বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: বসন্তের শেষ বৃষ্টিতে যেন বর্ষার দুর্ভোগ দশা রাজধানীতে। সোমবার দুপুরের পর থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় জলজট তৈরি হয়েছে নগরীর বিভিন্ন সড়কে। চৈত্রের বৃষ্টিতে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় কোনো কোনো সড়কে যান চলাচলও বন্ধ থাকে। এতে দুর্ভোগে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। ঝড়ো হাওয়া। ধমকা বাতাস। থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় গতকালও একই পরিস্থিতি ছিল রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে। নগর সংশ্লিষ্টরা জলাবদ্ধতা নিরসনে আগে অনেক উদ্যোগের কথা বলা হলেও ভুক্তভোগীরা বলছেন, চৈত্রে এমন পরিস্থিতি হলে সামনের বর্ষায় পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় এটিই এখন চিন্তার বিষয়।
গতকালকের বৃষ্টিতে নগরীর মিরপুর-১, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, মিরপুর-১০, মিরপুর-১১, কালশী, আগারগাঁও, কাওরানবাজার এলাকার সড়কে পানি জমে। এর মধ্যে মিরপুর-১ এর দারুসসালাম সড়কে বৃষ্টির পানির সঙ্গে ড্রেনের দুর্গন্ধযুক্ত পানি মিশে যায়। এসময় সাধারণ মানুষ রাস্তাও পাড় হতে পারছিলেন না। মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় সাধারণ মানুষকে বেগম রোকেয়া সরণীতে চলাচলে অন্তহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়। চালকরা খানাখন্দে ভরা এ সড়কে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালিয়েছেন। পানি জমায় নগরীর অন্যান্য এলাকার সড়কে যানবাহনের গতি কমে যায়। এছাড়া নগরীর কালসী-পুরবী সড়কও বৃষ্টির পানি আটকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এ সড়কের একটা অংশে আগেই ড্রেনের পানি রাস্তার উপর দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিল। দুপুরে বেগম রোকেয়া সরণীর কাজীপাড়া এলাকায় যান বাহনের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের কারণে এমনিতে অর্ধেক সড়ক বন্ধ। বাকি অংশে কোথাও হাঁটু আবার কোথাও কোমর সমান পানি। পানির নিচে বড় গর্ত বা নির্মাণ সামগ্রি থাকায় যান চলাচল করছিল মন্থর গতিতে।
মেট্রোরেল প্রকল্পের কয়েকজন কর্মীকে পানিতে দাঁড়িয়ে যানবাহন চলার নির্দেশনা দিতে দেখা যায়। কাজীপাড়া এলাকায় এ সারিতে একটি যান চলেছে কোনমতে। এতে পুরো সড়কে স্থবিরতা দেখা দেয়। সড়কে পানি জমে থাকায় যাত্রীদের হেঁটে যাওয়ারও উপায় ছিল না। বিকাল পর্যন্ত সড়কের দুই পাশেই এমন চিত্র দেখা যায়। এদিকে কালশী সড়কে সোমবার দুপুর থেকে অচলাবস্থা তৈরি হয়। বৃষ্টির পানি জমে দুপুরের পর থেকেই ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার বিকালে ওই সড়কে কোমর সমান পানি জমা হওয়ায় তা আশপাশের বাসা বাড়ি ও দোকানে উঠে যায়। রাতে পানি কিছুটা কমলেও সকালে বৃষ্টিতে আবার একই অবস্থা ফিরে আসে। ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনগুলো বিকল্প সড়কে চলাচল করলেও ভুল করে যারা ওই সড়কে প্রবেশ করে তাদের জলজটে আটতে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া নগরীর প্রগতি সরণি, বাড্ডা, পল্টন, মতিঝিল, পুরান ঢাকার জুরাইন, পোস্তাগোলা, সায়েদাবাদ, শহীদনগর, আশপাশের এলাকায় সড়কে পানি জমে যায়। এ কারণে নগরবাসীকে সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।
এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীতে মওসুমের সর্বোচ্চ গতির কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে। সেই সঙ্গে ছিল শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাত। আবহাওয়া অফিস জানায়, ঘন্টায় ৮৫ কিলোমিটার বেগের ঝড় রাজধানীতে বয়ে যায়। এ মওসুমে এর আগে সর্বোচ্চ ৮৪ কিলোমিটার গতির রেকর্ড করা হয়েছিল। ঝড়ে তাৎক্ষণিক কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
বাংলা৭১নিউজ/এস.এম