বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক : জাতীয় সংসদ ভবন ও তার আশপাশের এলাকার ১১৫টি ‘আনবিল্ড’ নকশা ও ৮৫৩টি নকশার কপি আনতে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার আর্কিটেকচারাল আর্কাইভ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ।
সরকারের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফরে এই চুক্তি হয় বলে প্রতিনিধি দলের নেতা সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইপিএ) গোলাম কিবরিয়া জানান।
নকশা যাচাই-বাছাইসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভেনিয়ার আর্কিটেকচারাল আর্কাইভ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করার পর শনিবার সকালে ঢাকার উদ্দেশে নিউ ইয়র্ক ছাড়েন এ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন- স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসির, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মো. মনিরুজ্জামান, গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব এবং স্থাপত্য অধিদপ্তরের সহকারী স্থপতি সাইকা বিনতে আলম।
জাতীয় সংসদ ভবনের চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনি নির্মাণ নিয়ে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে সংসদ ভবনের স্থপতি লুই আই কানের প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সংসদ ভবনের মূল নকশা আনার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পর লুই কানের প্রতিষ্ঠান ডেভিড অ্যান্ড উইজডম এর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে স্থাপত্য অধিদপ্তর।
লুই কানের নকশাগুলো পেনসিলভেনিয়া ইউনিভার্সিটির আর্কিটেকচারাল আর্কাইভে থাকায় সরকারের পক্ষ থেকে সেখানেও যোগাযোগ করা হয়। ইতোমধ্যে সংসদ ভবনের অঙ্কিত বর্ণনামূলক তালিকা (ড্রয়িং ইনভেনটরি লিস্ট) যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে এসেছে বলে গত জানুয়ারিতে সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন।
এরপর গত মার্চে এক সংবাদ সম্মেলন করে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলকে নকশার বিষয়ে মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর কথা জানিয়েছিলেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
তবে প্রতিনিধি দলটি ৭ জুন যুক্তরাষ্ট্র সফর শুরু করে বলে জানান দলের নেতা অতিরিক্ত সচিব গোলাম কিবরিয়া।
তিনি বলেন, “কিছু নকশা যাচাই-বাছাই করার প্রয়োজনে ১৬/১৭ দিন অবস্থান করতে হলো। তবে আমাদের এই আসাটা সফল হয়েছে বলতে পারি।”
সফরে লুই আই কানের প্রতিষ্ঠান ডেভিড অ্যান্ড উইজডমের শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে জানিয়ে কিবরিয়া বলেন, “জাতীয় সংসদ ভবনের নকশা তৈরিসহ স্থপতি লুই আই কানের সঙ্গে যোগাযোগের কিছু কপিও দেখেছি, ফটোগ্রাফিও রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে সাত হাজার পৃষ্ঠার মতো হবে। আমরা তাদেরকে অনুরোধ জানিয়েছি ফটোকপি করে বাংলাদেশে পাঠানোর জন্যে।”
ওইসব নকশায় জাতীয় সংসদ ভবনের সাথে মিল রেখে আশপাশে কী ধরনের ডিজাইন অনুসরণ করে ভবন নির্মাণ করা হলে পুরো এলাকার সৌন্দর্য আরও বাড়বে সে ধরনের দিক-নির্দেশনাও রয়েছে বলে জানান কিবরিয়া।
সংসদ এলাকায় নকশা বহির্ভূত হিসেবে ইতোমধ্যেই কয়েকটি ভবন নির্মাণ এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরকে মাজারে পরিণত করাসহ বেশ ক’জন রাজনীতিকের কবর রয়েছে।
এখন সেগুলোর ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে চাইলে এই অতিরিক্ত সচিব বলেন, “শেরে বাংলা নগরের সৌন্দর্যকে অটুট রাখার স্বার্থে কী করা প্রয়োজন, সে সিদ্ধান্ত দেবেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা নেই।”
বাংলা৭১নিউজ/এসএইস