বাংলা৭১নিউজ,নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর সেনবাগে তৃতীয় শ্রেণীর স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর ২০ টাকা হাতে ধরিয়ে দেয় ধর্ষক রাজন (২৫)। এ ঘটনা কাউকে না বলতে ধর্ষণের যন্ত্রণায় কাতর এবং রক্তাক্ত শিশুটিকে হুমকি দিয়ে মারধরও করে সে। মায়ের অসুস্থতার কারণে শনিবার শিশুটি স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সিএনজি চালক রাজন (২৫) জোর করে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জানা যায়, শনিবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটে স্কুল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় বসন্তপুর বাজারে সিএনজি চালক রাজন (২৫) জোর করে শিশুটিকে তুলে নিয়ে যায়। বাজার থেকে ৫শ গজ দক্ষিণে নবীর গ্যারেজে নিয়ে তার ওপর পাশবিশ নির্যাতন চালায়। এতে শিশুটির রক্তক্ষরণ ও তীব্রযন্ত্রণায় চিৎকার দিতে থাকলে ধর্ষক পালিয়ে যায়। দুপুর ২টায় ভিকটিমের সহপাঠি আরাফাত সুজন নির্যাতিতার মাকে বিষয়টি জানান। দুপুর সোয়া ২টায় রক্তক্ষরণকৃত ভিকটিম কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি পৌঁছে মাকে বিষয়টি জানালে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে ধর্ষককে আটক করেন।
এদিকে একই এলাকার সফিকুল ইসলামের বখাটে পুত্র সিএনজি চালক রাজনকে সেনবাগ থানায় আনার পথে ছাতারপাইয়া বাজারে তার দুই সহযোগী মিজান ও আলমগীর ছিনিয়ে নেয়। তাদের দু’জনের বাড়ী ছাতারপাইয়ার গাবতলী এলাকার।
খবর পেয়ে সেনবাগ থানার এসআই গৌর সাহার নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় বখাটে রাজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন।
ভিকটিমের মা জানান, তার ৯ বছরের শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতন শেষে ২০ টাকা ধরিয়ে দিয়ে কাউকে বিষয়টি না জানাতে হুমকি দিয়ে মারধর করে। সে স্থানীয় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩য় শ্রেণীতে পড়ে।
শিশুটির পিতা প্রবাসী। তার মা কাঁদতে কাঁদতে ধর্ষক রাজনের ফাঁসি দাবি করে গণমাধ্যমকে জানান, তার দু’টি ছেলে ইতিমধ্যে মারা গেছে। পরিচিত এক পরিবার থেকে ৯ মাস বয়সের শিশুটিকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে নেন। এরপর থেকে একমাত্র কন্যাটিকে মায়ের আদর স্নেহ মায়া মমতা দিয়ে ৯ বছর ধরে লালন পালন করছেন। পড়ালেখা করাচ্ছেন। মেধাবী শিশুটি ৩য় শ্রেণীতে প্রথম স্থান অর্জন করে। তাকে নিয়ে যে স্বপ্ন সে স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দিলো প্রতিবেশী বখাটে সিএনজি চালক।
রোববার দুপুরে সেনবাগ থানার ওসি মিজানুর রহমান ধর্ষক রাজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভিকটিমের মা বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন। ধর্ষককে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ভিকটিমের ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন আদালত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সেনবাগ থানার এসআই তানভির আহাম্মদ জানান, চিকিৎসাধীন শিশুটির ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য আবেদন করা হয়েছে। এদিকে ধর্ষকের অপর দুই সহযোগিকে গ্রেপ্তারের দাবি ওঠেছে।
উল্লেখ্য, এক বছর আগে ওই এলাকায় মাঝবয়সী স্বামীহারা এক মহিলাকে সিএনজি ও অটো চালকরা রাতভর গণধর্ষণ করে তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে ছিলো। পরে স্থানীয় শালিশদাররা ধর্ষকদের কানে ধরে ওঠবস করিয়ে সামান্য জরিমানা করে ধর্ষকদের ছেড়ে দেয়।
সালিশের ভিডিওসহ মিডিয়ায় বিধবাকে গণধর্ষণের রির্পোট প্রকাশিত হলে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। পরে ওই বিধবা জড়িত ধর্ষক ও সালিশদারদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করলে ৭ জন গেপ্তার হয়। মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এস.বি