বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় ফণীর সতর্কতা হিসেবে সারাদেশে নৌযান চলাচলে আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তাই বহুদিন পর দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লঞ্চ টার্মিনাল সদরঘাটে দেখা গেল প্লাটফর্ম তথা পন্টুন ঘেঁষে দাঁড়িয়ে নেই কোনো লঞ্চ ও স্টিমার। এমনকি নৌকার দেখাও মিলছে না।
পুরো বন্দর প্রায় ফাঁকা দেখা যায়। আজ কোনো লঞ্চ আসেনি, ছেড়েও যায়নি। তবে আগে থেকেই বন্দরে যেসব লঞ্চ ছিল সেগুলোকে ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। যে কারণে সদরঘাটে যাত্রীও আসেনি। ঘাটে প্রবেশের প্রায় সবকটি গেটে ঝুলছে তালা। শনিবার সদরঘাটে সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এ বিষয়ে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের অনুসন্ধান কক্ষে বসে থাকা মো. শাহেদ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে সারাদেশে নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাই কোনো ধরনের নৌযান চলাচল করছে না। এ জন্য তারা একটি বাদে ঘাটের অন্য প্রবেশ পথে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। যেটি খোলা রাখা হয়ে ওটা দিয়ে ঘাট সংশ্লিষ্টরা যাতায়াত করছে।’
সরেজমিন ঘুরে টার্মিনালের ভিতরে সাধারণ যাত্রীদের অপেক্ষা কিংবা বাইরেও কোনো যাত্রীকে অপেক্ষায় থাকতে দেখা যায়নি। তবে কতিপয় ভিক্ষুক ও ভাসমান মানুষজনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে শাহেদ বলেন, ‘নৌযান চলাচল বন্ধের বিষয়টা অনেক আগে থেকেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই যাত্রী সদরঘাটে আসছে না। কারণ লঞ্চ এমনি একটি পরিবহন যেখানে জরুরির কেনো অপশন নেই।’
এরপর টার্মিনালের প্লাটফর্ম তথা পন্টুন এলাকায় গিয়ে পুরো ফাঁকা দেখা যায়। কোনো লঞ্চও নেই, যাত্রীও নেই। তবে পন্টুনের দুই প্রান্তে আগে থেকে টার্মিনালে অবস্থান করা কয়েকটি লঞ্চ থাকতে দেখা যায়।
দুপুর ১২টার দিকে পন্টুন এলাকায় লঞ্চ আছে কিনা দেখার জন্য পরিদর্শনে নামে ইন্সপেক্টর ইনচার্জ হুমায়ন কবিরের নেতৃত্বে একটি পরিদর্শন দল। পন্টুন এলাকার মধ্য অঞ্চলের অধিকাংশেই কোনো লঞ্চ নেই। তবে দুই প্রান্তে কয়েকটি লঞ্চ দেখা গেছে।
এ বিষয়ে হুমায়ন কবির বলেন, ‘ঝড়ের সময় পন্টুনে লঞ্চ থাকলে সমস্যা হতে পারে। তাই পন্টুনে লঞ্চ রাখতে দেয়া হয়নি। তারপরও কয়েকটি লঞ্চ রয়ে গেছে। তাদের সরিয়ে নিতে বললাম। কিন্তু তারা বলেছেন, তারাও বিপদে রয়েছেন। তার কোথায় লঞ্চ রাখবেন।’
ইন্সপেক্টর ইনচার্জ হুমায়ন কবির আরও বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত সাগরে বিপদ সংকেত না কমছে ততক্ষণ পর্যন্ত নৌচলাচল বন্ধ রাখা হবে। বিপদ সংকেত কমে আসলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার করার পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। তারপর থেকেই লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হবে।’
এদিকে দুপুরে আবহাওয়া অধিদফতরের ৪৫ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফরিদপুর-ঢাকা অঞ্চল এবং এর পাশ্ববর্তী এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ফণী আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, ঘূর্ণিঝড় ফণী দুপুরে পাবনা, টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ অঞ্চল এবং এর পাশ্ববর্তী এলাকায় করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। গভীর নিম্নচাপটির প্রভাবে বাংলাদেশের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। অনেক স্থানে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/আরএম