বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৪:২৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
গরু পাচারে বাধা দেওয়ায় কৃষককে গুলি করে হত্যা পূবালী ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে ৩০.৮৩ শতাংশ রোহিঙ্গাদের সহায়তায় আরও ৩ কোটি ডলার দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ইসলামী ব্যাংকের হজ বুথ উদ্বোধন অধিকাংশ অভিযোগই স্বীকার করেছে মিল্টন : ডিবি প্রধান উপজেলা নির্বাচনে ৩৬ শতাংশ ভোট পড়েছে: ইসি আলমগীর ভারত তিস্তা প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল হামাস সংঘাত রাফার হাসপাতালগুলোও বন্ধ হওয়ার পথে এখন অনায়াসে ৫-৭ লাখ টন চাল রপ্তানি করতে পারবো: খাদ্যমন্ত্রী চট্টগ্রামে বিধ্বস্ত হওয়া প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানের এক পাইলট নিহত নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ তিনজনের যাবজ্জীবন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সাক্ষাৎ সরকারি খরচে এবার হজে যাচ্ছেন ৬৩ জন শুক্রবার টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী সব বিভাগে বৃষ্টির আভাস, দিনের তাপমাত্রা বাড়বে চট্টগ্রামে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত প্রথম ফ্লাইটে সৌদি গেলেন ৪১৩ জন হজযাত্রী ড. ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী আজ ড. ওয়াজেদ মিয়া অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বেঁচে থাকবেন প্রকৌশলীদের পরিশ্রমের ফলেই ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন দৃশ্যমান

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৯
  • ২৬৪ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার শঙ্কা নেই, এমন বলা যাবে না। কারণ, জঙ্গিবাদ এখন আন্তর্জাতিক বিষয় হয়ে গেছে। তবে আমরা সজাগ রয়েছি।

আজ শুক্রবার বিকাল ৪টায় সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন। ব্রুনাই দারুসসালামে তিন দিনের সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই শ্রীলংকায় হামলায় নিহতদের কথা এবং জায়ানের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিনিধিরা শপথ নিয়েছেন। তাতে সরকারের চাপ নেই; বরং তাঁরাই বলেছেন জনগণের চাপ আছে। যারা শপথ নিয়েছে, তারা স্বেচ্ছায় শপথ নিয়েছে। এখানে আমাদের কোনো চাপ নেই। অন্য কোনো দল সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না।

তিনি বলেন, আমাদের দোষ দেয়ার কি আছে? বিএনপি একটা রাজনৈতিক দল। এটা তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এখানে অন্য কোনো দল তাদের ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না, পারবেও না, এটাই স্বাভাবিক।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দেশের বহুদলীয় গণতন্ত্র আছে। কোন দল জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পারে কি-না সেটা মুল বিষয়।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, তাঁরা (প্রতিনিধি) বলেছেন, সংসদে খালেদা জিয়ার জন্য কথা বলবেন। খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক কারণে বন্দি করা হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। আদালতকে আমরা প্রভাবিত করিনি।

তিনি বলেন, এই সন্ত্রাসী হামলা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যার মাধ্যমে এদেশে শুরু হয়েছে। এরপর বিএনপি-জামায়াত ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। নির্বাচন ঠেকাতে তারা ২০১৩ সালের শেষ থেকে শুরু করে ২০১৪, ২০১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাস করে বহু মানুষ হত্যা করেছে। সর্বশেষ এই অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি।

শেখ হাসিনা বলেন, জঙ্গিবাদ নিয়ে আমরা সজাগ রয়েছি। হলি আর্টিজানে হামলার পর থেকে আমাদের অবস্থানের কারণেই জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ব্রনাই থেকে এসে গতকাল বৃহস্পতিবারও আমি সমস্ত সংস্থার প্রধানদের নিয়ে রাত পর্যন্ত বৈঠক করেছি।

তিনি বলেন, ‘কিন্তু, শুধু নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে না। এজন্যই বক্তব্যের শুরুতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক দল। এখানে নেতৃত্ব গঠন হয় গণতান্ত্রিকভাবে। সুতরাং আমি এসব নিয়ে ভাবছি না। আমি এক সময় অবসরে যাব। তখন দলে নতুন নেতৃত্ব আসবে। তবে কে আসবেন, তা দলই ঠিক করবে। আওয়ামী লীগই ঠিক করবে কে নেতৃত্ব দেবে। সেটা আমি ঠিক করব না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে তৃণমূল থেকে সম্মেলনের মাধ্যমে ঢেলে সাজাতে হবে। কিন্তু, একেকটি সম্মেলন আয়োজন করতে অনেক খরচাপাতি হয়। আয়োজনের ব্যাপার আছে। সামনে সম্মেলন হবে। সেখানেই নেতৃত্ব ঠিক হবে। কখনও কেউ আসে, কেউ চলে যায়, রাজনীতিতে এটা হয়।

প্রধানমন্ত্রী জানান, তৃণমূল থেকে শুরু করে দলের সবকিছু ডাটাবেজ করা হবে। যাতে তিনি অবসর নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় চলে গেলেও স্যুইচ টিপে সব তথ্য পেতে পারেন।

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘অপরাধী যেই হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।তিনি নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ব্রনাই সফরে থাকা অবস্থায় তিনি প্রথমে হামলার খবর পান। পরে জায়ানের মৃত্যুর খবর পান। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমি এই নৃশংস হামলার নিন্দা জানিয়ে শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রীকে শোকবার্তা পাঠাই। এই কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।তিনি বলেন, এই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে জনমত সৃষ্টি ও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন ব্রুনাইয়ের সুলতান। রোহিঙ্গা সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধানে গুরুত্বারোপ করেন তিনি। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আশিয়ান, আঞ্চলিক ও বিশ্ব নেতাদের সহযোগিতা কামনা করি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের একটা চুক্তিও হয়েছে। যে মুহূর্তে রোহিঙ্গা যাওয়ার কথা সেই মুহূর্তে তারা প্রতিবাদ শুরু করল যে, তারা যাবে না। রোহিঙ্গারা ফেরত গেলে চীন, ভারত ও জাপান তাদের জন্য ঘরবাড়ি করে দিতেও তারা রাজি। প্রত্যেক দেশেই কিন্তু তাদের কিছু কিছু রিফিউজি আছে। এদের সঙ্গে আমি আলোচনা করেছি।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক তিনটি সংস্থাকে বলেছি আপনারা রোহিঙ্গাদের জন্য কিছু করতে চাইলে মায়ানমারের মাটিতে করেন। এখানে মিয়ানমারের সরকারেরও একটা প্রচণ্ড অনীহা দেখা দিচ্ছে। এ ধরনের সমস্যা কিন্তু কিছু লোক রিফিউজিদের লালনপালন করার জন্য যতটা আগ্রহ দেখায় ফেরত পাঠানোর জন্য কিন্তু ততটা আগ্রহ দেখায় না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি স্পষ্ট ওই তিন সংস্থার প্রতিনিধিদের বলে দিয়েছি, সামনে আমাদের বর্ষাকাল যদি দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এদের ক্ষতি হয় তাহলে দায় কে নেবে? ওই সংস্থাগুলোরও তো নেয়ার দরকার? আমি এ কথাটা জাতিসংঘকেও জানিয়েছি।

সংবাদ সম্মেলনে ব্রুনাই সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্রুনাইয়ের পক্ষে সুলতান আমার প্রস্তাবের পক্ষে সম্মতি জানান এবং একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা বাড়াতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দু’দেশের মধ্যে আর্থিক খাতে উন্নয়ন ও সামরিক খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য আমরা একমত হই। দু’দেশের জনগণের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগের বিষয়ে আমরা একমত হই। বিগত এক দশক ব্রুনাইয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রুনাইয়ের সুলতান বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

প্রসঙ্গত ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়ার আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ থেকে ২৩ এপ্রিল ব্রুনাই সফর করেন। সফরে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই এবং কূটনীতিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের ভিসা ছাড়া ভ্রমণের সুযোগ দিতে কূটনৈতিক নোট বিনিময় হয়েছে।

সই হওয়া সমঝোতাগুলো হচ্ছে- কৃষি, মৎস্যসম্পদ, প্রাণিসম্পদ, শিল্প ও সংস্কৃতি, যুব ও ক্রীড়া খাতের সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং এলএনজি ও এলপিজি সরবরাহের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী সফরে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের ফোরামে বক্তব্য দেন। দেশে ফেরার দিন সকালে শেখ হাসিনা ব্রুনাইয়ের রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের নতুন চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিস্থাপন এবং রয়েল রেজালিয়া জাদুঘর পরিদর্শন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিসভার সদস্যদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারাও সেখানে উপস্থিত আছেন।

বাংলা৭১নিউজ/এবি

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com