে বরণ করে নিচ্ছে যাত্রীরা। এজন্য প্রস্তুতি ছিল এক সপ্তাহ আগে থেকেই। অন্যান্য বারের মতো এবার ভোগান্তি ছিল না আগাম টিকিটি প্রাপ্তিতে।
তবে প্রথম বারের মতো ঈদে একটানা নয় দিন ছুটি থাকায় খুব একটা তাড়া ছিল না। গত কয়েক দিন ধরে যে যার মতো করে পরিবার পরিজনকে ট্রেন, বাসে, লঞ্চে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ কর্ম দিবসের দুপুরের পর থেকেই পাল্টে যেতে থাকে বাস স্টেশন, লঞ্চঘাট ও রেল স্টেশনের চিত্র।
গতকাল বাস, লঞ্চে ভোগান্তির কথা না শোনা গেলেও ট্রেন নিয়ে ছিল অল্পস্বল্প অভিযোগ। ঢাকা-রাজশাহীগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ছেড়ে যায় প্রায় পৌনে দুই ঘন্টা দেরিতে। এ নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে কিছু ক্ষোভ দেখা যায়। তবে অন্যান্য ট্রেন নির্ধারিত সময়েই ছেড়ে গেছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রতি বছর যানজটের কারণে ঈদে ঘরমুখো মানুষের দুর্ভোগের ইয়ত্তা থাকে না। শত ভোগান্তি সহ্য করে তবু মানুষ বাড়ির পথে পা বাড়ায়। স্বজনদের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করে। তবে অন্যান্যবারের চেয়ে এবারের ঈদে যানজটের ভোগান্তি অনেকাংশেই কমে আসবে এবং ঘরমুখো মানুষের যাত্রা আগের যে কোনো সময়ের থেকে স্বস্তিদায়ক হবে।
রেলসূত্র জানায়, কয়েকটি বগি সংযোগের জন্য ট্রেনটি প্রায় এক ঘন্টা দেরিতে রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীর চাপ বেশি হওয়ায় ট্রেনটি কমলাপুরে পৌঁছে বিলম্বে। এ কারণে ছাড়তেও কিছুটা বিলম্ব হয়।
হানিফ পরিবহনের জিএম মোশারফ হুসাইন বলেন, আগাম টিকিটি বিক্রি শেষ হলেও গত কয়েক দিন যাত্রীর খুব চাপ ছিল না। কিন্তু গতকাল দুপুরের পর থেকেই পাল্টে যেতে থাকে গাবতলী বাস টার্মিনালের চিত্র। বিশেষ করে দূরপাল্লার প্রতিটি বাসেই ছিল ভিড়। হঠাৎ ভিড় বাড়ায় টার্মিনালে দায়িত্বরত পুলিশকেও কিছুটা হিমশিম খেয়ে হয়।
পথে ভোগান্তি হবে কীনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দিনে খুব একটা সমস্যা হবে না। সমস্যা হবে রাতের বেলা। কারণ দিনে পুলিশ ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলেও রাতের বেলা তাদের খুব একটা দেখা যায় না। একারণে যে যার মতো করে গাড়ি চালাবার চেষ্টা করে। ফলে সড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজট হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তিনি রাতেও মহাসড়কে অতিরিক্ত পুলিশ রাখার অনুরোধ জানান।
মিরপুর টেকনিক্যালে সাকুরা পরিবহন কাউন্টারের ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের নয় দিন ছুটির কারণে গতকাল থেকেই সবাই ঢাকা ছাড়ছে। সকালের থেকে, বিকেল এবং রাতে যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ ছিল। অপর দিকে মহাখালী, গুলিস্তান ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালেও দুপুরের পর থেকে ভিড় বাড়তে থাকে। শুধু দূরপাল্লার বাসই নয়। ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে চলাচলরত বাসগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়।
সচিবালয়ের কর্মচারী মোস্তাক আহমেদের সঙ্গে কথা হয় সোহাগ পরিবহনের মালিবাগ কাউন্টারে। তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে যাচ্ছেন খুলনায়। তিনি বলেন, এবারই প্রথম লম্বা ছুটি পেয়েছি, তাই বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে পারবো।
রাজধানীর কোতয়ালী থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, সদরঘাটে লঞ্চ টার্মিনালে অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা বেশি ভিড় ছিল। তবে খুব ভিড় ছিল তা বলা যাবে না। তবে তিনি বলেন, আজ যাত্রীর চাপ বাড়বে।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস