সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ইসলামী ব্যাংকের সচেতনতা বিষয়ক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত ‘দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই’ বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ করতে চায় কানাডা কুমিল্লায় বজ্রপাতে যুবকের মৃত্যু দূতাবাসগুলোর কার্যক্রম তদারকির নির্দেশনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বাস্থ্যসেবার আওতাধীন খাতে ইউজার ফি আদায়ে নীতিমালার সুপারিশ ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে সরকার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সহজলভ্য উৎস খোঁজার তাগিদ প্রতিমন্ত্রীর বান্দরবানে বন্দুকযুদ্ধে ৩ কেএনএফ সদস্য নিহত সুইজারল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরেছেন স্পিকার জঙ্গিবাদ পুরোপুরি নির্মূল না হলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে: আইজিপি টেকসই উন্নয়নে সময়োপযোগী আর্থিক ব্যবস্থাপনা অপরিহার্য জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে ইশরাক ১৬ ভরি স্বর্ণ ছিনিয়ে পালানোর সময় জনতার হাতে ধরা পুলিশ কর্মকর্তা কঙ্গোতে সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা বাবাকে খুঁজে পেতে ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপির মেয়ে ডিবিতে কালশী ট্রাফিক বক্সে আগুন দিলো অটোরিকশাচালকরা কমলাপুর আইসিডি’র নিয়ন্ত্রণ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে নিতে সুপারিশ ভোট কম পড়ার বড় ফ্যাক্টর বিএনপি : ইসি আলমগীর অভিবাসী কর্মীদের টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে কাজ করছে সরকার

বাংলাদেশে ফেসবুকে নারীদের মত প্রকাশ কতটা নিরাপদ?

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৯
  • ১০৭ বার পড়া হয়েছে
নারীরা অনেকে বলছেন, ফেসবুকে নিজের মতামত প্রকাশ করে আক্রমণের মুখে পড়ছেন তারা।
  • অনলাইনে ৭০ শতাংশের বেশি নারী হয়রানির শিকার হন

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: বাংলাদেশের একজন মডেল ও অভিনেত্রী সাফা কবির একটি রেডিও অনুষ্ঠানে পরকালে বিশ্বাস করেন না এমন মন্তব্যের পর নিজের ফেসবুক পাতায় মারাত্মক সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

এফএম রেডিওটির ফেসবুক পাতায় সেটি লাইভ সম্প্রচার করা হয়েছিলো। সেখানে পরকালে বিশ্বাস করেন কিনা এক শ্রোতার পাঠানো এমন প্রশ্নের জবাবে খুব হালকা ভাবে তিনি বলছিলেন তিনি যা দেখেননি তা তিনি বিশ্বাস করেন না।

এরপর সেই ফেসবুক লাইভেই ভয়াবহ মন্তব্য আসতে শুরু করে।

গতকাল নিজের ফেসবুক মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে যে পোস্ট দিয়েছেন তিনি সেটিতে মন্তব্য রয়েছে ৬০ হাজারের বেশি। যার বেশিরভাগই নেতিবাচক ও নোংরা। যৌন ইঙ্গিত রয়েছে অনেক মন্তব্যে। এমনকি ধর্ষণের হুমকিও রয়েছে।

বাংলাদেশে সরকারি এক হিসেবে বলা হয়েছে, অনলাইনে ৭০ শতাংশের বেশি নারী হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন।

নারীরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কতটা স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করতে পারেন?

নিজের ভেরিফায়েড পেজে সাফা কবিরের বক্তব্যনিজের ভেরিফায়েড পেজে সাফা কবিরের বক্তব্য।

দুজন নারীর অভিজ্ঞতা

ফেসবুকে সরব এমন একজন সাংবাদিক ও লেখক শারমিন শামস।তিনি বলছিলেন নারীবাদ, নারী অধিকার নিয়ে লেখালেখি করেন বলে সোশাল মিডিয়ায় নিজের পোস্টে, এমনকি নিউজ পোর্টালগুলোতে নিজের লেখার নিচে ভয়াবহ সব মন্তব্য দেখে তিনি অভ্যস্ত হয়ে গেছেন।

একটির কথা উল্লেখ করে তিনি বলছেন, “মেয়েদের চাকরি করা উচিত এমন একটা লেখা ছাপা হওয়ার পর আমাকে লিখেছে আমাকে কোথায় ধরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হবে। এমনকি আমার মাকে কিভাবে রেপ করা হবে, বিশদ বর্ণনা সহ।”

তিনি বলছিলেন সম্প্রতি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতের হিজাব নিয়ে করা একটি নেতিবাচক মন্তব্যের প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি।

তিনি বলছেন, “একজন মন্তব্য করেছে যে নুসরাত ইরানি বোরখা পরেছে। তাতে তার পর্দা হয়নি। সে যেহেতু এক সময় এমনিতেই দোজখের আগুনে পুড়তো তাই তাকে এখনি দুনিয়াতে আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। সেটা ঠিক হয়েছে।”

শারমিন শামসশারমিন শামস।

”এমন মন্তব্যের স্ক্রিনশট আমি ফেসবুকে দিয়েছিলাম। এরপর থেকে সেই লোক একটা ফেক অ্যাকাউন্ট খুলে আমাকে ইনবক্সে মেসেজ পাঠানো শুরু করলো। ওটা সরাতে বলল। আমাকে গালি দিলো। তার রিপোর্টের জন্য আমার অ্যাকাউন্ট তিনদিনের জন্য ব্লক হয়ে গিয়েছিলো।”

‘নারীরা আস্তে আস্তে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছে’

লীনা পারভীন একজন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট। ফেসবুকে তার নিয়মিত উপস্থিতি। বলছিলেন, “অনলাইনে লেখালেখি করি। মাঝে মাঝে দেখা যায় এমন বাজে সব কমেন্ট করা হয়, যেগুলো আমার নারী সত্তাকে কেন্দ্র করেই কমেন্টগুলো আসে। আমি টিপ পরি সে নিয়ে জঘন্য মন্তব্য করা হয়েছে। ধরেন বেশ্যা জাতীয় শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। বাকিগুলো এতই নোংরা যে সেগুলো মুখে উচ্চারণ নাইবা করলাম।”

তিনি বলছেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেক জায়গায় মন্তব্য করাই বন্ধ করে দিয়েছি। আমার মতো আরও অনেক নারী যারা ফেসবুকে কথা বলার একটা জায়গা পাচ্ছিলো তারাও অনেকে আস্তে আস্তে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছে।”

লীনা পারভীনলীনলীনা পারভীন।

কেন এই অবস্থা?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক কাবেরী গায়েন বলছেন, “কোন বিষয়ে একজন পুরুষ যদি কিছু বলেন তাকে ঐ বিষয়টা বলার জন্য হেনস্থা হতে হয়। কিন্তু একজন নারী যদি বলেন তার ক্ষেত্রে একটা বাড়তি জিনিস যুক্ত হয়। তাকে নারী হিসেবেও হেনস্থা হতে হয়।”

তিনি বলছেন, “এগুলো আগেও ছিল। যেমন আগে যখন আমরা স্কুলে যেতাম আমরা অনেক কথা শুনতাম। কিন্তু ফেসবুক হওয়াতে এগুলো এখন লিখিতভাবে পাওয়া যাচ্ছে। ফেসবুকে এত ধরনের মানুষের এখন অ্যাকসেস হয়েছে যে তাদের মনের কথাটা বা তাদের ধর্ষকামী যে মন, সেটিকে তারা উন্মুক্ত করার সুযোগ পান বাধাহীন ভাবে।”

”কারণ একই লেখা যদি একটা পত্রিকায় লিখতে হতো তাহলে তো অনেক ফিল্টারিং হতো। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সেটা হচ্ছে না। তাই ওপেনলি তারা তাদের যা খুশি তাই বলতে পারেন। ”

তিনি বলছেন, এসব ঘটনাকে কোন আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না বিধায় এসব ঘটনা চলছে।

আইনের প্রয়োগ একই রকম নয় কেন?

বাংলাদেশে সরকার সম্প্রতি খুব কঠোর একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশ করেছে। অধ্যাপক কাবেরী গায়েন বলছেন, “কোনও নেতা নেত্রীকে কটূক্তি করলে তাদের বিরুদ্ধে সাথে সাথে মামলা হচ্ছে। তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”

কিন্তু তিনি বলছেন যখন কোন মেয়ের ব্যাপারে এসব কথাগুলো বলা হচ্ছে বা ”মেয়েদের নিয়ে বীভৎস ভাষায় ওয়াজ করা হচ্ছে”, তাদের কিন্তু ধরা হচ্ছে না।

আর শারমিন শামস প্রশ্ন তুলছেন, “এই যে মেয়েদের অনলাইনে এত ভয়াবহ কথা বলা হচ্ছে, এই যে সাফা কবিরের ক্ষেত্রে যা ঘটলো বা আমি নিজে অসংখ্যবার পুলিশের কাছে গেছি এসব ক্ষেত্রে একই আইনের প্রয়োগ কেন নেই?”

বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: বিবিসি বাংলা

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com