রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
স্বর্ণের দাম আরও বাড়ল এবার পোশাকে নায়িকাদের নাম ফুটিয়ে হাজির ভাবনা সোনালী আঁশের সুদিন ফিরিয়ে আনতে চাই: পাটমন্ত্রী অনিয়ম এড়াতে মোবাইল অ্যাপে চাল বিক্রি ৩০ দিনের মধ্যে শহীদ আনোয়ারা উদ্যান ফেরতের দাবি মাগুরায় রেলপথ শিগগিরই চালু হবে : রেলমন্ত্রী যিনি দেশ বিক্রি করতে চেয়েছিল আপনি তো ওনারই সন্তান হেফাজত নেতা মামুনুল হক ডিবিতে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশ প্রস্তুত: আইজিপি সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে স্কুলসামগ্রী বিতরণ শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের জাল ভোট পড়লেই কেন্দ্র বন্ধ: ইসি হাবিব ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে অ্যাস্ট্রা এয়ারওয়েজের চুক্তি স্বাক্ষর ইসলামী ব্যাংকের মাসব্যাপী ক্যাম্পেইন শুরু ডেপুটি গভর্নর বাংলাদেশ ব্যাংকে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশে বাধা নেই বেনাপোল-পেট্রাপোল দিয়ে ভারত ভ্রমণে তিনদিনের নিষেধাজ্ঞা ঢাবিতে বিষমুক্ত ফল নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন গোপালগঞ্জের সেপটিক ট্যাংকে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ২ শ্রমিক নিহত দিল্লির তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে ভোট বর্জনই বিএনপির আন্দোলন: এ্যানি আফগানিস্তানে বন্যায় ৫০ জনের মৃত্যু

ঢাকায় সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর মরদেহ, বাদ জোহর জানাজা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৯
  • ৬০ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: প্রখ্যাত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর মরদেহ শনিবার গভীর রাতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছে।

রাত পৌনে ১টার দিকে থাই এয়ারওয়েজের একটি বিমানে করে তার মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমাবন্দরে এসে পৌঁছায়।

এসময় মরদেহ গ্রহণ করতে মাহফুজ উল্লাহর বড় মেয়ে মুসাররাত হুমায়রা অঙ্গনা, ছেলে মুজতবা হাবীবসহ অন্যান্য আত্মীয়স্বজন বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।

বিমানবন্দর থেকে মাহফুজ উল্লাহর মরদেহ মোহাম্মদপুরের আল মারকাজুলে গোসল শেষে তার গ্রিন রোডের বাসায় নেয়া হয়। সেখানে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হয় তার লাশ।

মরহুমের পরিবার জানিয়েছে, প্রথম জানাজা রোববার বাদ জোহর গ্রিন রোড ডরমিটরি জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। পরে জাতীয় প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় জানাজা হবে। সেখানে তার দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা শ্রদ্ধা জানাবেন।

মাহফুজ উল্লাহকে তার শেষ ইচ্ছানুযায়ী মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে পারিবারিকভাবে জানানো হয়েছে।

শনিবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ। তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।

কিডনি, ফুসফুস ও হার্টের বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছিলেন মাহফুজ উল্লাহ।

গত ২ এপ্রিল সকালে ধানমণ্ডির গ্রিন রোডের বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হলে মাহফুজ উল্লাহকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখা‌নে তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়।

প‌রে শারী‌রিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ১০ এপ্রিল মাহফুজ উল্লাহকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ব্যাংককের হাসপাতালে নেয়া হ‌য়।

মাহফুজ উল্লাহ শুধু বাংলাদেশের খ্যাতিমান সাংবাদিকই ছিলেন না, একাধারে লেখক, কলামিস্ট, টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ও পরিবেশবিদ ছিলেন তিনি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটর ছিলেন।

এছাড়াও নোয়াখালী জার্নালিস্ট ফোরামের উপদেষ্টা ছিলেন। বাংলাদেশে তিনিই প্রথম পরিবেশ সাংবাদিকতা শুরু করেন।

১৯৫০ সালের ১০ মার্চ নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন দেশের এই খ্যাতিমান সাংবাদিক।

তার পিতার নাম হাবিবুল্লাহ এবং মাতার নাম ফয়জুননিসা বেগম। ভারতীয় উপমহাদেশে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃত মুজাফফর আহমেদের দৌহিত্র তিনি।

ছাত্রাবস্থাতেই মাহফুজ উল্লাহ সাংবাদিকতা পেশায় নিবেদিত হন। বাংলাদেশের একসময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাপ্তাহিক বিচিত্রার জন্মলগ্ন থেকে কাজ করেছেন মাহফুজ উল্লাহ।

১৯৭২ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রায় যোগ দেন মাহফুজ উল্লাহ। দীর্ঘ সাংবাদিক জীবনে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে সম্মানের সঙ্গে কাজ করেছেন।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি শিক্ষকতাও করেছেন মাহফুজ উল্লাহ। চীন গণপ্রজাতন্ত্রে বিশেষজ্ঞ হিসেবে, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপদূতাবাসে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন তিনি।

মৃত্যুর পূর্বে তিনি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

মাহফুজ উল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যা ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

ছাত্রজীবনে তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ষাটের দশকে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন তিনি। ছাত্র রাজনীতির কারণে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনামলে ঢাকা কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হন মাহফুজ উল্লাহ।

পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী হিসেবে ঊনসত্তরের ১১ দফা আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন মাহফুজ উল্লাহ।

বাম রাজনীতি দিয়ে ছাত্র রাজনীতি শুরু করলেও বেশ কয়েক বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন মাহফুজ উল্লাহ। যে কারণে তার বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী হিসাবেও পরিচিতি রয়েছে।

রেডিও ও টেলিভিশন অনুষ্ঠানে সরব উপস্থিতি ছিল মাহফুজ উল্লাহর। তাকে উপস্থাপনাও করতে দেখা গেছে।

আন্তর্জাতিকভাবে একজন সক্রিয় পরিবেশবিদ হিসাবে পরিচিত মাহফুজ উল্লাহ। সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট নামক একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মাহফুজ উল্লাহ।

এছাড়াও আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর করজারভেশন অব নেচারের আন্তর্জাতিক পরিচালনা পর্ষদের প্রথম বাংলাদেশি সদস্য তিনি।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় ৫০ এর অধিক বই লিখেছেন মাহফুজ উল্লাহ। বইগুলো আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিলাভ করেছে। বইগুলোর অধিকাংশই বিশ্বের বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে সংগৃহীত আছে।

তার লিখিত বইগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জিয়া: রাজনৈতিক জীবনী, অভ্যুত্থানের ঊনসত্তর, পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়ন: গৌরবের দিনলিপি (১৯৫২-৭১), উলফা অ্যান্ড দ্য ইনসারজেন্সি ইন আসাম, যে কথা বলতে চাই উল্লেখযোগ্য।

বাংলা৭১নিউজ/এম.এ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com